ডিএমকে-র উদয়নিধি স্ট্যালিন সনাতন ধর্মের সমালোচনা করায়—আসলে সনাতনী জাত ব্যবস্থাকে মশা-মাছির মতো ধ্বংস করার ডাক দেওয়ায়—যে ‘ইন্ডিয়া’ সহযোগীদের গায়ে ফোসকা পড়েছিল, সনাতন ধর্মের ‘সম্মান’ বাঁচাতে তড়িঘড়ি বিবৃতি দিতে যাঁদের বাধেনি—তাঁরা কিংবা ‘ইন্ডিয়া’ জোট কেন ইসারের মৃত্যুর পর, সংসদে ঘৃণাভাষণের পর, কিংবা তারও আগে নূহে পরিকল্পিত দাঙ্গা বাঁধানো হলে, কিংবা তারও আগে চলন্ত ট্রেনে মোদি-যোগীর (যে ঘটনার নিন্দা করেননি মোদি বা যোগী) নামে গুলি করে খুন করার ঘটনায় কিংবা তারও আগে…আগে…আগের শত শত ঘটনার প্রতিবাদে বলে উঠবে না — বেঁচে থাকার অধিকার জীবনের মহত্তম অধিকার। লিখলেন দেবাশিস আইচ।
মুসলমান বলেই পিটিয়ে মেরে ফেলা যায়। এ নতুন কিছু নয়। দশ বছর আগে তবু কিছু কাঠখড় পোড়াতে হত, একটা ধোঁয়াশা তৈরি, মিথ্যার জাল ফাঁদা, নানা গুজব ছড়ানো — অর্থাৎ, মাথা খাটিয়ে, শরীর খাটিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে একটা এমন পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলা যাতে দাঙ্গা বাঁধিয়ে তোলা যায়। দাঙ্গা বলে ফেলা গেল বটে, আসলে এক তরফা হত্যাকাণ্ড। এখন আর সেই শহর জোড়া, জেলা জোড়া, রাজ্য জোড়া গণহত্যার প্রয়োজন পড়ে না। যখন ইচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে পিটিয়ে মেরে ফেলা যায় মুসলমান কিংবা দলিত সম্প্রদায়ের মানুষকে।
যেমন ২৬ সেপ্টেম্বর মেরে ফেলা গেল ইসারকে। কত সহজেই না মারা গেল। যার যখন ইচ্ছে হয়েছে আচ্ছামত পিটিয়ে দিয়েছে, কিলচড়ঘুষিলাথি, লাঠির বাড়ি আর কী কী ভাবে তা কল্পনা করতেও অসুস্থ লাগে। একটি ভিডিও না কি মিলেছে তা দিনের আলোয় তোলা, আরেকটিও মিলেছে সেটি অন্ধকারের। ইসারকে একটা ল্যাম্পপোস্টে গেরুয়া কাপড় দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয়েছিল। যখন বাঁধা হয়েছিল তখন আলো ছিল, যখন মার খেতে খেতে ক্ষতবিক্ষত নেতিয়ে পড়া শরীর, অন্ধকার নেমে এসেছে, তখনও মারে কিছু কম পড়েনি।
শুরু আর শেষের মধ্যে কতটুকু সময়? দিন আর সন্ধের মধ্যে? আলো আর অন্ধকারের মধ্যে? তার ঘড়িধরা হিসেব যা মিলেছে তা শিউরে ওঠার মতোই। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন বলছে এই ঘটনার শুরু ভোর পাঁচটা নাগাদ। এবং যখন ইসারের এক প্রতিবেশী ঘটনাচক্রে মারে মারে মুমূর্ষু ইসারকে ল্যাম্পপোস্টে বাঁধা অবস্থায় খুঁজে পায় তখন বিকেল। কেউ বলছে তিনটে কেউ পাঁচটা। আসলে এই পুরো সময়টাই ঘৃণার বিষে ঘোর অন্ধকার যে। এমন এক হত্যাকাণ্ড নির্মিত হচ্ছে, রাজপথে। গণেশ পুজো মণ্ডপ, দোকানপাট, মেলা, ভক্তের সম্মিলিত উপস্থিতি সেখানে। কারও কি নজরে এল না? কোনও মানুষ ছিল না সেখানে? শুধুই সনাতনী ভক্তরা ছিল? মানুষ না থাকুক পুলিশ, খোঁচড় কেউ না? এমন প্রশ্ন যাঁদের মাথায় আসে, তাঁরা হয়তো শরীরে সাবালক, কিন্তু আসলে নির্বোধ, সরল শিশু। কিংবা ঘোর শয়তান। মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ — রবি ঠাকুরের কথা। সে ভিন্ন প্রসঙ্গে, ভিন্ন মানুষের কথা। এই মানুষদের, সরল বা শয়তানদের প্রতি বিশ্বাস রাখা পাপ, যারা আজও এই অন্ধকার দেখতে পায় না, দেখতে পায় না যে, একটি সম্প্রদায়কে, স্রেফ তারা মুসলমান বলে, তাদের দেশকেই শুধু কেড়ে নেওয়া হয়নি, কেড়ে নেওয়া হয়েছে বেঁচে থাকার অধিকার।
