গ্রাউন্ডজিরো-র পঞ্চম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে, ৬ মে ২০২৩, আমরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হল-এ এ রাজ্যের প্রকল্প-কর্মীদের নিয়ে “সরকারি প্রকল্প-কর্মীদের অধিকার-বঞ্চনা: সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলাম। এই আলোচনা সভায় মূল লক্ষ্য ছিল, অঙ্গনওয়াড়ি, আশা, মিড ডে মিল ও ১০০ দিনের কাজের মতো গুরত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির কর্মী, সহায়িকা, শ্রমিকদের কথা মুখোমুখি বসে শোনা, জানা। সভা শেষে আমাদের সকলেরই অনুভূতি এই যে এই প্রকল্প-কর্মীদের যে দায়-দায়িত্ব, হাড়ভাঙা খাটুনি তার তুলনায় তাঁদের ভাতা/ মজুরি অতি সামান্য। এবং এক জন কর্মী/ শ্রমিকের মর্যাদা ও স্বীকৃতিটুকুও তাঁদের নেই। একইসঙ্গে আমাদের লক্ষ্য ছিল, তাঁদের যে দীর্ঘকালের দাবি—তা তাঁদের নিজেদের মুখ থেকে শোনা। পাশাপাশি, এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকাই বা কী তা বুঝে নেওয়াটাও আর একটি অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।
এই আলোচনা সভায় বক্তারা ছিলেন, আশা কর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন; ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেলপারস ইউনিয়নের সম্পাদিকা মাধবী পণ্ডিত; অ্যাসোসিয়েশন অব মিড ডে মিল অ্যাসিস্ট্যান্টস (আম্মা)-র উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রিনা নায়েক, পশ্চিমবঙ্গ খেত মজুর সমিতির অম্বরীশ সোরেন ও প্রতিমা সর্দার এবং প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। গ্রাউন্ডজিরো-র পক্ষ থেকে আলোচনার সূত্রপাত করেন দেবাশিস আইচ।
আমরা এই সভার বক্তব্যগুলি আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনুষ্ঠানে বক্তাদের ক্রম অনুসারে তিনটি কিস্তিতে তা প্রকাশিত হবে।
আজ চতুর্থ ও শেষ কিস্তি।
অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়
প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক
উপস্থিত সবাইকে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। গ্রাউন্ডজিরোকে বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। কৃতজ্ঞতা এই কারণে যে, এই ধরনের সভায় থাকার সুযোগ খুব একটা হয় না। এইরকম শোনারও সুযোগও হয় না কথা এবং গান।
আজকাল কেবলি মনে হয় যে, আমরা অনেক বেশি কথা বলি, আমাদের মতো মানুষরা কিন্তু একেবারেই শুনি না। বিশেষ করে যাঁদের কথা আমরা খুব কম শুনতে পাই অথচ যাঁদের উপরই আমাদের গোটা সমাজ দাঁড়িয়ে আছে, তাঁদের অন্তত কয়েকজনের কথা, কিছু সংগঠনের কিছু আন্দোলনের কথা সরাসরি সুযোগ— এ কারণে কৃতজ্ঞতাটা সত্যিকারেরই মন থেকে জানাচ্ছি। এবং যে সমস্যাগুলোর কথা এখানে সরাসরি উঠে এল, বলা হল, সেগুলো আমাদের অচেনা নয়। কিন্তু, যতটা সত্যি সত্যি রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার কথা তার কিছুই হয় না।
