Groundxero | Feb 25, 2025
আজ বেসরকারিকরণ বিরোধী গণমঞ্চের আহ্বানে আসানসোলের ইসিএল এর সোদপুর এরিয়া অফিসে বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হল। বেসরকারিকরণ বিরোধী মঞ্চের পক্ষ থেকে সোদপুর এরিয়ার চারটি কয়লাখনির বেসরকারিকরণের চুক্তি বাতিল করে চিনাকুড়ি ৩, দুবেশ্বরী সহ চারটি কোলিয়ারিতে উৎপাদন ইসিএল দ্বারা করার দাবি জানানো হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লাশিল্পে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিপদ রেভেনিউ শেয়ারিং অ্যান্ড মাইনস ডেভলপার অ্যান্ড অপারেটর (এমডিও) মডেল। সরকারি কাঠামো বজায় রেখে বেসরকারি সংস্থার দখলদারি কায়েমের ব্যবস্থা। এমডিও মডেল আসলে ধারাবাহিক ভাবে কয়লা শিল্পকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার শেষ ধাপ মাত্র।
কয়লাক্ষেত্র বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কয়লা খননের জন্য একাধিক ছাড় দেওয়া হলেও নতুন খনির ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাড়া মিলছে না তাই নতুন সরকারি নীতিতে খনির সমস্ত কয়লা — উত্তোলন থেকে পরিবহন — বেসরকারি মালিকদের বা ঠিকা এজেন্সির মাধ্যমে করা হচ্ছে। সরকারের স্পষ্ট নীতি হল এসো কয়লা খনি গ্রহণ কর, উৎপাদন কর, যেখানে খুশি কয়লা বিক্রি করো আর মুনাফার নামমাত্র সরকারের ঘরে জমা কর। ইতিমধ্যেই পশ্চিম বাংলাতে ২২টি কয়লা খাদান ইসিএল কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এই চিহ্নিত ভূগর্ভস্থ খনি ও কয়লা ভান্ডারের সম্পূর্ণ ঠিকাকরণ হবে ও তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে (খনিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের জন্য সুজিত ভট্টাচার্য লিখিত উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ / গণশক্তি / ১ অক্টোবর, ২০২৩ দ্রষ্টব্য)।
কয়লা শিল্পের ধাত্রীভূমি হিসাবে পরিচিত রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলে এই মডেস চালু করতে উদ্যত হয়েছে কর্পোরেট বান্ধব মোদি সরকার। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বার্ণ স্ট্যান্ডার্ড, হিন্দুস্তান কেবলস, এমএএমসি সহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা বন্ধ। অ্যালয় স্টিল অস্তিত্ব বাঁচাতে লড়ছে। রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলে আজ প্রয়োজন এক উদাহরণ যোগ্য লড়াই তৈরি করার যা শুধু ইসিএলকে রক্ষা করবে না, সারা দেশে বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইকে শক্তি জোগাবে।
বেসরকারিকরণ বিরোধী গণমঞ্চের প্রতিবাদ কর্মসুচীতে কয়লা সহ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয়। আজকের প্রতিাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মঞ্চের তরফে মানিক সমাদ্দার, কীর্তন কোটাল, সুদীপ্তা পাল, গৌতম মন্ডল, ইস্কো মজদুর ইউনিয়নের সৌমেন্দু গাঙ্গুলি, গ্রাম কমিটির পক্ষে জগাই মাহাতো। মঞ্চের পক্ষে সভা পরিচালনা করেন কল্যাণ মৌলিক। সভা শেষে ইসিএল কর্তৃপক্ষকে মঞ্চের তরফে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।