সমাজের কাছে সাংবাদিক ইসমত আরার হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়া জানালেন দেবাশিস আইচ।
অপমানিত হোন, ব্যঙ্গ করুক, অপদস্থ হোন— উপেক্ষা করুন, উপেক্ষা। কান দেবেন না, খামোখা তর্কে জড়াবেন না। “কেননা আপনার নিরাপত্তা সবার আগে।”(১)
এই ‘হুঁশিয়ারি’ ও ‘অনুরোধ’-এ যে কথা বলা নেই তা হল, রামলালাকে তাঁবু থেকে পাকা ঘর দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী— অন্তত, সে কথা জাহির করেছেন— কিন্তু, যে কোনও বিতর্ক, এমনকি অতি সাধারণ প্রতিক্রিয়াতেও জ্বলতে পারে ঘর, নেমে আসতে পারে বুলডোজার। তাঁবু কেন, রিলিফের ত্রিপলও জুটবে না। জেল হেফাজত এমনকি সন্ত্রাসবাদী তকমায় ইউএপিএ জুটতেই পারে।
রামমন্দির ঘিরে সপ্তাহ জুড়ে অনলাইন-অফলাইন হট্টগোলে ভরে উঠবে। সে সবে কান না দেওয়াই ভাল। হঠকারিতা করবেন না। প্রতিক্রিয়া জানানোর কোনও বাধ্যবাধকতা আপনার নেই। এই হুঁশিয়ারিতেও যে কথা বলা নেই তা হল, মুসলমানদের বিরুদ্ধে কটুক্তি, ঘৃণাবাক্যের ফোয়ারা ছুটবে। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে দায় হবে কান পাতা। তবু, উপেক্ষা করুন। এই তো গত জুনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করলেন ‘রামনগরী’ অযোধ্যায় মদ-মাংস নিষিদ্ধ করা হবে। সম্পূর্ণ ফৈজাবাদ জেলাই তো এখন অযোধ্যা। ২০১৮ সালেই ফৈজাবাদ জেলার নাম বদল করে অযোধ্যা করে দেওয়া হয়েছে। এখন ঘোষণা করা হল রামমন্দিরের চুরাশি ক্রোশ পরিক্রমা মার্গ-এর মধ্যে কোথাও মদ-মাংস চলবে না। রামমন্দির থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের মাংসের দোকান, বন্ধ করতে হবে তাও। এই মাংস ব্যবসায়ীদের ৯০ শতাংশ মুসলমান, আর ক্রেতাদের ৯০ শতাংশ হিন্দু। শুধু তাঁরাই নন, সেনা-আধাসেনার ক্যাম্পে নিয়মিত মাংস জোগান দেন তাঁরাই। হাতে না মারতে পারলেও ভাতে মারার পরিকল্পনাতেও সিদ্ধহস্ত যোগীর ভারত। মদ-মাংস নিষিদ্ধ করার ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কতশত হিন্দু-মুসলমান ব্যবসায়ী, কর্মী ও অন্যান্যরা রুজিরোজগারহীন হবেন? সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কেউ নেই।
আশঙ্কা তো আরও রয়েছে। সকল ভক্ত, বজরঙ দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ— যারা আটের দশকের মাঝামাঝি থেকেই বাবরি মসজিদ উৎখাত করতে আন্দোলন চালাচ্ছে— তাদের সকল সদস্য তো অযোধ্যায় পৌঁছতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী তো জানিয়েই দিয়েছেন, ২২ তারিখ ‘রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা’র অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র নিমন্ত্রিতদেরই প্রবেশ অবাধ। তাহলে কী করবেন তাঁরা? ঘরে কিংবা মন্দিরে মন্দিরে ভজন কীর্তন গাইবেন? মোদীর অনুরোধ মাফিক ঘরে ঘরে ‘রামজ্যোতি’ জ্বালিয়ে দিওয়ালি পালন করবেন? তেমনটি হলে মঙ্গল। তবে, ঘর পোড়ারা জানেন, এমন যে কোনও উদযাপন তাঁদের জীবন কিরকম দুর্বিষহ করে তোলে। ফি বছর এমনটাই তো চলছে। রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী পালনের নামে। ‘শত্রুনাশ’ ও ‘বিজয়যোগ তিথিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার সেই মাহেন্দ্রক্ষণে রাজ্যে রাজ্যেও অতিউৎসাহী ভক্তরা যদি নেমে পড়ে বিজয় উৎসব পালনে, কল্পিত শত্রু বিনাশে; রামের ভজনের নামে যদি গাড়িবাহিত ডিজে উগরে দিতে থাকে কানে তালা পড়া ঘৃণার স্বরলিপি? তার পরই তো নেমে আসবে ইট-পাটকেল, রায়ট-পুলিশ, বুলডোজার। অতএব মুখ বুজে সহ্য করো।
ভুক্তভোগীরা জানেন, আডবাণীর রামরথের চাকায় কত মানুষ মরেছে, কত বাড়ি, কত গ্রাম জ্বলে খাক হয়েছে। রামমন্দির গড়ার শিলামিছিলের পথে পথেও নিঃশেষ হয়েছে বহু মুসলমান জনপদ। এবং লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারদের উপস্থিতিতে আরএস এস-বিজেপির আগাম পরিকল্পনা মাফিক যখন বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হল— তার পরও নিষ্ঠুর বর্বরতায় ছেয়ে গিয়েছিল দেশ। এই ভয়াবহ অন্যায়ের কোনও বিচার আজও হয়নি। ২০১৭ সালে, ২৫ বছর পর লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতীদের বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হল। তিন বছরের মধ্যে ৩০ অক্টোবর লখনউ-এর বিশেষ আদালত আডবাণী, জোশী, উমা ভারতী-সহ ৩২ জন অভিযুক্তকেই ক্লিন-চিট দিল। বার্তা হল, বাবরি মসজিদ কেউ ভাঙেনি।