শিশু দিবস আর পাচার হয়ে যাওয়া দু’টি মেয়ে


  • November 14, 2022
  • (0 Comments)
  • 1351 Views

আমিনা আর জয়শ্রী (দু’টি নামই পরিবর্তিত) – দক্ষিণ ২৪ পরগণার গ্রাম থেকে পাচার হয়ে যাওয়া দু’জন মেয়ে। পাচারের সময়ে তারা ছিলেন নেহাতই নাবালিকা, কিশোরী। পাচার ও পরবর্তী হিংসা, বৈষম্য ঘটেছে বিভিন্ন স্তরে। পাচার চক্রের হাত থেকে মুক্ত হয়ে এক আপাত স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। কিন্তু পরিবার, প্রিয়জন, আত্মীয়-বন্ধুর চেনা পৃথিবী অনেকটাই বদলে গেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাত ধরে নতুন করে জীবনের পাঠ নিচ্ছেন।  তাঁরা লড়ছেন। তবে এই মেয়েদের ‘হিরো’ বানানোর যে সামাজিক ছক তা যেন কোথাও গিয়ে তাঁদের উপর চাপিয়ে দেয় কখনও না কাঁদার, কখনও ভেঙে না পড়ার দায়। আমিনা, জয়শ্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় সুদর্শনা চক্রবর্তী

 

 

আমিনা (নাম পরিবর্তিত)

চোদ্দ বছর বয়সে আজ থেকে সাড়ে চার বছর আগে পাচার হয়ে গেছিলেন।

 

প্র: আমিনা আপনি পরপর দু’বার পরপর পাচার হয়ে গেছিলেন। কীভাবে ঘটেছিল ঘটনাগুলি?

উ: আমার নিজের বাবা নেই, সৎ বাবা। আমার মা’কে যখন এই সৎ বাবা বিয়ের অফার দেন, মা বলেছিলেন – ‘আমার দুই ছেলেমেয়েকে গ্রহণ করলে, তবেই আমি বিয়ে করব।’ তিনি তখন মেনে নিয়েছিলেন। তারপর আমরা সব একসঙ্গে থাকছি। এরপর আমরা যখন বড় হচ্ছি, আমাদের পড়াশোনার খরচ, খাওয়ার খরচ লাগছে – একটা সংসার চালাতে তো এগুলো বহন করতেই হয় – তখন সৎ বাবার অনেক প্রব্লেব হত। মায়ের সঙ্গে অশান্তি করত। মা-ও আমাদের বকাবকি করত। একবার আমাকে নিয়ে অশান্তিতে আমার মাকে বাবা মেরেছিল, তারপর মা আমাকে খুব মারে। তখন আমি আমাদের ঘুঁটিয়ারি শরিফ স্টেশনে গিয়ে বসে বসে কাঁদছিলাম। তখন দু’জন খুব সুন্দর দেখতে মহিলা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি কাঁদছি কেন? আমি বললাম। তখন আমাকে খাবার খাওয়াতে চাইলেনব তারা। আমি বলেওছিলাম – আমার মা বলেছেন অচেনা কারওর থেকে কিছু না খেতে। আমি আপনাকে চিনি না, কেন খাব? আমি অনেক বার ‘না’ বললেও, আমাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মশলামুড়ি আর জল খাওয়ালো। তারপরে আমার কোনও সেন্স ছিল না। যখন সেন্স-এ আসি দেখি একটা বন্ধ ঘরে আমাকে আটকে রাখা হয়েছে। সেই মহিলারা ছাড়াও আরও অনেক সুন্দরী মহিলারা ছিলেন। আমি তাদের জিজ্ঞেস করি এটা কোন জায়গা, কীভাবে এলাম, কী করে কিছুই বুঝতে পারলাম না। তারা বলল – সেটা দিল্লী মিরাট। আমাকে দু’টো চড় মেরে বলেছিল, ‘আমরা যা বলব সেটাই তোকে এখন থেকে মেনে নিতে হবে।’ আমার আর কিছুই বলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। রোজ সেখানে আমাকে ১০, ১২, ১৫টা কাস্টমার সামলাতে হত। যদি আমি কাজ না করতে পারতাম মারধোর করত, চুলির মুঠি ধরে দেওয়ালে ঠুকে দিত, বিভিন্ন রকমের টর্চার করত।