এখানে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা একটা প্রসঙ্গ। এবং, এই আলোচনার মাধ্যমে যেটুকু সংবাদমাধ্যমের কথা এল সেটা ইতিবাচক কথা এক যে—সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে এখন এই ডিজিটাল মিডিয়া থাকার ফলে, যে ধরনের খবর আগে ততটা জানা যেত না, এখন চট করে জানা যাচ্ছে। আন্দোলনের খবর, সংগ্রামের খবর। এটা খুবই ভাল, এটা তো ঠিকই, আমরা সেটা প্রত্যক্ষ করি যে, অনেক সংগ্রাম আগে একেবারেই জানা যেত না। এখন অন্তত যাঁরা সমাজমাধ্যমে আছেন বা পরোক্ষভাবে অন্তত আছেন, খবরাখবর এখন জানতে পারছেন, এটা ভাল জিনিস। কিন্তু, একইসঙ্গে সংবাদমাধ্যম এনিয়ে, সংবাদমাধমে এই ধরনের সামাজিক আন্দোলন, গণআন্দোলনর যে গুরুত্বটা থাকা দরকার ছিল সেটা যদি আমরা মনে করি যথেষ্ট আছে, তবে খুবই আত্মপ্রবঞ্চনা করা হবে। একেবারেই নেই।
সংবাদমাধ্যমের কথা উঠলে একটা কথা বার বার এখন বলা হয়, বলা হচ্ছে—আজকেও সে বিষয়ে কথা এসেছে—যে, কীভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আমাদের দেশে খর্ব করা হচ্ছে। সেটা একটা ভয়ঙ্কর সমস্যা আমরা সেটা জানি। এটা নিয়ে নতুন করে বলার মতো আর কিছু নেই। সেটা আন্তর্জাতিক সূচকের নজরে দেখলে ভারতবর্ষের স্থান অনেকদিনই খুব নীচে। ১৩৮ থেকে ১৬১ হওয়াটা খুব খারাপ। কিন্তু, ১৩৮ নিজেই খুব খারাপ। কিন্তু, শুধু সূচকের প্রশ্ন তো নয়। আমাদের প্রত্যেকদিনের জীবনেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, কীভাবে—যাকে একেবারে বেসিক, মৌলিক স্বাধীনতা বলা হত—সংবাদমাধ্যমের যে আর কিছু না হোক অন্তত প্রশ্ন করার স্বাধীনতা, সেটাও এখন আর থাকছে না। সুতরাং, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার যে সমস্যা সেটা একেবারেই তার ভয়ঙ্কর গ্রাসের মধ্যে বাস করছি। কিন্তু, তার পাশাপাশি—বিচ্ছিন্ন নয়, তার সঙ্গে জড়িয়েই— আরও একটা সমস্যাও বেশ বড় আকার নিয়েছে। নতুন নয়, দীর্ঘকাল ধরে চলছে, আজ সেটা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে।
যেটা আমাদের এই আলোচনার খুব প্রাসঙ্গিক, সেটা হল যে, যেটাকে বলা যায়—নীরবতার হিংসা বা নীরব হিংসা। আমরা যখন সংবাদমাধ্যমের উপরে নানারকম হিংসাত্মক আক্রমণ চলে সেটা নিয়ে যতটা বিচলিত হই, সরব হই, প্রতিবাদ করি বা করার চেষ্টা করি—আমরা এই নীরবতা নিয়ে ততটা সচেতন হই না।
আজকে যে সমস্যার কথা আমরা বার বার শুনলাম—আমাদের সংবাদমাধ্যমে, বিশেষ করে মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে—আমি কোনও বিশেষ সংবাদমাধ্যমের কথা একেবারেই ভাবছি না—সামগ্রিক ভাবে যাকে বড় কাগজ, বড় টেলিভিশন চ্যানেল ইত্যাদি বলা হয়, যেগুলি বহু মানুষ দেখেন, শোনেন—বহু মানুষ দেখেন, শোনেন বলেই সেগুলো বড়, আর তো বড় হওয়ার কোনো কারণ নেই—তো তথাকথিত যে মূলধারার যে সংবাদপত্র ও সংবাদচ্যানেল, সংবাদমাধ্যম, বড় করে বললে গণমাধ্যম, সেখানে এই ধরনের আন্দোলনের কথা, একেবারেই বেসিক কতগুলো প্রশ্ন, শ্রমজীবী মানুষের চাহিদা, তাঁদের যে মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন, সেগুলোর কথা যতটা উঠে আসা দরকার তার প্রায় কিছুই আসে না। এমনকি খুব বড় সংগঠন, সমাবেশ হলেও, রাজধানী শহরে হলেও সেটার খবরখবর সংবাদমাধ্যম মারফত আমরা খুব কম পাই।
