বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আগামিকাল ধর্মঘট ডেকেছে সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ধর্মঘটের পক্ষে রয়েছে ব্যাপক সাড়া। অন্যদিকে, ধর্মঘট বানচাল করতে মরিয়া রাজ্য সরকার। ধর্মঘটের প্রাক্কালে ধর্মঘটীদের সঙ্গে কথা বললেন অনিমেষ দত্ত।
১০ মার্চ এক ঐতিহাসিক ধর্মঘটের সাক্ষী থাকতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের বকেয়া মহার্ঘভাতা বা ডিএ মেটানো, সমস্ত সরকারি দপ্তরে শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগ এবং বর্তমানে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণের দাবিতে সারা রাজ্যব্যাপী স্কুল- কলেজ সহ সমস্ত সরকারি দপ্তরে ধর্মঘট পালিত হবে। ইতিমধ্যেই ৪২ দিনে পড়েছে কলকাতার শহিদ মিনারে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের অবস্থান। তার মধ্যে ২৬ দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন কিছু আন্দোলনকারী। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক ভাস্কর ঘোষ, আপাতত তিনি হাসপাতাল থেকে ফিরে মঞ্চে অনশনেই যোগ দিয়েছেন। এই সমস্ত কিছু নিয়েই বর্তমানে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। ৫ মার্চ শহিদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সভা। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার সরকারি কর্মী, শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। সেই মঞ্চে বিরোধী দলনেতারাও এসে ভাষণ দেন। রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের প্রতিনিধিরা এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নানান সময়ে নানান কথা বলে চলেছেন।
প্রশ্ন হল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কি এই প্রথম এরকম আন্দোলন করেছেন? বকেয়া ডিএ মেটানো কি রাজ্য সরকারের পক্ষে আদৌ সম্ভব? সরকারি কর্মচারীরা যথেষ্ট মাইনে পান, আবার কেন ডিএ চাইছেন? ডিএ কি দয়ার দান? বিরোধী দলগুলি বলছে দাবি মেটাতে না পারলে গদি থেকে সরে যান—এই ধরনের একটা পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হল সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব আমরা এই লেখায়।
প্রথমত আমাদের বুঝে নিতে হবে ডিএ বা মহার্ঘ্যভাতা বিষয়টা ঠিক কী। তার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৫৭ সালে, যখন পঞ্চদশ শ্রম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ভারতে। সেই সময়ের বিখ্যাত পুষ্টিবিদ ড. ওয়েলেস একরয়েড দেখান যে, একটি সাধারণ পরিবার যেখানে চার জন সদস্য, বাবা মা এবং দুই সন্তান আছে সেখানে প্রত্যহ একজন কর্মীর ২,৭০০ ক্যালোরি খাদ্য প্রয়োজন এবং এর সঙ্গে সঙ্গেই তার পরিবারের বাকি সদস্যদের মিলিয়ে মোট ৯০০০ ক্যালোরির কাছাকাছি খাদ্য প্রয়োজন। খাদ্যের পাশাপাশি আচ্ছাদন, বাসস্থান, জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় খরচ নিয়ে ড. একরয়েড কিছু হিসেব দেন, যার ভিত্তিতে একটি গড় পরিবারের কর্মীর ন্যূনতম বেতন কত হওয়া আবশ্যক তা ঠিক করার পরিকল্পনা করা। এই সমস্ত প্রক্রিয়াকে তখন বলা হয়েছিল ‘প্রয়োজন ভিত্তিক নূন্যতম বেতন’ (বা নিড বেসড মিনিমাম ওয়েজ)। এই হিসেবটি করা হয়েছিল সমস্তরকম ইন্ডাস্ট্রির শ্রমিক এবং কর্মচারীদের জন্য। কিন্তু সেই হিসেব মেনে যে পরবর্তীতে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়েছে তা কিন্তু নয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই হিসেব মেনে বেতন দেয়নি বা দিতে চায়নি।
ষাটের দশক, সত্তরের দশকে দেশের বিভিন্ন শিল্পে এবং সরকারি দফতরগুলোতেও ছোটবড়ো আন্দোলন হয়েছে বেতন বৃদ্ধি-সহ আরও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে। আন্দোলন গড়ার জন্য তৈরি হয়েছে ট্রেড ইউনিয়ন। অবশেষে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একটি অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (এ আইসিপিআই)-এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বাজারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়বে তার ভিত্তিতে বর্তমান বেতনে যে ঘাটতি থাকবে তা গণনা করে কর্মচারীদের বেতনের সঙ্গে যুক্ত হবে, যা হল মহার্ঘভাতা বা ডিএ। এটি নির্ধারিত হবে কর্মচারীদের বেসিক বেতনের উপর এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে ডিআর (ডিয়ারনেস রিলিফ) যা বেসিক পেনশনের উপর। স্বয়ংক্রিয় ফরমুলা বের করার দাবি থাকা সত্ত্বেও গোঁজা মিল দিয়ে হলেও একরকম গণনা করে কেন্দ্র এবং অধিকাংশ রাজ্যই এই হারে ডিএ ও ডিআর দিয়ে থাকে। