একটি শ্রমিক আত্মহত্যা ও দেশে চলতে থাকা লকডাউন


  • March 26, 2020
  • (0 Comments)
  • 2440 Views

কোভিড-১৯ সিরিজ

 

লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর মাত্র কয়েক ঘন্টা। গত ১২/১৩ মাস বকেয়া মাইনের একটি টাকাও পাননি। এই অনিশ্চিত সময়ে পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখবেন কীভাবে? আতঙ্কের সঙ্গে যুঝতে পারলেন না  বিএসএনএল-এর চুক্তি শ্রমিক বছর চুয়াল্লিশের সুজয় ঘোষ। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সুদর্শনা চক্রবর্তীর  রিপোর্ট।

 

লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর মাত্র কয়েক ঘন্টা। গত ১২/১৩ মাস বকেয়া মাইনের একটি টাকাও পাননি। এই অনিশ্চিত সময়ে পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখবেন কীভাবে? আতঙ্কের সঙ্গে যুঝতে পারলেন না বছর চুয়াল্লিশের সুজয় ঘোষ। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর এই মৃত্যুর ফলে বিএসএনএল-এর চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা যাঁরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যাকারীর ১০/১২ জনের তালিকায় যুক্ত হল আরও একটি নাম। সুজয় বিএসএনএল-এর কলকাতার সন্তোষপুর এক্সচেঞ্জে কাজ করতেন। তাঁর আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদে। সুজয়ের বাড়িতে রয়েছেন তার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া দুই সন্তান, স্ত্রী এবং বয়স্ক মা।  সুজয় শুধু একটি নাম বা সংখ্যা নন, তাঁর মৃত্যুর জন্য ক্যালকাটা টেলিফোনস্‌ কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্র দায়ী রইল। টানা এক বছরের বেশি বেতনহীন মানুষের আতঙ্ক কি লকডাউন-এর ভারতবর্ষ বুঝবে?

 

করোনা সংক্রমণের জেরে হয়তো এই পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক ছিল, কিন্তু বিএসএনএল-এর যে ৪৮২৬ জন শ্রমিক আপাতত বিনা বেতনে নিজেদের দাবী আদায়ের জন্য নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার বিষয়ে এতটুকু সচেতনতাও কারওর মধ্যেই দেখা গেল না। এই ঠিকা মজদুর বা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকেরা যাঁরা এখন দৈনন্দিন পরিবার খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা এই দেশব্যাপী লক ডাউনের সময় কীভাবে খাদ্য ও অত্যাবশকীয় পণ্য সামগ্রী কিনবেন, মজুত করবেন সে বিষয়ে কোনও পক্ষেরই হেলদোল নেই। সেই কারণেই আতঙ্কে, আশঙ্কায় সুজয়ের মতো কেউ মৃত্যুকেই রেহাই পাওয়ার উপায় হিসেবে ভেবে নিচ্ছেন। এরফলে যে অবর্ণনীয় অসহায়তার মধ্যে তাঁর পরিবার পড়ল, সেই দায় নেবে কে?

 

কথা হচ্ছিল সুজয় ঘোষের আত্মীয় অপূর্ব ঘোষের সঙ্গে যিনি নিজেও বিএসএনএল-এর ঠিকা কর্মী। কাজ করেন শ্যামনগর অঞ্চলে। গত ২০০২ সাল থেকে তিনি কাজ করছেন। বললেন, “আসলে কি জানেন তো, আমরা তো এখনও চাকরিটা করি, নিজেদের অফিসে যাই, কাজ করি। শুধু বেতনটা পাই না। গত ১১/১২ মাস ধরে এই চলে আসছে। আমরা সব সময়েই আশা করছি কিছু সমাধান বেরোবে। এই মার্চ মাসে হয়তো কিছু সুরাহা হবে ভেবেছিলাম। তাও হল না। আমরা নিজেদের পয়সায় যাতায়াত, অফিসে গিয়ে সামান্য কিছু খাওয়া সবটাই করি। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে? আমাদের তো লাগাতার আন্দোলন চলছেই, সুফল পাওয়ার অপেক্ষা করছি। আর্থিক দিক দিয়ে আমরা পুরোপুরি ভেঙে পড়ছি।” অপূর্বর বাড়িতে মা, বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। অর্থনৈতিক চাপের কারণে বেসরকারী স্কুল ছাড়িয়ে সরকারি স্কুলে বড় সন্তানটিকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করতে বাধ্য হয়েছেন, এই মুহূর্তে ছোট’টির লেখাপড়া বন্ধ।