এগুলো আমাদের জানা কথা, চেনা কথা। কিন্তু, যেগুলো বিশেষ করে বলা দরকার এই কারণে যে একটা—জানি না এটার মধ্যে আত্মসমালোচনার একটা কারণও আছে—কিন্তু, তার থেকেও বড় কারণ হল যে, আমাদের তো এই সমাবেশ, সংগঠন, প্রতিবাদ আন্দোলন এইগুলো পরস্পরকে জানাতে হবে, জানতে হবে। যত বেশি আমরা জানতে পারব তত বেশি পরস্পরকে বিচলিত করার সম্ভবনাটা একটু বাড়বে। তার বেশি খুব আশা করি না। আমি অন্তত ব্যক্তিগত ভাবে অন্তত বলতে পারি যে, খুব বেশি বিরাট আশা করে আর খুব একটা কিছু লাভ হবে না। আবার একইসঙ্গে খুব—যাকে বলে খুব সিনিকাল হওয়া—যে ভীষণ কিছুই হবে না কোনও কিছুতেই এটাও কোনও কাজ হতে পারে না। একটাই সম্ভবত উপায় হচ্ছে যে, পরস্পরকে আমরা কীভাবে ওই বিচলিত করতে পারি—যে এটা নিয়ে ভাবা দরকার। আর এটা নিয়ে কথা বলা দরকার। এইটাই এই কারণেই, ওই যে ডিজিটাল মিডিয়ার কথা বলা হচ্ছে বা সামগ্রিক ভাবে অলটারনেটিভ মিডিয়ার কথা যদি বলি—আজকাল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। এবং, সেখানে বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে কতটা সমন্বয় করা যায় সেটা আমাদের খুব বেশি করে ভাবা দরকার।
বিশেষ করে আজকের এই অনুষ্ঠানের উপলক্ষ যেটা, গ্রাউন্ডজিরো’র পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়া, এটা নিজেই একটা বড় ঘটনা বলে মনে করি। কারণ এই ধরনের সংবাদ পরিবেশনের যে মাধ্যম, যেগুলো একটা দৃষ্টিতে দেখতে গেলে খুব প্রান্তিক, মার্জিনাল যে শেষ পর্যন্ত, শেষ বিচারে কতজনের কাছে আর পৌঁছতে পারছে! ওই যে বড় সংবাদমাধ্যম বলছি তার তুলনায় এগুলো তো সত্যি সত্যিই খুব ছোট ছোট উদ্যোগ। কিন্তু এই ছোট ছোট উদ্যোগগুলো যদি আরও অনেক বেশি পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে পারে, তাহলে হয়তো আমাদের এই ঘাটতি অনেকটা পূরণ করার সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে মিলিয়েই যে আর একটা কথা আসে—আজকে আমরা যে বিভিন্ন সংগঠনগুলোর নিজস্ব উদ্যোগের কথা আমরা জানলাম, তারা যে কাজ করছে জানলাম; সমাজমাধ্যম থেকেও কিছুটা কিছুটা জানি হয়তো, আবার কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। খেত মজুর আন্দোলনের কিছু খবর আমরা দেখেছি, আম্মা বা আশা কর্মীদের সংগঠন, তাদের আন্দোলন নিয়েও বেশ কিছু খবর আমরা দেখেছি। কিন্তু, এই যে আন্দোলনগুলো এখনও অনেকাংশে বিভিন্ন সংগঠনের নিজস্ব আন্দোলন হয়ে থাকছে। এই বিভিন্ন আন্দোলনগুলোর মধ্যে কি কোনও সংযোগ তৈরি করা যায়? এটা বার বার প্রশ্নটা আমার নিজের মনে হয়। আমি কোনওদিন কোনও সংগঠনের কাজ করিনি, করার সৌভাগ্য হয়নি বলব, করতে পারিনি সেটা নিজের দুর্ভাগ্য বলেই মনে করি। কিন্তু যতটুকু দেখি এখন, সেটা প্রশ্ন হিসেবেই রাখছি, সামাজিক আন্দোলনগুলোর মধ্যে কি একটা সংযোগ তৈরি করা যায়? তৈরি করা গেলে, সেই সামাজিক আন্দোলনগুলোর