এই যে উত্তরপূর্ব দিল্লির সুন্দর নগরী। যেখানে এক ২৬ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে মারা হল, স্রেফ এই অভিযোগে যে, সে পুজোর প্রসাদ চুরি করেছে। কোনও কোনও প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে একটা কলা না-বলে খেয়েছিল ইসার। দেবতার মন্দিরের অদূরে, দেবতার প্রসাদ খাওয়ার অভিযোগে, নরবলি দেওয়া হল গেরুয়া কাপড় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। এমনই কি ছিল সনাতন প্রথা! গেরুয়া না কি ত্যাগ, তিতিক্ষা, বৈরাগ্যের রঙ! গেরুয়া না কি ত্রিবর্ণ জাতীয় পতাকার অন্যতম বর্ণ!
এই সেই উত্তরপূর্ব দিল্লি, ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এভাবেই সেখানে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছিল ফয়জান, ওয়াসিম, রফিক, কৌসর আলি, মহ: ফারহানকে। ঘিরে ধরে রাস্তায় ফেলে নৃশংসভাবে পিটিয়েছিল পুলিশ। পেটাচ্ছিল আর জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য ঘৃণা ভরে হুকুম দিয়ে চলছিল দিল্লি পুলিশ। অথচ, তাঁদের মা-বোনেরা সেই জাতীয় পতাকা হাতে, জাতীয় সংগীত গেয়ে গেয়ে উত্তরপূর্ব দিল্লির আট-আটটি স্থানে, প্রধানত গরিব, শ্রমিক মহল্লায় প্রতিষ্ঠা করেছিল ‘শাহিনবাগ’। দু’মাস যাবৎ অবস্থান বিক্ষোভে সিএএ চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে চলছিল। ২৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরপূর্ব দিল্লি জেলার পুলিশ কমিশনারকে সাক্ষী রেখেই বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র অবিশ্রান্ত হুমকি, গালিগালাজ করে গেল আন্দোলনকারীদের। তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছিল আন্দোলন তুলে দেওয়ার জন্য। এক বেলাও কাটেনি, “দেশ কো গদ্দার কো, গোলি মারো শালো কো” বলে ঝাঁপিয়ে পড়ল উন্মত্ত জনতা। বিজেপি-আরএসএসের নেতৃত্বে একের পর এক প্রতিবাদস্থল আক্রান্ত হতে শুরু করে। এই যুবকদের মায়েরা এমনই এক প্রতিবাদস্থলে গেরুয়াবাহিনীর ঘেরাটোপে আটকে পড়েছিল। মায়েদের বাঁচাতেই ছুটেছিল, বলা ভাল, পুলিশি মদতপুষ্ট সশস্ত্র হিন্দুত্ব বাহিনীর মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে পড়েছিল এই পাঁচ যুবক। প্রথমে হিন্দুত্ব বাহিনী পরে দিল্লি পুলিশের মারে আধমরা যুবকদের, হাসপাতালে নয় নিয়ে যাওয়া হয় লকআপে। সেখানেই ১৪ বছরের ফয়জানের মৃত্যু হয়। এ ছবি, ভিডিও ক্লিপিংসগুলো দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। দ্য হাফিংটন পোস্ট এই ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে লিখেছিল কীভাবে এক প্রায় অজ্ঞান যুবকের মুখে ব্যাটন গুঁজে দিয়েছিল এক কনস্টেবল। যাতে সে মুখ খোলে, জাতীয় সংগীত গেয়ে ওঠে। মরে গিয়েছিল সে।