 

ওখানে থাকার তিন মাস পরে একটা বাঙালি কাস্টমার আমার কাছে আসে। সেই কাস্টমারকে অনেক ধন্যবাদ কারণ ওনার জন্যই নতুন জীবন শুরু করতে পেরেছি। বাঙালি কাস্টমার থাকলে নীচে থেকে বাঙালি মেয়েদের কাছে যেতে দেয় না। উনি নীচে আমার সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলেছেন, উপরে ঘরে এসে বাংলায় কথা বলেছেন। আমি ওনাকে আমার সব প্রব্লেম বললাম। উনি জানতে চাওয়ায় বলেছিলাম বাড়ি যেতে চাই। ফোন নিয়ে আসতে দিত না কাস্টমারদের। তার এক সপ্তাহ পরে উনি পরের বার জুতোর মধ্যে ফোন লুকিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আমি মাকে ফোন করে বলায়, মা সঙ্গে সঙ্গে থানায় গিয়ে পুলিশকে জানায়। সেই কাস্টমার মিরাট-এর পুলিশকে জানায় সকালে গিয়ে। মিরাটের পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করার পর, পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।

 

ফিরে আসার পর ছ’সাত মাস আমি বাড়িতে ভালোই ছিলাম। পুলিশ দিয়ে যাওয়ায় বাবা-মা সেরকম কিছু বলতেও পারেনি। আস্তে আস্তে দিনগুলো চলে যেতে শুরু করলে বাবা, মা-কে বলতে শুরু করে, ‘তোর মেয়ে যদি এখানে থাকে আমার দু’টো মেয়ের বিয়ে হবে না। তোর ছেলে আছে, তার বিয়ে হবে না।’ মানে বাবা আস্তে আস্তে মা-কে কুযুক্তি দিতে থাকে। এবার হাজব্যান্ডের কথা ওয়াইফ তো অবশ্যই শুনবে। ঐ নিয়ে মা আমাকে খুব বকাবকি করে। তারপরেও মা তো নিজের বাচ্চাকে ফেলে দিতে পারে না। কিন্তু বাবা একদিন রাত্রিবেলা আমাকে ঘর দিয়ে বের করে দেয়। আমি একা মেয়ে রাত্রিবেলা কোথায় যাব? একটা কাজ খুঁজছিলান, কারওর বাড়ি থাকা-পরার কাজ পেলে থেকে যেতে পারতাম। রাত সাড়ে বারোটা/ একটায় একা রাস্তায় আমাকে দেখে একজন মাসি এসে কথা বলতে শুরু করেন। আমি বলেছিলাম মা ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, একটা কাজ দরকার আমার। সেই মাসিটা ওনার সঙ্গে আমাকে সেই রাতে নিয়ে যায়, ভাত-টাত দেয়। তারপর সেই মাসিটা যে আবারও আমাকে যৌনপল্লিতে নিয়ে যাবে আমি কখনও ভাবতে পারিনি। আমাকে যখন বলেন এই কাজ করতে হবে, আমি রুখে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম – এই কাজ করব না, যদি মেরেও ফেলেন তবুও করব না। তারপরে সেই মাসি একটা কাস্টমারকে আমার ঘরে ঢুকিয়ে আমার নোংরা ছবি, ভিডিও তুলে আমাকে ধমকায় যে আমি পালাতে চাইলে এই ছবি, ভিডিও সব জায়গায় ছড়িয়ে দেবে। আমাকে বাড়িতে থাকতে দেবে না।

 

প্র: কী করে বেরিয়েছিলেন ওখান থেকে?