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি ডিএ (এবং ডিআর)-কে অধিকার বলার চেয়েও দান বলতে বেশি পছন্দ করেন। গত ১ জানুয়ারি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ৪% ডিএ (আগে ৩৪% ছিল, ৪% যোগ হয়ে এখন ৩৮%) দিয়ে বলেছেন, “কর্মচারীদের নতুন বছরের উপহার দিলাম।” কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারও কর্মীদের ডিএ দেন “উপহার” হিসেবেই। কিন্তু ডিএ কোনও উপহার বা দয়ার দান নয়, কর্মচারীদের বেতনের অংশ, এটা কি সকলে জানেন? জানলেও মানেন?
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মীরা এই প্রথম আন্দোলন করছেন এমন নয়। ১৯৯৮সালে নতুন বেতন কমিশন চালু করার দাবিতে আন্দোলন হয়, সেইসময় ৫ জন কর্মীকে সাসপেন্ড করে বাম সরকার। ১০ মার্চ সেই সাসপেনশন তোলার দাবিতে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে অবস্থান আন্দোলন করছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মী অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য, তিনি বলেন, “সেখানেই পুলিশ আমাদের ছয় জনকে লাঠিপেটা করে হাত-পা ভেঙে দেয় এবং রাইটার্স বিল্ডিংয়ের ওসির ঘড়ি চুরি করার মামলা দেওয়া হয় আমাদের নামে। আমাদের লালবাজার লকআপে আটক করা হয়েছিল।” উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি হল “সেই আন্দোলনের ফলে বাম সরকার নতুন ‘পে-ডিভিশন’ রুল চালু করে (রোপা ৯৮’) যেখানে প্রথম এবং শেষবারের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বা মহার্ঘভাতায় কোনো ফারাক ছিল না।”
২০০৭-০৮ সালেও ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন সরকারি কর্মচারীরা। কর্মচারী সংগঠনগুলি একত্রে একটি যৌথ মঞ্চ গড়ে তোলে সেই সময় যার নাম ছিল “যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ”। অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য বলেন, “২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি একটি ধর্মঘট হয়েছিল। এই আন্দোলনের ফলেই ২০০৯ সালে সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে নতুন বেতন কমিশন (রোপা ২০০৯) চালু হয়েছিল, যা পশ্চিমবঙ্গের বেতন কমিশন গঠনের ইতিহাসে নজিরবিহীন একটি ঘটনা। এর আগে কখনও দু’বছর বা তিন বছর সময় লেগে যেত। তখন এত মিডিয়া ছিল না যে খবরগুলো খুব প্রচার পাবে।”
একটা কথা বহুল প্রচারিত যে রাজ্য সরকারি কর্মীরা কাজ করেন না, বসে বসে বেতন ভোগ করেন। এই মন্তব্যের উত্তরে অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য বলেন, “বাম জমানায় কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি হয়েছিল। অসীম দাসগুপ্ত কর্মসংস্কৃতি নিয়ে হইচই করলেও সে সময় কো-অর্ডিনেশন কমিটি কর্মীদের কাছ থেকে কিছু টাকা চাঁদা নিয়ে দুপুর বারোটায় অফিসে এসে চারটেয় চলে যেতে উৎসাহ দিত। আমরা এর বিরুদ্ধে বারবার জানিয়েছিলাম যে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে আসতে হবে, কাজ করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে যেতে হবে। কিন্তু কো-অর্ডিনেশন কমিটি কর্মীদের থেকে চাঁদা নিত এবং সেই চাঁদার একটা অংশ সিপিএমের পার্টি ফান্ডে যেত। ফলে এই কর্মসংস্কৃতি ধ্বংস করার পিছনে সরকার এবং সরকার পোষিত ইউনিয়নগুলিই দায়ী।” বর্তমান তৃণমূল সরকারের সময়ে কর্মসংস্কৃতির অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃণমূল সরকারের কোনো কো-অর্ডিনেশন কমিটি নেই যার থেকে তারা পার্টি ফান্ডের টাকা তুলবে। তাদের টাকা তোলার উৎস বালি পাচার, কয়লা পাচার, নিয়োগে দুর্নীতি ইত্যাদি। বাম আমলে টাকা তোলা হলেও ডিএ পাওয়া যেত। কিন্তু এই সরকার আমাদের পুরো টাকাটাই ঝেড়ে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বলে কর্মসংস্কৃতি নষ্ট করা হচ্ছে!”