২৩ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি, উত্তরপূর্ব দিল্লির ১৭টি এলাকায় দিল্লি পুলিশের মদতে বিপুল ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল গেরুয়া বাহিনী। মৃত্যু হয়েছিল ৫৪ জনের। যার সিংহভাগ মুসলমান। উদ্দেশ্য ছিল শাহিনবাগ আন্দোলনকে, মুসলিম প্রতিবাদী স্বর ও সত্ত্বাকে, সংখ্যাগুরুবাদ বিরোধী প্রতিস্পর্ধী আন্দোলনকে আমূল ধ্বংস করে দেওয়া। মরল মুসলমানরাই বেশি, ধ্বংস করে দেওয়া হল শত শত মানুষের জীবনজীবিকা; ঘরবাড়ি, দোকানপাট, মসজিদ ধ্বংস করে সিএএ বিরোধিতার শোধ নিল গেরুয়া বাহিনী। সঙ্ঘ ও রাষ্ট্রের সেই যৌথ চক্রান্তের বলি দেশের দুই শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও জেএনইউ-র ছাত্র-ছাত্রী, স্কলাররাও। মুসলমান বিরোধী দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেশবিরোধী চক্রান্তের অভিযোগে ইউএপিএ-তে গ্রেফতার করা হল উমর খালিদ, শার্জিল ইমাম, গুলফিশা ফতিমা খাতুন, মিরন হায়দার, সাফুরা জাগর, শিফা-উর-রহমান, আসিফ ইকবাল তানহা, নাতাশা নারওয়াল, দেবাঙ্গনা কলিতা-সহ ১৭ জনকে। অন্যান্য নানা ধারায় গ্রেফতার আরও বহু। যার সিংহভাগই মুসলমান। যে কপিল মিশ্র ডিএসপি-কে পাশে নিয়ে ঘৃণাভাষণ দিয়েছিল, যে বিজেপি, বজরঙ্গীরা আক্রমণ শানিয়েছিল পার পেয়েছে তারা। তিন বছর পরও বিনা বিচারে বন্দি উমর খালিদ, শার্জিল ইমামরা। সেই গণহত্যার ঘা এখনও টাটকা। তাই কি ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে যে ইসারের বাড়ি তাঁর বাবা-মা আঁচ পেল না এই ঘটনার? না কি ভয়ে, আতঙ্কে ফের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় দম আটকে, চুপ মেরে ছিল ফুটপাতের ফলওয়ালা ইসারের বাবা, মা, চার বোন। অতক্ষণ পড়ে থাকার পরে বাড়ি নিয়ে আসার পর মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। ছাড়পত্র মিলেছিল বোধহয় বাড়ি নিয়ে যাওয়ার। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায় বাড়ি থেকে। কেউ তাঁর বাবাকে থানায় নিয়ে গিয়েছিল। তখনই না কি জানতে পারে থানা।
এই পুলিশ রক্ষা করবে ইসারকে? যে দেশে ঠান্ডা মাথায় দাড়ি-টুপি খুঁজে পেতে গুলি করে খুন করা যায় মুসলমান ট্রেন যাত্রীকে। বন্দুক উঁচিয়ে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিতে বাধ্য করা হয় বোরখা পরা মহিলাকে। ভিডিও করে ঘোষণা করা যায়, মোদি-যোগী বিরোধীদের এ দেশে স্থান নেই। সেই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানকে অবশ্যই কেউ সন্ত্রাসবাদী বলেনি। বুলডোজার নামেনি। ফাঁসির দাবিও তোলেনি কেউ। যে দেশের সংসদে বিজেপির দক্ষিণ দিল্লির সাংসদ রমেশ বিধুরি ‘ভদওয়া’ (পিম্প), ‘কাটোয়া’ (খৎনা করা) এবং ‘মোল্লা আতঙ্কবাদী’ (মুসলিম সন্ত্রাসী) বলে বিএসপি সাংসদ দানিশ আলির প্রতি কটূক্তি করতে পারে। পাশে বসে হাসতে পারেন অন্যান্য বিজেপি সাংসদরা। আর ‘কপি বুক’ প্রতিবাদ প্রতিবাদ খেলে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট। রাগে, ঘৃণায় অচল করে দেয় না সংসদ। এক জনকেও দেখা যায় না গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায়। এই ঘৃণার ভাষা, এই ঘৃণ্য শব্দ যে শুধুই সমাজমাধ্যমে সঙ্ঘী ট্রোল ব্রিগেডই নয়, খোদ গণতন্ত্রের মন্দিরেও যখন উচ্চারণ করা যায় — তখন ইসারদের পিটিয়ে মারা তো ছেলেখেলা। সংসদীয় রাজনীতি, প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনী রাজনীতি থেকে মুসলমানদের একরকম মুছেই ফেলেছে বিজেপি। এবার দেশের হিন্দুত্ববাদী, সংখ্যাগুরুবাদী শাসকগোষ্ঠী মুছে ফেলতে চায় ভারতের ১২০০ বছরের ইসলামি সংস্কৃতি, মুছে ফেলতে চায় ১৫ কোটি মুসলমানকে। গণহত্যায়, বুলডোজারে, গো-হত্যার নামে, এনকাউন্টারে, দেশদ্রোহী ও ইউএপিএ আইনে, ৩৭০ ধারা অবলুপ্তিতে, ব্যবসা-বাণিজ্য বয়কটের ডাকে, মসজিদ-মাজার গুঁড়িয়ে, আজান-নমাজ নিষিদ্ধ করে, ঘেটোকরণে, ইতিহাস মুছে ফেলে, নব্য ন্যায় সংহিতায় আর প্রতিনিয়ত, প্রতিদিন কেবলই কেবলই ঘৃণা ছড়িয়ে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসে মুসলমান বিরোধী ঘৃণাভাষণ ততই অতিমারির আকার নেয়। ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিবাদ শোনা যায় না। ওয়াশিংটনের ‘হিন্দুত্ব ওয়াচ’-এর এক সমীক্ষা বলছে, ২০২৩ সালের প্রথম ছ’মাসে ভারতে প্রতিদিন একাধিক মুসলমান বিরোধী ঘৃণাবাক্য বর্ষিত হয়েছে। ১৭টি রাজ্যে ২৫৫টি জমায়েত ও মিছিল থেকে এই ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে। এই ঘৃণা প্রচারের ৮০% ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে। ইসারের খুন মুসলমান বিরোধী আরও এক সঙ্ঘী চক্রান্তকে সামনে এনেছে। ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ফর দ্য রাইটস অভ ডিসএবেলড’-এর কার্যকর্তা মুরলিধরন জানাচ্ছেন, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের উপর নির্যাতন ধর্মীয় চেহারা নিচ্ছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, এ বছর মহ: ইসার-সহ তিন জন বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, বিহারের সমস্তিপুরে মানসিক প্রতিবন্ধী মহম্মদ ফৈয়াজ; ২৭ জুন বিহারের সারনে গোরক্ষকদের হাতে মধ্যবয়স্ক ট্রাক চালক মহম্মদ জাহিরউদ্দিন নিহত হয়েছেন। এবং ২০২২ সালে মধ্যপ্রদেশের নিমাচে মুসলমান বলে সন্দেহ করে জনৈক প্রতিবন্ধী বনওয়ারিলাল জৈনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
ডিএমকে-র উদয়নিধি স্ট্যালিন সনাতন ধর্মের সমালোচনা করায়—আসলে সনাতনী জাত ব্যবস্থাকে মশা-মাছির মতো ধ্বংস করার ডাক দেওয়ায় — যে ‘ইন্ডিয়া’ সহযোগীদের গায়ে ফোসকা পড়েছিল, সনাতন ধর্মের ‘সম্মান’ বাঁচাতে তড়িঘড়ি বিবৃতি দিতে যাঁদের বাধেনি—তাঁরা কিংবা ‘ইন্ডিয়া’ জোট কেন ইসারের মৃত্যুর পর, সংসদে ঘৃণাভাষণের পর, কিংবা তারও আগে নূহে পরিকল্পিত দাঙ্গা বাঁধানো হলে, কিংবা তারও আগে চলন্ত ট্রেনে মোদি-যোগীর (যে ঘটনার নিন্দা করেননি মোদি বা যোগী) নামে গুলি করে খুন করার ঘটনায় কিংবা তারও আগে…আগে…আগের শত শত ঘটনার প্রতিবাদে বলে উঠবে না—বেঁচে থাকার অধিকার জীবনের মহত্তম অধিকার। কেন স্লোগান উঠবে না, ‘মুসলিম লাইফ ম্যাটারস’! মুসলমানের জীবনও মূল্যবান! জীবিকাপালন, ভয়হীন চলাফেরা, নিরাপদ জীবনযাপনও জীবনেরই অধিকার। সেকি হিন্দু ভোট হারানোর ভয়? নির্বাচনের সংখ্যাতত্ত্ব সে ভয়ের কথা বলে না। কর্নাটকের সাম্প্রতিক নির্বাচন, নূহের মুসলমানের পাশে দাঁড়িয়ে যাওয়া হরিয়ানার জাঠ খাপ পঞ্চায়েত তো সে কথা বলে না। তবে, দেশজুড়ে কবে উঠবে সে ধ্বনি, “মুসলমান জীবনও মূল্যবান। সে জীবনও মানুষের।”