উঃ যখন দোবারা পাচার হয়ে যাই, তখন ওখানে পুলিশ ও এনজিও রেইড করে আমাকে উদ্ধার করে। আমি আমার এই কেস নিয়ে, ডকুমেন্টস-এর জন্য পকসো পি.পি. (পাবলিক প্রসিকিউটর)-এর কাছে যাই, ওনার কাছেও যে আমি আবারও যৌন হরণের শিকার হব, আমি সেটা কোনওদিনও ভাবিনি। আইন যদি এভাবে যৌন হরণ করে, তাহলে পাব্লিক কী করবে আমাদের সাথে? আইনের কাছেই তো আমরা নিরাপত্তা পাব। আইন আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না, তাহলে পাব্লিক কী করে দেবে? এটা কি সম্ভব? এটা তো সম্ভব নয়।

 

প্র: এত কিছুর পরেও আপনি লড়াই ছাড়েননি। নতুন করে বাঁচছেন। প্রতিদিন সকালে উঠে নিজেকে কী বলেন?

উঃ আমি নিজেকে বলি – আমাকে বাঁচতে হবে, কারণ আমার বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাকে জন্ম দিয়েছেন, এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন। এখন আমার নিজের বাবা নেই বলে আমার সাথে হয়তো খারাপ আচরণ হচ্ছে, আমার বাবা থাকলে তো অবশ্যই আমার সাথে এরকম হত না। তাহলে আমি সুইসাইড করেও বা কি করব? আমাকে কেউ ছোট-বড় কথা বললেও আমার কিছু করার নেই। আমাকে তো বাঁচতে হবে, কারণ আমারও একটা ভবিষ্যত আছে। আমি যদি সুইসাইড করি, মরে যাই – কেউ না কষ্ট পাক – মা যতই খারাপ হোক, মা তো কষ্ট অবশ্যই পাবেন। সেই কারণে মনের জোর হারাইনি। আমার ছোট ভাই সব সময়ে আমাকে বলে – যতই যে যাই বলুক, সব সময়ে নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকবি, নিজের মতো নিজে বাঁচতে শিখবি।

 

প্র: এখন আপনি কি করছেন? ভবিষ্যতে কি করতে চান?

উঃ আমি ক্লাস এইট পাশ করার পর আর পড়তে পারিনি। এনজিও-র ম্যাম-রা বলেছেন আমাকে পড়াবেন। সরকারি স্কুলে তো আর হবে না, প্রাইভেট কোথাও ভর্তি হতে হবে। ভবিষ্যতে এমন কিছু করতে চাই যাতে এই অন্যায়গুলো বন্ধ হয়। আমরা এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে কাউন্সেলিং করি, সতর্ক করি, সবাই মিলে বাল্যবিবাহ আটকাই, এগুলোই বড় হয়ে আরও বেশি করে করতে চাই।

 

প্র: কি ভালো লাগে করতে?

উঃ লোকের পাশে দাঁড়াতে, কেউ অসহায় থাকলে তাকে সাহায্য করতে ভালো লাগে।

 

প্র: গান, নাচ, সিনেমা ভালো লাগে?

উঃ না, ওগুলো ভালো লাগে না। আমার মনে হয় কেউ খেতে পাচ্ছে না, তাকে কিছু কিনে দিলাম সে খেল, সুস্থ থাকল – এগুলোই ভালো লাগে।

 

জয়শ্রী (নাম পরিবর্তিত)

২০১৯-এ ১৩ বছর বয়সে পাচার হয়ে গেছিলেন।

 

প্র: জয়শ্রী কিভাবে ঘটেছিল ঘটনাটি?

