সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুল: বিপদ সংকেত স্পষ্ট


  • August 29, 2023
  • (6 Comments)
  • 4466 Views

সরকারি বাংলা মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে আসছে তার প্রধান কারণ স্কুলগুলির শিক্ষাদান পদ্ধতি, শিক্ষার গুণগত মান, ব্যবহারিক মূল্য নিয়ে অভিভাবকদের তীব্র অনাস্থা। এই অনাস্থা আজ এতটাই সর্বব্যাপ্ত যে বাংলা মাধ্যমের সরকারি স্কুলগুলোতে যারা শিক্ষাদান করেন অর্থাৎ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের সন্তান সন্ততিরা বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। সুমন কল্যাণ মৌলিক-এর প্রতিবেদন।

 

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থার ভালো-মন্দ আজ আদালত নির্ভর। শিক্ষা প্রশাসনের অস্বচ্ছতার কারণে আইনি-বেআইনি নিয়োগ হোক বা বদলি, মাননীয় ধর্মাবতারদের রায়ের উপর ভরসা করে বসে আছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। এই অন্তহীন তরজার মধ্যে একটা রিপোর্ট বোধহয় আমাদের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের দশ হাজারের বেশি স্কুলে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তিরিশেরও কম ফলে সেই স্কুলগুলো আগামী শিক্ষাবর্ষে আদৌ চালু থাকবে কি না তা নিয়ে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে। স্কুলের তালিকাটা ভালোভাবে দেখলে বোঝা যায় আলিপুরদুয়ার থেকে সুন্দরবন, কলকাতা থেকে পুরুলিয়া– স্কুলে শিক্ষার্থী না থাকার সমস্যাটা সর্বব্যাপ্ত। আর এই প্রতিবেদনটা প্রকৃতপক্ষে হিমশৈলের চূড়ামাত্র কারণ তালিকাটা মূলত প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের, একটু খোঁজ নিলে বোঝা যাবে বহু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের অবস্থাটাও আলাদা কিছু নয়। আর একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আজ যদি প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির হাল এই হয় তবে আগামীতে মাধ্যমিক স্কুলগুলোর জন্য শিক্ষার্থীদের আকাল দেখা যাবে। বিষয়টা এমন নয় যে এ রাজ্যে শিক্ষার্থীরা আর স্কুলে যাচ্ছে না, বিষয়টা হল অভিভাবকরা সচেতন ভাবে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলকে বর্জন করে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে বেছে নিচ্ছেন। প্রত্যেক বছর মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর মেধাতালিকায় কেন কলকাতার স্কুল নেই বলে মিডিয়ায় অনেক হাহুতাশ লক্ষ্য করা যায় কিন্তু এই সাধারণ সত্যটার আমরা মুখোমুখি হতে চাই না যে কলকাতা বা রাজ্যের যে কোনও বড়ো শহরের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলেপিলেরা অনেকদিন আগেই বাংলা মাধ্যম স্কুল ছেড়েছে।

 