পঞ্চম বেতন কমিশনে উনচল্লিশ মাসের মধ্যে বারো মাসের ডিএ মেটায় বাম সরকার। মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই সময় সরকারি কর্মীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন তিনি বকেয়া সাতাশ মাসের ডিএ মিটিয়ে দেবেন ক্ষমতায় এলে। কিন্তু তা তিনি মেটাননি। ২০১০ সালে তৈরি হওয়া সংগঠন ‘ইউনিটি ফোরাম’ এর তরফে ২০১১ সালের পরেও বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে আন্দোলন হয়। ২০১২ সালে মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেন ধর্মঘট করা যাবে না, করলে বেতন কাটা যাবে। ইতিমধ্যেই নবান্নের ফিনান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলির উদ্দেশ্যে একটি সার্কুলার জারি করে বলা হয়েছে, “আগামীকাল সকলকে নিজ নিজ দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে। কোনও এমার্জেন্সি বাদে কেউ অনুপস্থিত থাকলে কাটা যাবে বেতন।“ ধর্মঘট করলে সরকার কি সত্যিই বেতন কাটতে পারে? আইন কী বলছে?
“ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস (ডিউটিজ, রাইটস এন্ড অব্লিগেশন্স অফ দ্য গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ) রুলস, ১৯৮০” ‘রাইটস’-এর ১ ও ২ নং ধারায় বলা হয়েছে যথাক্রমে, “প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর অধিকার থাকবে সংগঠন এবং ট্রেড ইউনিয়ন করার” এবং “প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর অধিকার থাকবে ট্রেড ইউনিয়ন করার সুবাদে তার যাবতীয় অধিকারগুলি পাওয়ার যার মধ্যে ধর্মঘট অন্যতম।” শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে (যেমন- মেডিকেল, এক্সিকিউটিভ এবং জুডিশিয়াল, শিক্ষা) ধর্মঘট করতে হলে আগে থেকে নোটিশ দিতে হবে, তারপর নেগোসিয়েশন চলতে পারে। অর্থাৎ কর্মীরা ধর্মঘট করতেই পারেন। সরকারের কোনো অধিকার নেই বেতন কাটার। তাহলে কর্মীদের শুধুমাত্র ভয় দেখাতেই কি এই ধরনের সার্কুলার বের করে সরকার?