উঃ আমি ছোট থেকেই নিজেদের গ্রামে নাচের প্রোগ্রাম করতাম। গ্রামেরই চেনা একজন বলেন যদি গ্রামের বাইরে গিয়ে নাচের প্রোগ্রাম করিস তাহলে আরও বেশি বেশি টাকা দেব। বলে আমাকে বিহার নিয়ে যায়। আমি বুঝতে পারিনি, সেখানে গিয়ে যে আমি এরকম ফেঁসে যাব, এত যে টর্চার হব ভাবতেও পারিনি। আমার দিদিও আমার সাথেই পাচার হয়ে গেছিল। পরে সেই দিদির বুদ্ধিতেই আমরা উদ্ধার হই। আমি তখন তো খুব ছোট ছিল, আমি কিছু বুঝতাম না। দিদি একটু বড় ছিল। ও পুলিশের সঙ্গে কোনও রকমে যোগাযোগ করে সব করেছিল।

 

প্র: তখন কি স্কুলে পড়তেন?

উঃ হ্যাঁ, তখন এইট-এ পড়তাম।

 

প্র: উদ্ধার হয়ে গ্রামে ফিরে আসার পর আবার স্কুলে ভর্তি হতে পারলেন?

উঃ স্কুলে ভর্তি হতে গেছিলাম। স্যার নানারকম কথা বললেন। হোম থেকে বাড়ি ফিরে একটা এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। সেখানকার এক ম্যাম-কে স্কুলে ফের ভর্তি হওয়ার কথা বললে উনি আমার পুরনো স্কুলে সঙ্গে করে নিয়ে গেছিলেন। স্যার বিভিন্ন কথা বলেছিলেন – যেমন স্টিগমা-র কথা।

 

প্র: ঠিক কী বলেছিলেন সেই স্যার?

উঃ আমার দিদিও সাথে ছিল। স্যার বলেছিলেন – ‘তুই যদি আমাদের স্কুলে ভর্তি হোস, আরও চার-পাঁচটা মেয়ে তোর মতোই হয়ে যাবে। তোমাদের আমাদের স্কুলে ভর্তি নিতে পারব না।’ ম্যাম প্রতিবাদ করায়, উনি কোনও রকমে রাজি হয়ে ভর্তি নিয়েছিলেন।

 

প্র: আবার ভর্তি হওয়ার পর, টিচার-রা, বন্ধুরা কী আগের মতোই ব্যবহার করতেন?

উঃ না। আমি যখন পড়তে যেতাম আমার বান্ধবীরা আমার সঙ্গে গল্প করত না, কোনও কথাই বলত না। আমার পাশ থেকে সরে বসত। আমি যখন জিজ্ঞেস করতাম, ‘কি হয়েছে রে, আমার সঙ্গে কেন কথা বলিস না?’ তখন বলত – আমাদের মায়েরা তোর সঙ্গে মিশতে বারণ করেছে, তাই কথা বলি না। তখন আমিও বলতাম – ‘ঠিক আছে রে, কথা বলতে হবে না’।

 

প্র: টিচারদের ব্যবহার কেমন ছিল স্কুলে বা কোচিং ক্লাসে?

উঃ স্কুলে এনজিও-রা ম্যাম-রা বোঝানোর পর আমাদের সঙ্গে আর খারাপ ব্যবহার করেনি।

 

প্র: প্রতিবেশীরা, গ্রামের মানুষদের ব্যবহারে কোনও বদল হয়েছিল?

উঃ একটা ঘটনা বলি। ফেরার পর আমি একদিন কলে জল আনতে যাই। পাড়ার কাকিমারা বলেন – ‘তোরা জল আনতে আসবি না’। আমি কেন জানতে চাওয়ায় বলেন, ‘তোরা হোম থেকে এসছিস।’ আমি আবারও বলি, ‘তাতে কী হয়েছে?’ তখন বলেন – ‘হোমে কী কী খারাপ জিনিস হয়, তা কী আর আমরা জানি না! তোর কাছ থেকে কী আবার নতুন করে শুনব? বারণ করছি, জল নিতে আসবি না।’ বাড়ি এসে মা-বাবাকে বলার পর বলেন, দু’দিন পর ওদের মুখ ঠিকই বন্ধ হয়ে যাবে, যখন জানবে চারিদিকে আরও কত মেয়ের সঙ্গে এরকম ঘটনা ঘটছে। আমাদের জল নিতে দিত না, আমরা বাইরে থেকে জল কিনে খেতাম।

 

প্র: দু’বছর হয়েছে এই ঘটনার। তারমধ্যে কোভিড এল। সে সময়ে সবাইকে এক এলাকায় বন্ধ হয়ে থাকতে হত। সেই সময়ে গ্রামে আলাদা করে কোনও স্টিগমা-র মধ্যে দিয়ে গেছো?