শিক্ষা বিজ্ঞানে পড়ানো হয় যে শিক্ষার মান উন্নয়নে, শিক্ষার্থীর স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়ন আবশ্যিক শর্ত। সেই মানদণ্ডে বিচার করলে বিগত সময়ে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির ভোল অনেকটাই পাল্টেছে। অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, শৌচালয়, বিদ্যুৎ এখন প্রায় সব স্কুলেই উপলব্ধ। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে কম্পিউটার, স্মার্ট ক্লাসরুম, প্রজেক্টের আজ আর মঙ্গলগ্রহের বস্তু নয়। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই, খাতা, পোশাক, স্কুল ব্যাগ এবং নবম – দশম শ্রেণির জন্য সাইকেল এবং অতিমারী পর্ব থেকে একাদশ – দ্বাদশ শ্রেণির জন্য মোবাইল ফোনের ব্যবস্থাও রয়েছে। নানান সমস্যা থাকলেও সারা রাজ্যে মিড ডে মিল এখন অনেকটাই নিয়মিত। অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অব এডুকেশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও এই বিষয়গুলি স্বীকৃত। এছাড়াও রয়েছে কন্যাশ্রী ও নানান ধরণের অনুদান যা একটা বড়ো অংশের ছাত্র – ছাত্রীদের ভাগ্যে জুটছে। সর্বোপরি এখনো পর্যন্ত সরকারি স্কুল শিক্ষার বেশিরভাগটাই অবৈতনিক। একটা দীর্ঘ সময় ধরে বাংলা মাধ্যমের স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল প্রশ্নপত্রের জটিল ও বর্ণনাত্মক ধাঁচের জন্য নাম্বার তোলা কঠিন। সে অভিযোগেরও নিষ্পত্তি হয়েছে অনেকদিন। দিল্লি বোর্ডের মত এরাজ্যেও আজ প্রশ্নপত্রের ষাট শতাংশ নৈবর্ত্তিক প্রশ্ন, নবম থেকে দ্বাদশে প্রজেক্টও চালু হয়েছে। ফলত ‘ঝুড়ি ঝুড়ি’ নাম্বার পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই। এত আয়োজন সত্ত্বেও সরকারি বাংলা মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে আসছে তার প্রধান কারণ স্কুলগুলির শিক্ষাদান পদ্ধতি, শিক্ষার গুণগত মান, ব্যবহারিক মূল্য নিয়ে অভিভাবকদের তীব্র অনাস্থা। এই অনাস্থা আজ এতটাই সর্বব্যাপ্ত যে বাংলা মাধ্যমের সরকারি স্কুলগুলোতে যারা শিক্ষাদান করেন অর্থাৎ শিক্ষক- শিক্ষিকাদের নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের সন্তান সন্ততিরা বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। এই তালিকাটা প্রকাশের পর সম্ভাব্য বদলির আকাঙ্ক্ষায় ভীত এক শিক্ষিকা সোসাল মিডিয়ায় মন্তব্য করেন, কেন শহরের স্কুল উঠে যাবে, শহরে কি গরিব নেই! পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে পকেটে পয়সা থাকলে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানকে বাংলা মাধ্যম স্কুলে ভর্তিই করবেন না।

 

এই অনাস্থা এবং অধোগমন সাম্প্রতিক সময়ে বেগবান হয়েছে একথা সত্য কিন্তু সমস্যার শুরু আরো আগে থেকেই। অনেকে বলেন প্রাথমিক সিলেবাসে ইংরেজি বিসর্জন থেকে সমস্যার শুরু। একথা ঠিক যে পরিকল্পনাহীন ভাবে হঠাৎ করে ইংরেজি তুলে দেওয়া এবং পরে পিছনের দরজা দিয়ে ইংরেজিকে ফিরিয়ে আনা অভিভাবকদের বিক্ষুব্ধ করেছিল কিন্তু আর্থিক অসামর্থ্য ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের স্বল্পতার কারণে বাংলা স্কুলের থেকে শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়নি। অবস্থার পরিবর্তন ঘটল নব্বই এর দশকে যখন এদেশে বিশ্বায়ন চালু হল। মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং সরকারি কর্মচারীদের পে- কমিশন ও ওয়েজ বোর্ডের কল্যাণে ভারতে এক নব্য মধ্যবিত্ত সমাজের জন্ম হল যাদের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষার গল্পটা ভিন্ন। একই সঙ্গে এই নতুন জমানায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সবচেয়ে উদীয়মান বাণিজ্যের ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হল। ফলে নানান বাজেটের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম দিল্লি বোর্ডের স্কুল গোটা দেশের মত এরাজ্যেও ছড়িয়ে গেল। সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় সফল হতে গেলে, অর্থনীতির নতুন চালচিত্রে চাকরির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইংরেজি ছাড়া গতি নেই — এই ভাবাদর্শ ম্যাজিকের মত কাজ করল। একটু ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে এই ব্যাঙের ছাতার মত ইংরেজি মাধ্যম স্কুল গজিয়ে উঠল প্রধানত কলকাতা, দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ি ও হলদিয়ার মত অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে থাকা শহরে যা এখন সমস্ত শহর ও আধাশহরে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