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ও পরবর্তী হিংস্র উন্মত্ততা বহু ভারতীয় মুসলমানদের মনে ফিরিয়ে দিয়েছিল দেশভাগের স্মৃতি। সেদিন থেকেই স্বাধীন ভারতের সাংবিধানিক সংসদীয় গণতন্ত্রের পথ হারানো; ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের মুখ থুবড়ে পড়া; ভারতীয়ত্বের বোধ, ভারত ভাবনার ধ্বংসের দিন; এবং হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিজমের জয়যাত্রা শুরু। ৯ নভেম্বর ২০১৯, ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি শারদ অরবিন্দ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি আবদুল নাজির-এর ডিভিশন বেঞ্চ হিন্দুত্ববাদীদের এই “বিশ্বাস”কেই স্বীকৃতি দিলেন যে ভারত একটি ‘হিন্দুরাষ্ট্র’। যেখানে বিধর্মীদের মসজিদ ভেঙে ফেলা যায়। এবং যেহেতু সেই হিন্দুত্ববাদীদের ‘বিশ্বাস” যে ওইস্থানে রাম জন্মেছিলেন, অতএব সেখানে রামমন্দির গড়ে তোলা বৈধ। বদলে ভিন্ন এক স্থানে মসজিদ গড়ে তোলা যেতে পারে। আদালত তো, অন্ধ নিরপেক্ষতার, সুবিচারের ভান করতে হয়।
একটিও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেনি সেদিন। কেননা কষ্ট পেলেও, হতাশ হলেও ততদিনে মুসলমানরা বুঝে নিতে শিখেছেন, ‘অপর’ তাঁরা ছিলেনই আর চোদ্দ থেকে উনিশ সালের মধ্যে— তাঁরা ক্রমে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের স্তরে নেমে এসেছেন। সেই নাগরিকত্বটুকুও যাতে কেড়ে নেওয়া যায় ইতিমধ্যেই তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে অসমে। যার রেওয়াজ অনতিভবিষ্যতেই শুরু হবে সারা দেশ জুড়ে।
তেমনটিই তো হল। কেন্দ্রীয় সরকার তার প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও নানা মন্ত্রী, বিজেপি নেতারা নাগরিকত্বের নামে নিশানা করে বসলেন সাধারণ ভাবে বাঙালিদের, বিশেষ ভাবে অসমের বাঙালি হিন্দু-মুসলমান জনসমষ্টিকে। উইপোকা, ঘুষপেটিয়া, বাংলাদেশি তখন তাঁদের প্রতি কথায়, প্রতি বক্তৃতায়। এনআরসি-সিএএ-এনপিআরের টার্গেট হয়ে উঠলেন সারা দেশের মুসলিমরাও। অঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে পড়ার বেদনা ও অপমান মুসলমানরা সয়ে সয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এবার যে দেশের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল সংখ্যাগুরুবাদী রাষ্ট্র। মরিয়া হয়ে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে পথে নেমে এলেন ছাত্র-যুব রাজনৈতিক কর্মী থেকে বিদ্বজ্জনরাও। দিল্লির শাহিনবাগ দেখল মুসলিম মহিলাদের নেতৃত্বে দিনরাত জোড়া এক অভূতপূর্ব শান্তিপূর্ণ অবস্থান আন্দোলন। সেই আন্দোলন থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সারা দেশ জুড়ে সিএএ বিরোধী শান্তিপূর্ণ অবস্থান আন্দোলনে নামলেন দেশের মানুষ। সর্বত্র মুসলিম মহিলারাই ছিলেন নেতৃত্বে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিএএ বিরোধী মুসলমান নারীদের অবস্থানগুলিকে আক্রমণের মধ্য দিয়ে ঘিরে শুরু হল মুসলিম বিরোধী পোগ্রম। আরএসএস-বিজেপি-পুলিশের সম্মিলিত উদ্যোগে। উত্তরপ্রদেশ জুড়েও মুসলিম মহল্লায় নেমে এল অবর্ণনীয় অত্যাচার, ধরপাকড়, বাড়িঘর, দোকানপাট ভেঙে দেওয়া থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করার মতো রাষ্ট্রীয় তাণ্ডব। ‘শিক্ষা’ দিতে। আর যাতে হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পে বিরোধিতা করার সাহস না পায় মুসলিমরা। অতএব, রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসবে হঠকারিতা নয়।
হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজে, অফিস-কাছারিতে কটুক্তি, অপমানের জবাব দিতে গেলে যে পিটিয়ে মারা হবে না কে বলতে পারে। উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মহম্মদ আখলাখকে খুন করার পর গো-রক্ষা বাহিনীর আক্রমণে মুসলিম ও দলিত হত্যা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর গো-রক্ষার বাহনীর বাড়বাড়ন্ত শুরু। যেন ঘৃণা ও হত্যার কুটির শিল্প। ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এমন ২০৬টি ঘটনায়, সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায়ের ৮৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আহত ও নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯০ শতাংশ মুসলিম। ২০২৩ সালও ব্যতিক্রম নয়। রাজস্থানের বাসিন্দা নাসির ও জুনায়েদের হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত হিন্দুত্ববাদীদের ‘সেলিব্রেটি’ পাণ্ডা গো-রক্ষক হরিয়ানার মনু মানেসরকে গ্রেফতার করেনি ওই রাজ্যের পুলিশ। নানা টানাপড়েনের পর তৎকালীন কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও বিধানসভা নির্বাচনের আগে মানেসর জামিন পেয়ে যায়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এমন একটি হত্যাকাণ্ডেরও কোনও বিচার হয়নি। হয় অভিযুক্তদের গ্রেফতারই করা হয়নি, বা পুলিশি যোগসাজশে আক্রমণকারীরা বেকসুর খালাস পেয়ে গেছে।
২০০২ সালের গুজরাত গণহত্যার পর মুসলিম ঘেটো আড়ে-দিঘেতে শুধু বেড়েছে তা নয়, জনবিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে। বৃহত্তর জনসমাজ থেকে তাঁদের আড়াআড়ি বিচ্ছিন্নতা প্রায় চূড়ান্ত। ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর গুজরাতের খড়া জেলায় এক নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, “২০০২ সালে ওদের শিক্ষা দেওয়া গেছে। এর পর ২০০২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কোনও দাঙ্গা হয়নি। বিজেপি গুজরাতে স্থায়ী শান্তি কায়েম করেছে।” দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ গণহত্যা, যেখানে ২০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, প্রায় সকলেই মুসলিম, ২০ বছর বাদেও যাঁরা তাঁর জয়গান গাইতে পারেন; নির্বাচনের প্রাক্কালে যে সরকার গুজরাত গণহত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত হত্যা ও ধর্ষণকারীদের মুক্তি দিতে পারে— সন্দেহ নেই ভারতীয় মুসলিমদের প্রতি তাদের ঘৃণার পরিমাপ করতে হলে দাঁড়িপাল্লার আর একদিকে হিটলারকেই বসাতে হয়। আর কে না জানে, জন্মাবধি আরএসএস হিটলারের একান্ত ভক্ত।
শুধু গুজরাত নয়, দেশের নানা রাজ্যেই মুসলিম ঘেটো বাড়ছে। সদলবলে মুসলিম পরিবারগুলি সরে যাচ্ছে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়। উত্তরপ্রদেশে একাধিক অঞ্চলে দাঙ্গা ছড়ানোর পর বিশেষ ভাবে ২০১৩ সালে উত্তরপশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে দাঙ্গার পর ৬০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি, জমি-জমা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। যাঁদের সিংহভাগই মুসলমান। ২০১৪-র নির্বাচন জিততে এ বড় প্রয়োজন ছিল বিজেপির। সে নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে ছিলেন অমিত শাহ। সেই ধারা অব্যাহত। অব্যাহত, দিল্লি লাগোয়া গ্রামগুলিতে, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে। এই আবহে যে কোনও অপমান উপেক্ষা করাই মঙ্গল।
সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্রে; সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচারের ভারতে; চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম ও উপাসনার স্বাধীনতার ভারতে; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠার; ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিত করে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে তোলার অঙ্গীকারবদ্ধ ভারতে— দেশের ১৩৮.৮ কোটি জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ, অর্থাৎ ১৯.৭ কোটি মুসলিমের কাছে, অন্যান্য সংখ্যালঘু, দলিত, আদিবাসীদের কাছে আজ সংবিধানের এই প্রস্তাবনা, প্রস্তাবনায় বিধৃত এই অঙ্গীকার আদৌ কি কোনও অর্থবহন করে?
কৃতজ্ঞতা:
(১) ১৫ জানুয়ারি সমাজ মাধ্যমে সাংবাদিক ইসমত আরার যে পোস্ট এই লেখাটি লিখতে বাধ্য করল।
“Heads up, Indian Muslims! This is a request and a warning. The next week might see some online & offline noise over the Ram Temple. You may be mocked, insulted, humiliated. Ignore, ignore anything controversial. You don’t owe anyone reactions. Ignore all of it. Don’t get triggered. Don’t fall into any unnecessary debates. Your safety comes first.”
From the Facebook timeline of Ismat Ara, 15.01.24.
(২) Huma Quraishi: The Indian Muslims, Ground realities of the largest minority community of India, Aakar Books, Delhi, 2022.