“ধর্মঘট করার অধিকার পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের আছে। আমাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলা হল ধর্মঘট করে কাজের দিন কেন নষ্ট করছেন কর্মীরা? অথচ, বর্তমান সরকার যে হারে ছুটি দিচ্ছে, এই ছুটি তো কেউ চায়নি। তাহলে দিচ্ছে কেন? আর ধর্মঘট করলেই কাজের দিন নষ্ট হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী অতিরিক্ত ছুটি দিয়ে কাজের দিন নষ্ট করছেন না?” মমতা বন্দোপাধ্যায় রাইটার্স থেকে নবান্নে চলে আসার প্রসঙ্গ টেনে অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য আরও বলেন, “আমাদের সেই লাগাতার আন্দোলনের ফলেই মমতা বন্দোপাধ্যায় ভীত হয়ে রাইটার্স বিল্ডিং থেকে নবান্নে পালিয়ে যান, যেখানে আন্দোলনের থেকে সুরক্ষিত থাকবেন তিনি।”
“হাইকোর্টের বিচারপতি রায়ে বলেছেন মহার্ঘভাতা কর্মচারীদের ‘legal enforceable right’ এবং ‘fundamental right’। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছে। আগামী ১৫ মার্চ রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। আমরা আশা করছি জিতব”, বলেন মামলাকারী সংগঠন ‘ইউনিটি ফোরামের’ আরেক সদস্য দেবপ্রসাদ হালদার। কর্মচারীদের হয়ে মামলাটি লড়ছেন সিনিয়র আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, রয়েছেন আইনজীবী প্রবীর চট্টোপাধ্যায়।
২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে ষষ্ঠ বেতন কমিশন ঘোষণা করা হয়। রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন “নবপর্যায়”-র সদস্য অর্জুন সেনগুপ্ত বলেন, “চার বছর অর্থাৎ ২০১৬ থেকে ২০২০ অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বে একটি বেতন কমিশন চলে। কিন্তু তা সূর্যের আলোর মুখ দেখেনি। ইউনিয়ন গুলোর কাছে তা পেশ করার কথা, সরকারের পোর্টালে সেটা ডিসপ্লে করার কথা। সেখানেই আমরা খবর পেলাম যে ওখানে মহার্ঘভাতা বিষয়টিকেই উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার প্রমাণ আমরা পেলাম ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে। যে বেতন আমরা পাই, তার পে-স্লিপে ডিএ-র কলামটাই হাওয়া হয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আগে আমাদের হাউজ রেন্ট অ্যালাউন্স (HR) ছিল ১৫%, ষষ্ঠ বেতন কমিশনে সেটি কমিয়ে দিয়ে করা হল ১২% অর্থাৎ ৩% কমানো হল। কেন্দ্রীয় এবং বেশিরভাগ রাজ্য সরকারি কর্মীরা যেখানে ২৭% এর কাছাকাছি এইচআর পান। আমাদের ক্ষেত্রে ৩% কমিয়ে দেওয়া হল। আর তারপর সেই ৩% আবার দেওয়া হল যেটাকে মহার্ঘভাতা বলে চালিয়ে দেওয়া হল। এইরকমের ধূর্তামি করেছে আমাদের রাজ্য সরকার।”
মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগে ৩% মহার্ঘভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন যা বলবৎ হবে মার্চ মাস থেকে। বলা হয়েছে আগের ৩% এবং এখন ৩% মিলিয়ে মোট ৬% ডিএ রাজ্য সরকার দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবত আগের ৩% যে মহার্ঘভাতাই নয়, হাউজ রেন্ট কেটে সেটাই ডিএ বলে চালানো সেই দিকটাই বারবার ইঙ্গিত করছেন বর্তমানে ৪২ দিন ধরে আন্দোলনরত “সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ”।
‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে’র মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৫৩টি বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন জড়ো হয়েছে। এই সংখ্যাটি যত দিন যাচ্ছে ক্রমশ বাড়ছে। পুরনিগমের কর্মীরাও এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। ‘কলকাতা পৌরনিগম কর্মচারী ইউনিয়ন’-এর সদস্য শৈবাল সরকার বলেন, “২০০৪ সালে আমরা আন্দোলন করেছিলাম, বেতন কমিশনের দাবিতে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই আজকের এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়া। পৌরনিগমে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আমাদের ৪৭,৩০০ মতো পদ আছে যার মধ্যে মাত্র ১৬০০০ এর একটু বেশি পদে কর্মচারী আছে। বাকি সমস্তটাই শূন্যপদ। যার