বিষয়টা দেখেও কিন্তু বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেদের বদলাতে পারেনি। সরকারি স্কুলে শিক্ষকদের চাকরির নিশ্চয়তা, বেতন বেসরকারি স্কুল থেকে অনেক উন্নত হওয়া সত্ত্বেও মূল সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের কাজের মূল্যায়ণের ক্ষেত্রে কোনও চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স না থাকায়, স্কুলগুলো থেকে সরকারি পরিদর্শন উঠে যাওয়ার কারণে পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে গেছে এবং এর দায় শিক্ষা দপ্তরের নীতি প্রণেতাদেরই নিতে হবে। অনেকে আজ স্কুল শিক্ষকদের স্বল্পতার কথা বলছেন কিন্তু বাস্তব হল বামফ্রন্টের সময় নিয়ম করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ হত। সেই সময় থেকেই কিন্তু ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর রমরমা শুরু। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হল শিক্ষার অধিকার আইন লাগু হবার পর। প্রচলিত পরীক্ষা ব্যবস্থার ভীতি থেকে শিক্ষার্থীকে মুক্ত করার জন্য প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়া শিক্ষা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যৌক্তিক কিন্তু তার বদলে যে নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়ণ চালু হল তা কার্যকরী করার ক্ষেত্রে কোনও পরিকল্পনা শিক্ষা দপ্তরের ছিল না। কিছু না শিখেই পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার ফল হল মারাত্মক। যারা মফস্বল ও গ্রামের স্কুলগুলোতে শিক্ষকতা করেন তারা জানেন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিজের নাম লিখতে বা দুয়ের ঘরের নামতা লিখতে পারছে না অথবা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী দুই অঙ্কের যোগ করতে পারছে না — এক স্বাভাবিক ঘটনা।

 

পরিবর্তনের জমানায় স্কুল শিক্ষার উপরিকাঠামোতে কিছু সদর্থক উন্নতি হলেও পড়াশোনাটা ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল। এর প্রথম কারণ অবশ্যই স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতো যোগ্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অচলাবস্থা ও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পর্বত প্রমাণ ব্যর্থতা। দুর্নীতির প্রকাশ আজ এতটাই গভীর যে রাজ্যের শিক্ষকদের যোগ্যতা আজ প্রশ্নচিহ্নের সন্মুখীন। একে তো শিক্ষকের অভাব অন্যদিকে অবৈজ্ঞানিক বদলি নীতি। স্কুলের শিক্ষকদের বদলির দাবি দীর্ঘদিনের এবং ন্যায্য। এই সরকার যখন মিউচুয়াল ট্রান্সফার ও সাধারণ বদলি চালু করেছিল তখন প্রায় সবাই তাকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু সর্বনাশ হয়ে গেল উৎসশ্রী ও স্পেশাল গ্রাউন্ড ট্রান্সফারের নামে গণবদলি চালু করে। এমনকি কাঞ্চন মূল্যের বিনিময়ে শিক্ষকেরা পছন্দের স্কুল খুঁজে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এতে গ্রাম থেকে শহরে দলে দলে শিক্ষকরা বদলি হলেন অথচ নতুন নিয়োগ না হওয়ার কারণে গ্রামের স্কুলগুলো আজ ফাঁকা হয়ে গেছে। শিক্ষার গুণগত মান কমে যাওয়ার আরেকটা বড়ো কারণ পড়াশোনার বাইরে অন্য কাজে শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া। নির্বাচন, ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো কাজ আগে থেকেই ছিল, এখন যুক্ত হয়েছে নানান সরকারি প্রকল্পগুলোর হিসাব সামলানো। বহু স্কুলে ক্লার্ক যথেষ্ট সংখ্যায় না থাকার কারণে শিক্ষকরা ক্লাস ফেলে রেখে পোর্টাল সামলাতে বাধ্য হন। এই অবস্থার নিট ফল বাংলা মাধ্যম সরকারি স্কুলগুলো সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান অনাস্থা। যে কোনও ভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষক মহাশয়রা রিকশায় মাইক বেঁধে প্রচার করছেন — এ দৃশ্য আজ বিরল নয়। পরিস্থিতি জটিল, তা শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করছে।

 

Schools with Low PTR er pdf

[pdf-embedder url=”https://www.groundxero.in/wp-content/uploads/2023/08/Schools-with-LOW-PTR.pdf” title=”Schools with LOW PTR”]

 

 

লেখক স্কুল শিক্ষক ও অধিকার আন্দোলনের কর্মী।

যোগাযোগ ৯৫৬৪৬৮৩৮১৩

 

Share this
Recent Comments
6
  • comments
    By: Chandranath Goswami on August 29, 2023

