বিপর্যয় নয়, প্রকৃতির প্রতিক্রিয়া – এক দার্জিলিং প্রেমীর চোখে উত্তরবঙ্গের বন্যা


  • October 6, 2025
  • (0 Comments)
  • 994 Views

বৃহৎ পুঁজির লাভের জন্য ড্যাম তৈরি হচ্ছে, পাহাড় ফুঁড়ে রেলপথ হচ্ছে। এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই হতে হবে বহুস্তরীয়।

 

শুভদীপ মৈত্র

 

“কোই গ্যারান্টি নেহি হ্যায়, বিশ পঁচ্চিশ মিনিট কি বারিষমে সব কুছ রুক যা সকতা হ্যায়…” দার্জিলিং-এর একটা ছোট্ট কন্টিনেন্টাল ব্রেকফাস্টের দোকান – ‘সোনাম’স কিচেন’, সেখানে বসে বসে শুনছিলাম বছর দেড়েক আগের বসন্তকালে। কথা হচ্ছিল বর্ষার বদলে যাওয়া চেহারা নিয়ে, শুধু বর্ষা নয় পুরো আবহাওয়ারই। এবং সেই দোকানের বৃদ্ধ নেপালি মালিক জানিয়ে দিলেন তাঁদের পক্ষেও আর বোঝা সম্ভব হচ্ছে না, এবং ট্যুরিস্টদের এই ‘চেতাবনি’ বা সতর্কতা দিয়েওছেন হালে, যদিও তারা শোনেননি এবং আটকে পড়েছেন, হেনস্থা হয়েছেন এবং উলটে গালমন্দ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরই।

 

দার্জিলিং হিমালয়ের সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবরে প্রথমেই মনে পড়ল এই কথা। যদিও একে বিপর্যয় না বলে প্রকৃতিক প্রতিক্রিয়া বলা উচিত। কারণ এর জন্য মানুষ একশ শতাংশ দায়ী। মিতভাষ ও নেপালী মানুষটির এই কথাগুলো ফিসফাসে শুনতে পাওয়া যায় দার্জিলিং ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আনাচে-কানাচে, যদিও তা সাধারণ ট্যুরিস্টদের এবং প্রমোদভ্রমণকারীদের কানে পৌঁছয় না, এবং পৌঁছনোর কথাও নয়। এখানেই হয়েছে বিপদ। বর্ষায় দার্জিলিং সুন্দর একথা কাব্য করে লেখা যেতে পারে, এই অধম নিজে বহুবার গেছে বর্ষায়, তখনও রাস্তা আটকাতো না বা ধস নামত না তা নয়, কিন্তু একটা ভারসাম্য ছিল যেটা ধসে পড়ল দেখলাম কয়েক বছরে, চোখের সামনে। ২০২৩ পর্যন্ত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দার্জিলিঙে গেছি বর্ষায়, প্রায় প্রতি বর্ষায়, এবং বর্ষাকালে প্রথম যাওয়া তার দু-দশক আগে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে দেখেছি এসময়ে কী হাল হয় পাহাড়ের। আগে এই সময়টা ছিল, হালকা বৃষ্টি তারপর ঝলমলে আকাশ এবং কাঞ্চনজঙ্ঘর শৃঙ্গ দেখার আনন্দ, এখন হয়ে গেছে অভিশাপ। টানা বৃষ্টি কয়েক ঘন্টা ধরে, এবং দার্জিলিং শহরে জল জমতে দেখেছি, কোথাও রাস্তা ভাঙার খবর, কোথাও ধস। আমাদের মতো যারা প্রতি বছর ওই চত্বরে যাই, এবং প্রায় সব মরশুমে, তাদের খবর রাখতেই হয় প্রকৃতি, পরিবেশ ও আবহাওয়ার হাল হকিকতের। এবং সিদ্ধান্ত নিই আর এই সময় যাওয়া যাবে না। কিন্তু সাধারণ ট্যুরিস্ট আবহাওয়া দেখবেন না, ‘রিসিডিং মনসুন’ কী অবস্থায় জানা, স্থানীয় আবহাওয়ার গতিক দেখার থেকেও তারা দুর্গা পুজোর ছুটির ক্যালেন্ডার মিলিয়ে চলে যাবেন, এমনকি যদি কোনোদিন পাঁজি বলে পুজো জুলাইয়ে তাকেও শারদীয় ভ্রমণের সময় ভেবে নিয়ে দৌড়বেন। এই মানসিকতা না বদলালে সর্বনাশ রোখা যাবে না।