 

শুধু অপূর্ব নন, আন্দোলনরত শ্রমিকেরা সকলেই এক আশঙ্কার মধ্যে ঢুকে পড়েছেন। এতদিন তাও যেভাবে হোক চলছিল। কেউ কেউ অফিসের সময় বাদ দিয়ে অন্য কোনও রোজগারের পথ বাছতেও বাধ্য হয়েছিলেন, যাতে সামান্য কিছু আয়ে সংসারটা চলে। এবার কী হবে? বিএসএনএল-এর বালিগঞ্জ অফিসে আজ প্রায় ১৮/১৯ বছর কাজ করছেন শেখ সাহাবুদ্দিন। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, মা ও আট বছরের সন্তান। লক ডাউন শুরু হওয়ার পর মজুত করতে পেরেছেন মাত্র দু’ কেজি চাল, ৫০০ ডাল, দু’কেজি আলু ও এক কেজি পেঁয়াজ। আপাতত এই দিয়ে চললেও পরে কিভাবে সামলাবেন কোনও কূলকিনারা করতে পারছেন। ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছেলে নতুন ক্লাসে উঠেছে, তার সেশন ফি, বইপত্রের খরচ এসব কীভাবে সামলাবেন করোনা-পরবর্তী সময়ে সে চিন্তাও রয়েছে। সাহাবুদ্দিন সকালে অফিসের আগে ও বিকেলে অফিস শেষ হলে নিজের মোটরবাইকে সওয়ারি পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন। তেলের খরচ বাদে সওয়ারি পেলে দিনে ৩০০ টাকা হাতে থাকে। এই লকডাউনের সময় সেই পথও বন্ধ। বললেন, “মনে-প্রাণে হেরে যাইনি বলে এখনও লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছি। আর হারবও না, লড়াইও ছাড়ব না। একটা অর্গানাইজেশন খরচ কমিয়ে নয়, রোজগার করেই টিঁকে থাকতে পারে। আমাদের মতো শ্রমিকদের জন্যই অফিস চলছে, না হলে ধসে যেত। আর যদি আমাদের বাদ দিতেও চায়, তাহলেও আমাদের বকেয়া মাইনের সঙ্গে অন্য দাবী-দাওয়ায় মেটাতে হবে। স্থায়ী কর্মীরা পাবেন, আমরা কেন পাব না?”

 

এই মানুষগুলির জীবনে এখন করোনা-র আতঙ্কের থেকেও বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আপদকালীন পরিস্থিতিতে নিজেদের ও পরিবারকে টিঁকিয়ে রাখা। পরিবার প্রতিপলানে বিগত এক বছরেরও বেশি সময় তারা যেন ‘অর্থনৈতিক করোনা’র সঙ্গে যুঝে চলেছেন। বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলল। বিএসএনএল-এর চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় ২০,০০০ মানুষ এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকেই মনে করছেন এরকম বিপর্যয়ের আভাস যদি সরকার দু’চার দিন আগে দিত তাহলে কিছু অর্থসাহায্যের জন্য কর্তৃপক্ষের উপর জোর সৃষ্টি করা যেত। যে কন্ট্রাক্টর-রা রয়েছেন তাঁরা এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারতেন। নিজেদেরই প্রাপ্য টাকা থেকে ন্যূনতম যাতে এ সময়ে দেওয়া যায় তারজন্য আর্জি জানাতেন তাঁরা। মাত্রই কিছুদিন আগে সর্বোচ্চ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতেও আন্দোলনকারীদের জানানো হয়েছে যে তাদের কাছে কোনওরকম বরাদ্দ অর্থ নেই। কিন্তু এহেন জরুরি অবস্থাকালীন সময়েও মানবিকতার সূত্র ধরেও কর্তৃপক্ষ কোনও রকম বকেয়ার অংশ মেটানোর কথা বলছেন না। কোনও কোনও সার্কেল সেক্রেটারি বহু চেষ্টা করেও এখন কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারছেন না।