মধ্যে আবার ২২০০০ এর কাছাকাছি অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। অস্থায়ী কর্মীদের মাত্র সাড়ে সাত হাজার কিংবা সাড়ে আট হাজার টাকা দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। কম্পিউটার অ্যাসিস্ট্যান্টদের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় মাত্র বারো হাজার-তেরো হাজার টাকা।” তিনি আরও বলেন, “এমএসসি প্রক্রিয়ায় আগে কর্মী নিয়োগ হত, সেই প্রক্রিয়া প্রায় উঠেই গেছে। এখন প্রতি বছর দু’হাজার কর্মী নিয়োগ হচ্ছে পুরোটাই অস্থায়ী।” তিনি অভিযোগ করেন, “পৌরনিগম কর্মীদের যে কাজ তার বাইরেও আরও অনেক কাজ করতে হয়। এই যেমন ‘দুয়ারে সরকার’ এর কাজ, রেশন দোকানের কাজ যা খ্যদ্য দপ্তরের আওতায় সেইসমস্ত কাজও পৌরনিগমের কর্মীদের দিয়ে করানো হচ্ছে।” ১৯৯৪ সালে বাম সরকারের সময়ে ‘কলকাতা পৌরনিগম কর্মচারী ইউনিয়ন’ তৈরি হয়, রাজনৈতিক দল দ্বারা পরিচালিত ইউনিয়নগুলির বাইরে গিয়ে এই ইউনিয়ন শুধুমাত্র কর্মীদের ইউনিয়ন হিসেবে ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে’র অংশ হয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছে।
রাজ্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রের হালটাও মোটামুটি একই। ২০১৮ সাল থেকে প্রাইমারি শিক্ষকদের বেতন বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তীব্র হয়ে ওঠে। প্রাইমারি শিক্ষকদের যোগ্যতার মান বৃদ্ধি করা হলেও তাদের বেতন কাঠামোটি পুরনো অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। বেতন কাঠামো পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয় যার ফলশ্রুতিতে প্রাইমারি শিক্ষকদের একটি সারা বাংলাব্যাপী সংগঠন তৈরি হয় যার নাম ‘উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ (UUPTWA)। প্রাইমারি শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশ জলকামান চালায়, আন্দোলনের নেতৃত্ব পৃথা বিশ্বাস-সহ এগারো জনকে গ্রেফতার করা হয়, মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলা এখনও চলছে। সেই আন্দোলনের ফলে কিছুটা দাবি পূরণও হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষকদের। বেতন-পরিকাঠামোয় উন্নতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও কিছু অসঙ্গতি রয়েই গেছে। লকডাউনের পর এবং এখন প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা কীরকম? এই প্রশ্নের উত্তরে ইউইউপিটিডাব্লুএ-র সদস্য রাজীব দত্ত বলেন, “আমরা লকডাউনের পর স্কুল খোলার দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। সরকার যে পাড়ায় পাঠশালা করার কথা বলেছিল, আমরা তার বিরোধিতা করেছিলাম। কারণ আমাদের আশঙ্কা ছিল যে সরকার পিপিপি মডেলকে বাস্তবায়িত করতে স্কুলগুলো বন্ধ করতে চাইছে। প্রাথমিকে শূন্যপদ অনেক। কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে কাজ হচ্ছে। সরকারি পরিষেবাতেই যদি অধিকার খর্ব করে সরকার, সরকারি স্কুলগুলোই যদি তুলে দিতে চায় তাহলে অন্যান্য অ-সরকারি ক্ষেত্রগুলোতে কী ভয়ংকর রকম শোষণ হবে বোঝাই যায়।” তিনি আরও বলেন, “সরকার হাইকোর্টে এবং স্যাটে মোট ছয়বার ডিএ মামলায় হেরেছে। এখন তারা সময় নষ্ট করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি নিয়ে গেছে। আমরা সেখানেও জিতব, কারণ মহামান্য হাইকোর্ট বলেছে ডিএ আমাদের অধিকার।” প্রাথমিক শিক্ষকদের পড়ানো বাদে অন্য কী কী কাজ করতে হয়? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “প্রাইমারি স্কুলগুলিতে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের জন্য। কিন্তু এত কম টাকায় কীভাবে তাদের পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব? প্রাথমিক স্কুলে কোনও হিসেবরক্ষক থাকেন না। হিসেবরক্ষকদের কাজ সমস্তটাই করতে হয় প্রাথমিক শিক্ষকদের। জামা দেওয়া, জুতো দেওয়া, মিড ডে মিল দেওয়া সব কাজই শিক্ষকদের দিয়ে করানো হচ্ছে। চাইল্ড রেজিস্টার-এর ডিউটি, ভোটের ডিউটি সবই শিক্ষকদের উপর চাপানো হয়। গ্রামের স্কুলে কম্পিউটার নেই, ইন্টারনেট কানেকশন নেই, সেখানে নিজেদের ইন্টারনেট খরচ করে আমাদের রিপোর্ট দিতে হচ্ছে। এই পরিকাঠামোতে আমরা শিক্ষকরা পড়াব কী করে? পড়ানোটাই তো আমাদের প্রাথমিক কাজ, কিন্তু পড়ানো বাদ দিয়ে বাকি সব কাজ আমরা করছি।”