 

এই অনিয়ন্ত্রিত ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট এখন পাহাড়ের অভিশাপ। দার্জিলিঙের ক্লক টাওয়ার থেকে নামার রাস্তায় একটি নেপালি খাবারের দোকান রয়েছে ‘থাকালি’, ২০২৩-এর অক্টোবরে ভিজে কাক হয়ে ওখানে খাদ্য ও পানীয় নিয়ে বসেছিলাম, মাঝেমধ্যে বাইরে বেরচ্ছি। দরজার বাইরে সিঁড়িটা যা ওঠার রাস্তা দুপাশে এই দোকানগুলো, তা দিয়ে স্রোতের মতো জল নামছে। আমার মতো এক মাঝবয়সী লেপচা ভদ্রলোক একইভাবে ঢুকছেন বেরচ্ছে্ন। সিগারেট ধরাতে গিয়ে কথোপকথন শুরু হল, চোস্ত মার্কিনি ঢংয়ের ইংরেজিতে জিগালেন ট্যুরিস্ট কিনা, কেমন লাগছে ইত্যাদি খানিক তীর্যক স্বরে। আমি ১৯৯৫ সাল থেকে পাহাড়ে আসছি, এবং প্রত্যেক বছর প্রায় যাই শুনে খানিক নরম হল তাঁর স্বর। জিগেস করলাম এই দার্জিলিং যেখানে বাড়ি আর মল-এ ঢেকে গেছে তাঁর কেমন লাগে? উত্তরে সোজাসুজি বললেন, নাড়ির টানে ফিরলেও এখানে থাকার প্রশ্নই নেই আর, দীর্ঘদিন আমেরিকায় কাটিয়ে এখন দিল্লিতে ব্যবসা করেন, “এই যে দেখছ এই মল, এই হোটেল, এই উঁচু উঁচু বাড়ি, এগুলো এই শহরের কফিন তৈরি হচ্ছে।” এই কথাটা বলে ‘বেস্ট অফ লাক ফর ইওর স্টে’ বলে ছাতা খুলে নেমে গেলেন। একই কথার প্রতিধ্বনী ‘নাওয়াং-স ট্রেক’ নামে একটা ম্যাগি থেকে শুয়োরের ঝোল আর ভাতের ঝুপড়ি দোকান, ‘নাওয়াংস ট্রেক’-এর মালকিনের স্বামী সোনামের মুখে। দোকানটা উপরে দার্জিলিং-এর মল-এ ওঠার আগে ট্যাক্সি সট্যান্ডের কাছে, এবং গাড়ির চালক থেকে আশপাশের দোকানের লোক, আমাদের মতো কিছু পুরনো পরিচিতরা সেখানে খাওয়া দাওয়া করে, আড্ডা জমায়। মালকিন দিদি নেপালী হিন্দু, স্বামী লেপচা বৌদ্ধ, সেই লোকেরও এক কথা – “কোনো আন্দোলন, কোনো কিছু করেই আমাদের একফোটা উপকার হয়নি, বরং হাল খারাপ হয়েছে, পাহাড়ের ছেলেরা বাইরে কাজ করতে যেতে পারলে বাঁচে।“ একটা উদাহরণ দিই, ম্যালে চিত্তরঞ্জন দাশের বাড়ি থেকে নিচে টিবেটিয়ান সেটলমেন্ট যেতে পাকদণ্ডী রাস্তা নেমেছে, চমৎকার গাছপালা দিয়ে ভুটিয়া বস্তির মধ্যে দিয়ে নামতে একটি বুদ্ধিস্ট মনাস্ট্রি রয়েছে। দার্জিলিঙের প্রাচীনতমগুলোর একটি। শান্ত নির্জন ঝিঁঝিঁডাকা জায়গা, মনাস্ট্রির পিছন দিয়ে একটা সরু রাস্তা ধরে যাওয়া যায় টিবেটিয়ান সেটলমেন্ট-এ। দার্জিলিঙ গেলে ওই মনাস্ট্রিতে যাই। শেষবার ২০২৪-এর বসন্তে দেখলাম তার ঠিক সামনে দুটো বাড়ি গজিয়েছে। গামছা, জামাকাপড় ঝুলছে, সন্দেহ হতে প্রশ্ন করলাম। হ্যাঁ ওখানেও হোটেল। আর এবার সেই মনাস্ট্রির পিছনে চিপসের প্যাকেট, কোল্ড ড্রিংক ও মদের ফাঁকা বোতল চোখে পড়ল। ওই রাস্তা, ও ঢালে অমন বাড়ি মানে বিপদ, ওর ধাক্কায় মনাস্ট্রির ক্ষতি হওয়া মানে ইতিহাস মুছে যাওয়া। এই গল্পটা দার্জিলিং শহরের সর্বত্র দেখছি এক দশক ধরে।