উঃ লকডাউনের সময়ে বাইরে বার হতে পারতাম না। একদিন দোকানে গিয়েছিলাম। কাকু বললেন – ‘তোকে দিতে পারব না, তুই বাড়ি যা।’ যখন জানতে চাইলাম কি হয়েছে, বললেন, ‘তোকে দিতে পারব না, তোর বাড়ির লোককে পাঠা।’ আমাকে জিনিস না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিল।

 

প্র: গ্রামে ফেরার পর কোনও খারাপ মন্তব্য শুনতে হয়েছিল?

উঃ অবশ্যই। আমাকে, আমাদের প্রচুর স্টিগমা ফেস করতে হয়। আমরা পুজো দিতে গেলে কাকিমারা বলেন – ‘তোরা থানে উঠবি না, তোরা উঠলে অপবিত্র হয়ে যাবে।’ আমরা কিছু বলি না। কী বলব? ওদের মুখ বন্ধ করতে পারব না। যদি আমরা অনেক ক’টা মেয়ে একসঙ্গে বলতে পারি তো ওদের মুখ বন্ধ করতে পারব।

 

প্র: পাড়ার কাকিমারা ছাড়া, কাকু/দাদা তাদের আচরণ কী রকম?

উঃ তাদের আচরণ? আমরা এনজিও-র কোনও মিটিং-এ গেলে আমাদের বলে, “হ্যাঁ রে তোদের কত করে রেট দিত রে?” আমরা যদি চেঁচিয়ে বলতাম – ‘কী রেট? কী বলছ?’ তখন বলত, ‘না, না তোদের সঙ্গে ইয়ার্কি করছিলাম’। আমরা হোম থেকে বাড়ি আসার পর আমাদের কোনও আত্মীয় আমাদের ইনভাইট করে না। কারণ আমরা যদি যাই, অন্য আত্মীয়রা আসবে না, তাইজন্য।

 

প্র: সবাই জানে দোষী বা অপরাধী কারা, অথচ সমাজের আচরণ বদলায় না। আপনারা নিজেরা লড়াইটা লড়ছেন। কী মনে হয়, কীভাবে বদলাবে সমাজের মানসিকতা?

উঃ দেখুন, আমি তো একা বা আমরা দুই বোন তো একা পাচার হইনি। আমরা একশোটা পাচার হয়ে যাওয়া মেয়ে যদি একসাথে আওয়াজ তুলতে পারি, তো একদিন না একদিন এটা বন্ধ হতে পারে। আমি এই সাহসটা রেখেছি আর রাখবও।

 

প্র: ভবিষ্যতে কী হতে চান?

উঃ ভবিষ্যতে সোশ্যাল ওয়ার্কার হতে চাই। কারণ আমার ঐ কাজটা ভালো লাগে। এনজিও-র সঙ্গে গ্রামের ভেতরে, স্কুলে গিয়ে আমরা নানা কিছু যেমন বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়া ইত্যাদি নিয়ে বোঝাই, নিজেদের কথা শেয়ার করি। এই কাজগুলোই করে যেতে চাই।

 

প্র: আর কী ভালো লাগে?

উঃ আমার নাচটা ছোট থেকেই ভালো লাগত, নাচই করতাম। কিন্তু নাচের জন্য আজকে আমার জীবনটা এরকম, তাই নাচটা ছেড়ে দিয়েছি। আর কিছু ভালো লাগে না। পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে চাই।

 

Image source – https://bit.ly/3dcWTQr

 

Share this
Leave a Comment