প্রাথমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলোতে এই অবস্থাটা কেমন? ২০১৮ সালে তৈরি হওয়া “শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ” সংগঠনের সদস্য সুলগ্না পাল বলেন, “আমাদের পড়ানোর পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প যেমন কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথী তার কাজও আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়ে করানো হয়।” সরকার যে পুরস্কার গুলি পাচ্ছে সেইসব প্রকল্পের কাজ করেন এই কর্মীরাই। সুলগ্না পাল আরও বলেন, “শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ এর আগে ভোটের ডিউটিতে জোরেসোরে উপযুক্ত নিরাপত্তার দাবি তুলেছিল। এছাড়াও নবম থেকে দ্বাদশ এসএসসি-এসএলএসটি বঞ্চিত শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের পাশে থেকেছে।” মেয়েরা কেমন ভূমিকা পালন করছেন এই আন্দোলনে? “প্রথম দিকে কম হলেও আন্দোলনের তীব্রতা যত বেড়েছে মেয়েদের এগিয়ে আসা তত বেড়েছে। সবাই তো শহিদ মিনারে আসেন না। নিজের নিজের দপ্তরে স্কুলে প্রতিবাদ করছেন। বিশেষ করে গত ২১-২২ তারিখের কর্মবিরতিতে গার্লস স্কুলের শিক্ষিকাদের ভূমিকা অভাবনীয়”, বলেন সুলগ্না পাল। এক বছর আগে “নার্সেস ইউনিটি” সংগঠন সরকারি হাসপাতালের নার্সদের বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন করেন। সেই নার্সেস ইউনিটিও সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে সামিল হয়েছে।
চুড়ান্ত অব্যবস্থা ও পরিকাঠামোগত সমস্যা বর্তমানে কান পাতলেই শোনা যাবে প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলে। এর বিরুদ্ধে সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা এতদিন ধরে আন্দোলন করেননি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে রাজীব দত্ত বলেন, “আমাদের সংগঠন তৈরি হয়েছে ২০১৮ সালে। পাঁচ বছরে আমরা যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। আসলে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষকদের বদলি করে দেওয়া, বেতন কেটে নেওয়া ইত্যাদি ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন। এখন সেই ভয় আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে। হাজারে হাজারে লাখে লাখে কর্মচারী শিক্ষকরা আন্দোলনে আসছেন, শাসকের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করার সাহস তৈরি হচ্ছে।”
ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠনগুলি এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “কর্মনাশা বন্ধ বিরোধীদের চক্রান্ত, তাকে ব্যর্থ করুন।” অর্থাৎ এখানে পরিষ্কার যে, বনধ ব্যর্থ করতে একরকম বাধা সরকার এবং শাসক দলের তরফ থেকে আসতে চলেছে। আবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতৃত্ব জানিয়েছেন, “বাধা দিলে দেবে, আমরা লড়াই করার জন্যই রাস্তায় নেমেছি। ধর্মঘট হবেই। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই হবে।”
৯০’ পরবর্তী ভারতে এবং বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে নয়া উদারীকরণ নীতির ফলে বাজারের নিয়মেই সরকারি বিভিন্ন দফতর, সরকারি স্কুল এবং একই সঙ্গে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে ধীরে ধীরে শুকিয়ে মেরে ফেলার যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল সেই চক্রান্তের অংশই হল আজকের এই বাস্তবতা। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া, কম বেতনে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো এবং সমান্তরাল ভাবে ঢালাও বেসরকারিকরণ। ‘বেসরকারি হলে পরিষেবা ভালো হবে’ এই ন্যারেটিভকে সমাজে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্ত রকমের সরকারি দলগুলির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সরকারি স্কুলগুলিতে, দফতরগুলিতে, হাসপাতালগুলিতে দিনের পর দিন এই অব্যবস্থা কেন জারি আছে? সরকার কি আদপে সেটাই চায়? অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে পারলে পিএফ, গ্র্যাচুউইটি, মহার্ঘভাতা, স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ‘ঝামেলা’ থাকে না। কম বেতন দিয়ে কাজ করানো যায়। হাজার হাজার শূন্যপদ তৈরি করে রাখতে পারলে সেখানে নিয়োগের ক্ষেত্রে কাটমানি চাইতে সুবিধা হয়। প্রতিযোগিতা আকাশছোঁয়া হয়ে ওঠে। একসময় শ্রমিকরা লড়াই করে আট ঘণ্টা কাজের দাবি ছিনিয়ে এনেছিল। যার ফল এখনও ভোগ করেন কর্মীরা। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বারো ঘণ্টা, তেরো ঘণ্টা কাজ করিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত বেতন দেওয়া থেকে রেহাই পাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিতে ‘কাজের সুরক্ষা’ নেই এটাও আবার সবাই কোনো না কোনো স্তরে বোঝেন। সরকারি চাকরি সেই সুরক্ষা দেয়। কিন্তু এখন সরকার সেই সুরক্ষাই কেড়ে নিতে চায়।
সরকারি কর্মীদের যদি এই পরিস্থিতি হয়, বর্তমানে দেশের তথা রাজ্যের বিপুল অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মচারীদের হালটা ঠিক কোন জায়গায় তা অনুধাবন করতে খুব বেগ পেতে হয় না। সেক্ষেত্রে তো ডিএ নামক বস্তুটাই নেই। সরকারি কর্মী, শিক্ষক, নার্স, আদালত কর্মীদের এই ব্যাপক আন্দোলন কি সমাজের অন্যান্য অংশের মানুষদের উদ্বুদ্ধ করতে পারবে? বেশ খানিকটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে আসা সরকারি দফতরের ‘কলম পেশা’ কর্মীরাও কিন্তু ৪২ দিন ধরে শহিদ মিনারে পড়ে আছেন। ফেসবুকে তৈরি হয়ে হয়েছে “Sangrami Joutha Mancha” নামের গ্রুপ, যেখানে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ষাট হাজার, দিনের পর দিন এই সংখ্যা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীরা ধর্নায় এসে অবস্থান করছেন। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অনেক বেশি সংখ্যায় এগিয়ে আসছেন। তাদের এই আন্দোলন কি নতুন কোনো আশার আলো দেখাবে? তথাকথিত বিরোধী দলগুলি শুধুমাত্র ভোটবাক্সেই এই আন্দোলনের ফায়দা তুলবে? ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে মেইনস্ট্রিম এবং র্যাডিকাল বিভিন্ন বাম ট্রেড ইউনিয়ন ও সংগঠন। এই আন্দোলন কি নতুন কোনো আশার আলো দেখাবে?
অন্যান্য রাজ্যে সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করেই আজ ডিএ পাচ্ছেন। ত্রিপুরাতেও কয়েকবছর আগে ব্যাপক আন্দোলন করেছিলেন কর্মীরা। যার ফল ১২% ডিএ বৃদ্ধি। বিপুল অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষদের, ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে সরকারি কর্মচারীরা। প্রশ্ন হল, তাঁরাও কি এই সমস্ত শ্রমজীবী মানুষদের অধিকারের দাবির পক্ষে আগামী দিনে রাস্তায় নামবেন? সরকার এবং কর্পোরেটরা সরকারি কর্মচারীদের শ্রমজীবী মানুষের শত্রু হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে, সেই দূরত্ব ঘুচিয়ে একে অপরের দাবির পক্ষে তাঁরা কি রাস্তায় নামতে পারবেন? প্রশ্ন এও যে, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের দাবির পক্ষে, যে পিপিপি মডেল এবং সর্বোপরি ‘নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি’র বিরোধিতা করছে ছাত্রছাত্রী সমাজ, তাদের দাবিতে সমবেত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন? যে কারণে ডিএ, সেই লাগামহীন মূল্যবৃদ্বি, গ্যাসের দাম, পেট্রোলের দাম-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার বিরুদ্ধে তাঁদের কি প্রতিবাদ আন্দোলনে এমনভাবেই দেখা যাবে? আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের দিকে এই প্রশ্ন উঠছে। আপাতত চোখ থাকবে আগামীকালের ধর্মঘটে। তার সাফল্য রাজ্য সরকারের তাবড় অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ঘনিয়ে ওঠা আন্দোলনগুলিকে অক্সিজেন জুগিয়ে সংঘবদ্ধ করতে সাহায্য করবে।