 

বিপদ শুধু শহরের নয়, বিপদ পুরো হিমালয় জুড়ে। হোমস্টে-তে প্রথম থাকি বক্সার জঙ্গল ঘেঁসে রায়মাটাং-এ, ২০১১ সালে। যিনি করেছিলেন, তাঁর জঙ্গলের সঙ্গে ছিল জন্মগত সম্পর্ক। ভূমিপূত্র। প্রথম জীবনে অবৈধ কাঠ চালানের কাজ করে, পরে নিজেকে শুধরে, জঙ্গলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এবং নিজের গ্রামের উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেন। দুর্গম সেই জায়গায় যেখানে আমরা গাড়ি করে জলের স্টক নিয়ে গেছি তাঁর অনুরোধে, সেখানে দেখলাম বাঙালি স্বচ্ছল পরিবার, মাছ-মাংস, এমনকি পটলের তরকারির জন্য তাদের উপর তর্জনগর্জন করছে। প্রমাদটা তখনই মনে ডেকেছিল। হোম স্টে-র উদ্দেশ্য স্থানীয় মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে গিয়ে থাকা। তার বদলে আমাদের এখানে হয়ে উঠল যত্রতত্র গিয়ে থাকার লাইসেন্স। যেকোনো নির্জন শান্ত পরিবেশকে ধ্বংস করার প্রথম সূত্রপাত হল হোমস্টে। প্রথমে একটা কি দুটো কাঠের বাড়ি হবে, ছোট ছোট ঘর। তারপর আসবে ইলেক্ট্রিক লাইন ও ওয়াইফাই-এর অনুরোধ, তারপর সংখ্যায় হোমস্টে বাড়বে। গিজার বসবে। আশপাশে খাবারের দোকান, এবং মদের দোকান। গাড়ির সংখ্যা বাড়বে। গাছ কাটা হবে, পাহাড়ের ঢাল না বুঝেই আরো হোমস্টে। গান বাজনা চেঁচামেচিতে আশপাশের জন্তু জানোয়ার যাবে পালিয়ে, পাখিরা আসবে না।

 