 

কন্ট্রাক্টরস ওয়াকার্স ইউনিয়ন অফ বিএসএনএল হল একটি জয়েন্ট ফোরাম, যেখানে মোট চার, পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন এক হয়ে বিএসএনএল-এর চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের এই লড়াইটা লড়ছেন।  লকডাউনের আগে নিয়মিত আন্দোলনরত সহকর্মী সাথীদের সঙ্গে মুখোমুখি যোগাযোগ, আন্দোলনের পরবর্তী ধারা নির্ণয় ইত্যাদি যাঁদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে, তাঁরা এই গৃহবন্দী অবস্থায় দূরভাষেই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে মনোবল বজায় রাখছেন। জমায়েত বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অবস্থান বিক্ষোভও তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন। জানা গেল একটি নতুন টেন্ডার আনা হয়েছে তাতে যে মারাত্মক ঠিকা শ্রমিক-বিরোধী কথাগুলি রয়েছে তার কয়েকটি হল –

 

  • ঠিকা শ্রমিকদের আউটসোর্সিং করা হবে। (যারা ইতিমধ্যেই চুক্তিভিত্তিক তাদের নতুন করে কীভাবে আউটসোর্সিং করা হবে?)
  • এঁদের চুক্তি হবে মাসে ১৩ দিন কাজের। (আগে ছিল মাসে ২৬ দিন আট ঘন্টা কাজের)
  • ৫৫ বছর বয়সে অবসর হবে। ( শ্রমিকদের প্রশ্ন কোনও সরকারি নির্দেশনামা না থাকা সত্ত্বেও কোন্‌ নিয়মে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? কে সিলমোহর দিল?)

 

সকলেই মনে করছেন এক সময়ে এই করোনার প্রকোপ থেকে নিশ্চয়ই মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু তারপর কিভাবে চলবে? যদিও লড়াই-আন্দোলন বন্ধ করার কোনও প্রশ্নই নেই। এই অবস্থার শেষে একই রকম উদ্যমে আবারও লড়াইয়ের ময়দানে ফিরবেন তাঁরা সে বিষয়েও কোনও দ্বিমত নেই কারওরই।

 

“একটা কালা কানুন আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে মনে হয়তো অনেকেই জানি বিএসএনএল টাইটানিক জাহাজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের লড়াইটা চালিয়ে যাব। বহু শ্রমিকই সকালে কাজে আসছেন, আন্দোলনে শরিক হচ্ছেন এবং তারপর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অন্যত্র নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। রোজগার তো করতেই হবে। এবার এই লকডাউন, রোগাক্রান্ত সময়ে আমরা কীভাবে থাকব?” প্রশ্ন তুললেন আরেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী অজিত কুমার দাস। তিনি জানালেন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত সকলের কাছেই আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরা নিজেদের দাবি পেশ করবেন। যতদিন না তাদের দাবি সনদ মেনে নেওয়া হচ্ছে আন্দোলন চলবে।

 

মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষদের এই মারাত্মক বিপদ সম্পর্কে রাষ্ট্র, প্রশাসন কেউই খুব বেশি মাথা ঘামাতে যেন রাজিই নয়। মাস দেড়েক করোনা-র প্রকোপে এখন গৃহবন্দী হয়ে পরিবার চলবে কীভাবে ভেবে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তাঁরা বহুদিন যাবতই সেই আতঙ্কের সঙ্গে বাস করছেন। তবে এই জাতীয় বিপর্যয়ের সময় সরকার যেভাবে ধাপে ধাপে না গিয়ে একবারে লকডাউন ঘোষণা করল তাতে চূড়ান্ত আতান্তরে পড়েছেন এই মানুষেরা। অমানবিকভাবে চলছে খাদ্য ও অত্যাবশকীয় পণ্যসামগ্রী মজুদ করাও, ফলে আরও অসুবিধায় পড়ছেন ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সমস্যায় থাকা মানুষেরা। সমস্ত রাজনৈতিক দল দলগত মতবিরোধ ভুলে এই সমস্যার মোকাবিলায় নামলেই বিএসএনএল-এর ঠিকা শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া বেতন পাওয়া বা এই ‘ক্রাইসিস’-এর সময়ে আংশিক অর্থবরাদ্দ মেটানোর বিষয়ে কোনও ব্যপক উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। পথে না বেরোলে যাদের সংসার চলবে না তাদের কথা আদৌ ভাবা হচ্ছে না।

 

ক্যালকাটা ওয়াকার্স ইউনিয়ন অফ বিএসএনএল একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তাপস জানা যেমন একটা অদ্ভূত তথ্য সামনে আনলেন। টেলিকম দপ্তর থেকে বারেবারেই জানতে চাওয়া হয়েছে বিএসএনএল-এ সব চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের সংখ্যা ও অবস্থা। আশ্চর্যজনকভাবে ক্যালকাটা টেলিফোনস্ আজ পর্যন্ত কোনও তথ্য তাদের পাঠায়নি বরং জানিয়েছে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নেই! কাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই তথ্য গোপন করা তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এই দক্ষ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষাও বাতিল হয়ে যেত পারত, কোনও কোনও সহৃদয় কন্ট্যাক্টর-এর সহায়ত অধিকাংশেরই তা চালু আছে। তাপস জানা বললেন, “আমরা সাথী সহকর্মীদের শুধু বলি অফিসে আসা ও কাজ করাটা বাধ্যতামূলক। আমরা কাজ বন্ধ করলেই কর্তৃপক্ষের সুবিধা। তারা আমাদের যাবতীয় প্রাপ্য তখন এই অজুহাতে দেওয়া বন্ধ করবেন তা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না। সুজয়ের মতো ঘটনা যাতে না ঘটে তারজন্য আমরা সবরকম ভাবে একে অপরের পাশে থাকছি, কথাবার্তা বলার মাধ্যমে। শ্রমিকের মূল মন্ত্রই তো লড়াই।”

হ্যাঁ, এই লড়াই-ই আশার দিশা দেখায়। এই শ্রমিকেরা মনে করছেন এবার নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ কোনও সুরাহা বের করবেন। তাঁরা শেষ বেতন পেয়েছিলেন প্রায় ১৭,০০০ টাকার কাছাকাছি। যে বড় অঙ্কের টাকা প্রাপ্য তা আদায়ের জন্য যেকোনওভাবে লড়াই চলবে। পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য, জীবনে স্বস্তি ফিরবে। বহু শ্রমিকই চুক্তিভিত্তিক থেকে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। নানা অজুহাতে তা পিছিয়ে গিয়ে আজ এই পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তবু আন্দোলন থেকে তাঁরা পিছু হঠছেন না। মহামারীর আতঙ্ক, গৃহবন্দী দশা সবকিছুর শেষে এই অধিকার ও প্রাপ্য অর্থ আদায়ের লড়াই তাই আগের মতোই চলবে। আমরা যেন এই বিপর্যয় পেরিয়ে সুজয়কে ভুলে না যাই।

 

সুদর্শনা চক্রবর্তী ডকুমেন্টারি নির্মাতা এবং স্বতন্ত্র সাংবাদিক 

 

Share this
Leave a Comment