    আমার মতে 60 ,70 80 র দশকের স্কুল শিক্ষা পদ্ধতি ফিরিয়ে আনতে হবে। যেখানে ইংরেজি শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষার মাধ্যম হবে বাংলা। পাস ফেল প্রথা থাকবে । কিন্তু দু বছর এক ক্লাসে থাকলে তাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া নয়, বরং তাকে শক্তপোক্ত শিক্ষণ এর মাধ্যমে উপযুক্ত করে তোলা দরকার। দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি প্যারা টিচার ও পার্ট টাইম টিচার নিয়োগ করা উচিত ,যাতে শিক্ষকের অভাব না হয়। এই প্যারা টিচার ও পার্ট টাইম টিচারদের নির্দিষ্ট সময়ের চাকরির পর নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সুযোগ সুবিধা পেতে পারে।
    এভাবে চললে আমার মনে হয় আবার সরকারি স্কুলের সুদিন ফিরবে। আর কিছুদিন পরেই সরকারি চাকরি করা মানুষের সংখ্যা কমে যাবে। তখন অবৈতনিক সরকারি স্কুলে ছেলে মেয়েদের পাঠাতে বাধ্য হবে।

  • comments
    By: PRADIP PATRA on August 30, 2023

    বাংলা মাধ্যমে শিক্ষার্থী কমে আসা, মূলত শহরে থাকা স্কুল গুলিতে সত্যি চোখে পড়ার মতো। সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়তে ইংরাজি ছাড়া গতি নেয় এই বাস্তবতা কে এনে দিয়েছে উদারনীত, বিশ্বয়ন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদরা একথা স্পষ্ট করেছেন বহুবার যে মাতৃভাষার মাধ্যমে পাঠ দান সর্ব শ্রেষ্ঠ। কিন্তু দেশ ও রাজ্যের সরকার যে ভাবে স্কুল গুলিকে বিতরণ কেন্দ্রে হিসাবে গড়ে তুলেছে তাতে অভিভাবকদের বিশ্বাস উঠে যাওয়াই স্বাভাবিক। রামকৃষ্ণ মিশনে, বা কলকাতার বুকে বেসরকারি বাংলা মাধ্যম গুলি, বা জেলা স্কুল গুলিতে ছাত্র সংখ্যা কমছে না। উপায় : বর্তমান সরকারের সর্বনাশা সরকারি বিদ্যালয় বন্দের পরিকল্পনা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনতে হবে। তৈরী করতে হবে পরিকল্পনা যা বিদ্যালয় গুলিকে শিক্ষার পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। নতুন শিক্ষা নীতি ২০২০ কর্ণাটককের মতো এই রাজ্যেও বাতিল করতে হবে। না আরো ভয়ঙ্করতা আমাদের দেখতে হবে। সর্বশেষে এটা বলি, যে এই মন্তব্যটি যখন লিখছি তখন আমার নাম ও ইমেইল লিখেছিলাম বাংলাতে। কিন্তু এগোতে দিলো না। আমাকে ইংরেজিতেই লিখতে হলো। তারপরে আমি এই মন্তব্য জমা করতে পারলাম। অনাস্থা শুধু পদ্ধতি নয়, সামগ্রিক ব্যবহারিক, ও প্রয়োগের ক্ষেত্রেও ইংরেজিকে অবশ্যম্ভাবি করে তুলেছে।তাই বিপদ সবার।

  • খালি বিদ্যালয় কেন বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্র যেমন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর অবস্থাও দেখুন। সর্বক্ষেত্রে প্রতিভার ও মেধার অভাব নেই কিন্তু মানুষজন বেসরকারি জায়গায় যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। আসলে ব্যাপারগুলো ঠিক ওপরে চাকচিক্য ভিতরে ফাঁপা। বেসরকারি যেসব কর্মী আছে তাদের মত পোশাক পরিচ্ছদ ও পরিকাঠামো ঝা চকচকে হলে, স্মার্ট যুগে স্মার্ট ক্লাসরুম শুধু নয় কর্মচারীদের ও স্মার্ট হতে হবে। কর্মচারীদের প্রতিষ্ঠানে প্রচুর সময় দেওয়া সঠিক সময়ে স্কুলে কিম্বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ শিক্ষায় আধুনিক পন্থা অবলম্বন, এগুলি ধাপে ধাপে করলে সমস্যা কিছু করতে পারে।

  • comments
    By: অসাধারণ on August 30, 2023

    Very good description

  • comments
    By: Sankar Sarkar on August 30, 2023

    ইংরাজি মাধ্যমে পড়েও কতটা শিখছে সেটা নিয়েও আমার প্রশ্ন রয়েছে।

  • comments
    By: Sankar Sarkar on August 30, 2023

    ” রাজ্যের ৮২০৭ টি স্কুল বন্ধের মুখে, ২২৬টি পড়ুয়া শূন্য স্কুল অন্য সরকারি কাজে ব্যবহার করা হবে।”(Tarasankar Bhattacharjee)

Leave a Comment