এটা গল্প নয়। চোখের সামনে দেখলাম লেপচা জগতে কুড়ি বছরে। প্রায় বিশ বছর আগে প্রথম যাওয়া লেপচা জগত নামের ছোট্ট গ্রামে, ঘুম থেকে সুখিয়া যাওয়ার রাস্তায়। সেখানে একটাই সরকারি বাংলো ছিল, যার পিছন দিকে ঘন জঙ্গল। আমি ও কয়েকজন বন্ধু গেছিলাম ভরা বর্ষাতেই, এবং উত্তরবঙ্গে সেবারও বন্যা, লেপচাতেও সারা দিন সারা রাত বৃষ্টি। বৃষ্টির এতরকম সুর তার আগে, পরে শুনিনি। পাথর পড়ে রাস্তা এক-দু’ জায়গায় সেবারও আটকেছিল, কিন্তু এমন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এখন সেই লেপচা জগত রমরম করে হোমস্টে-তে। এবং তার উপরে ভিউ পয়েন্ট যাওয়ার জায়গা বলে গাছ কাটা হয়ে গেছে প্রায় তিরিশ শতাংশ। দোলনা, বেঞ্চি বসেছে। এই জায়গাটায় আমরা প্রথমবার উঠি ঘন জঙ্গল আর ঘাস পেরিয়ে, জোঁকের মধ্যে দিয়ে মোজার ভিতর নুন ছড়িয়ে। মাত্র বিশ বছর। এর মধ্যে জায়গাটা চলে গেল বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে।

 

সুকিয়া, মানেভঞ্জন হয়ে সান্দাকফুর ট্রেক রুট-এর প্রত্যেকটা ট্রেকারদের থামার জায়গা হয়ে গেল ট্যুরিস্ট স্পট। পাকা সড়ক হল পাহাড় কেটে কারণ গাড়ি করে উঠবে লোকে বমি করতে করতে (স্বাভাবিক, সান্দাকফু পশ্চিমবঙ্গের উচ্চতম শৃঙ্গ।)। সান্দাকফু, ফালুট এগুলো প্রমোদের জায়গা হয়ে গেল। এর পর ধস নেমে, বান ডেকে বাড়ি ভেঙে পড়ে ভ্রমণার্থীদের মৃত্যু হলে সে দায় কার? অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস-এ জীবনের ঝুঁকি থাকে, মাউন্টেনিয়ারিং শুধু নয় এমনকি ট্রেকও একেবারে ঝুঁকিহীন নয়, কিন্তু তাঁরা সেটা জেনেই যান, এবং তা মোকাবিলা করার প্রশিক্ষণ তাঁদের থাকার কথা। সাধারণ ট্যুরিস্ট কেন সেখানে যাবেন ও থাকবেন? একদিকে এ আটকানোর দায় যেমন সরকারের তেমনি ট্যুরিস্টদেরও। শুধুমাত্র রেভিন্যু আসছে, এবং রোজগার হচ্ছে এই দায় দিয়ে রাজ্য সরকার, জিটিএ কেউ এর দায় এড়াতে পারে না। আবার হিমালয়ে কোনো কিছু না জেনে পাড়ায় ফুচকা খেতে যাওয়ার মতো করে যাওয়াটাও ট্যুরিস্টদের দিক থেকে অত্যন্ত ছেলেমানুষী। ট্যুরিজম ব্যাপারটার নামের সামনে ‘ইকো’ বসিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যায় না। এর জন্য সিস্টেমিক বদল দরকার, দরকার সচেতনতা বাড়ানো।

 

চা-বাগান ধ্বংস করে, তার সমস্যা মেটানোর চেষ্টা না করে, ‘টি ট্যুরিজম’ শুরু হয়েছে। দার্জিলিং-এ চা বাগান থাকলে স্থানীয়দের কী লাভ বা লোকসান, সেটা রাজনীতির প্রশ্ন এখানে আলোচনার পরিসর নেই। শুধু বলি, দুবছর আগে দার্জিলিং থেকে তাকদা হয়ে যাচ্ছি ক্যালিম্পং। গাড়ির চালক একটা চা বাগান দেখিয়ে বললেন, ধর্মঘট চলছে। তারপর বললেন, “এইসব বাগান না থাকাই ভাল, এতে আমাদের কোনোদিন কোনো লাভ হয়নি।“ যাইহোক, তা সে চা বাগনে ঢাল অনুযায়ী গাছ লাগানো হত, জল নিকাশ ইত্যাদি নিয়ে ভাবতেই হত, কর্ম সংস্থানও যে হত না তা নয়। সেখানে এখন রিসর্ট হচ্ছে। লোকজন বেড়াতে যাচ্ছে। এমন একটি ফার্মস্টে বালাসন নদীর ধারেতে এবার এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। কারণ সেখানে টেন্ট করে ছিলেন, নদীর ধারে। এই হঠকারী ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ উন্নয়ন কার দরকার?

 

ক্যালিম্পং থেকে শিলিগুড়ি ফেরার রাস্তায় সেবারই গাড়ির চালক দেখাচ্ছিলেন ভয়াবহ অবস্থা। তিস্তা নদী ক্রমশ জাতীয় সড়কের নীচটা খোকলা করে দিয়েছে জায়গায় জায়গায়। অন্তত দু’জায়গায় ধ্বস নেমে রাস্তা বন্ধ ছিল তা সবে পরিস্কার করা হলেও তার চিহ্ন পড়ে রয়েছে। এদিকে যাতায়াতের গাড়ির কমতি নেই। জাতীয় সড়ক যা সিকিমকে জুড়েছে, ফলে এমনিই গাড়ির সংখ্যা বেশি তায় ট্যুরিস্টদের আনাগোনা এমন বেড়েছে। নদী বাঁধ ও হাইড্রো-ইলেক্ট্রিক প্রজেক্টের উন্নয়নের নাভিশ্বাস নিচ্ছে এখন সিকিম থেকে দার্জিলিং পেরিয়ে, ডুয়ার্স, বকসা, গোটা উত্তরবঙ্গ। ২০২৩-এর অক্টোবরের পাঁচ-ছয় তারিখ নাগাদ ওই রাস্তা পুরো ধসে যায়।

 

ঠিক দুবছর হল। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, এবার থেকে আরো বুঝে শুনে পাহাড়ে যাব। তাতে প্রিয় জয়াগায় না গেলেও ক্ষতি নেই। আগে জায়গাটা ও সেখানকার মানুষ বাঁচুক। এই পুঁজি নিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে, তাতেও আমাদের সামিল হওয়া প্রয়োজন, যে যেভাবে পারি। এ এক কঠিন ও জটিল লড়াই। কারণ ট্যুরিস্টদের অনেক দোষ থাকলেও পুরো দোষ ট্যুরিজমের নয়। বহিরাগত ট্যুরিস্ট বনাম স্থানীয়দের লড়িয়ে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। বৃহৎ পুঁজির লাভের জন্য ড্যাম তৈরি হচ্ছে, পাহাড় ফুঁড়ে রেলপথ হচ্ছে। এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই হতে হবে বহুস্তরীয়। তাতে বহিরাগতরাও থাকুক, যারা ওয়াকিফহাল। এক দিকে প্রকৃতি অন্যদিকে বহু জনজাতির বেঁচে থাকা, তাদের রুজিরুটি ও পরিচিতির লড়াই চলছে, তার ফাঁক গলে এমনকি পরিবেশ বান্ধবের নামেও ঢুকে পড়ছে পণ্যলোভ ও বানিয়া-পুঁজি। এবং তা বুঝে পা না ফেললে হড়পা বানেই তলিয়ে যেতে পারে উদ্যোগ। আর তাতে সামিল হতে না পারলে অন্তত নিজেদের এই ভ্রমণাভিলাস বন্ধ রেখে হিমালয় ও তার প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল হয়ে তবে যাওয়া আমাদের নাগরিক কর্তব্য। তাতে নিজের প্রাণও বাঁচে, বাঁচতে পারে হিমালয়ও।

 

________________

শুভদীপ গল্প লেখক ও কবি।

 

Share this
Leave a Comment