খবর যে সংবাদমাধ্যমগুলি পরিবেশন করছে—সেগুলো মূলধারার হোক বা চাই না হোক— তাদের মধ্যে কি এক ধরনের সংযোগের সম্ভবনা বাড়ে? এটা আমাদের হয়তো আর একটু ভাবা দরকার। পৃথিবীর নানা দেশে কিন্তু তার নানা উদাহরণ আছে। এমন নয় যে একেবারেই নেই। আমরা দেখেছি লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে কীভাবে বহু সামাজিক আন্দোলন, বহু ধরনের আন্দোলন, তারা পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাদের সেই আন্দোলনের ভিতর থেকে সংবাদমাধ্যমের একটা নতুন রিজেনারেশন হয়েছে। একটা নতুন করে তারা জেগে উঠেছে। এবং যেটা আপাতদৃষ্টিতে সম্ভব বলে মনে হচ্ছিল না, সেটা কিছুদিনের মধ্যে দেখা গেল সম্ভব হয়েছে। বহু মানুষের কাছে তারা পৌঁছতে পেরেছেন।
এই যে সামাজিক আন্দোলন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের আন্দোলন—যদি এভাবে বলি— তাহলে সেটা গড়ে তোলার কি কোনও জায়গা আমাদের দেশে আছে? একেবারেই নেই এটা বিশ্বাস করি না। কিন্তু, আছেই সেটা জোর দিয়ে বলার মতো—ওই যে যেটা বললাম নিজের কোনও অভিজ্ঞতা নেই, জ্ঞানও নেই। সুতরাং সেটা করতে পারব না। কিন্তু, এইটা আমি বিশেষ করে, আজকের অনুষ্ঠান মানে উপলক্ষ্য করে—শুধু গ্রাউন্ডজিরো নয়—আমাদের সকলকেই ভেবে দেখতে বলব, নিজেকেও ভাবতে বলব—আমরা এটা নিয়ে কীভেবে ভাবতে পারি, আর একটু এগোতে পারি।
কারণ, আমি শেষ করার আগে একটা কথাই বলব—সেটা হচ্ছে যে, বার বার আজকে শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, এটা রোজই মনে হয়—মনে হচ্ছিল যে প্রশ্নগুলো তোলা হচ্ছিল, যে দাবিগুলো তোলা হচ্ছিল, এমন কোনও দাবি নয় যেটার জন্য মানে আমরা এমন একটা ভাল জায়গায় আছি বা মোটামুটি জায়গায় আছি, সেখান থেকে যেতে চাই যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল। সেই দাবি তো নয় এগুলো। এটা তো একেবারে বেসিক মিনিমাম। যেটা বহুদিন আগে, যেটা বলে দেওয়া হয়েছে এগুলো মানুষের প্রাপ্য। এবং এমনি বলে দেওয়া হয়নি। বহু আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে সেগুলো অর্জন করতে হয়েছে। আজকে সেইগুলো অবধি হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এবং এমনকি যাঁরা সমাজের সুযোগ বঞ্চিত মানুষ, যাঁরা সবথেকে দুস্থ অবস্থায় আছেন, কোনও কাজ নেই বলে যাঁদের সরকারের কাছে ১০০ দিনের কাজ চাইতে হচ্ছে, সেই মানুষদের বকেয়া টাকা—তাদের তো কাজের সুযোগ নেই, বলা হচ্ছে তোমাদের কাজ নেই—বকেয়া টাকা অবধি তাঁদের দেওয়া হচ্ছে না। যে টাকাটার পরিমাণ এই হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে, ৩০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। এবং এই যে কাজ নেই, দেওয়া যাবে না, এই কথাটা বলার কোনও সাংবিধানিক—সংবিধানের নিজের জায়গা থেকে দেখলে—কাজ নেই বলার কোনও অধিকার কিন্তু কোনও সরকারের থাকতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার কারোর কিন্তু এই অধিকার থাকতে পারে না। কারণ, এই আইনটার মানে হল, যেটা বলা হল, আমি যদি কাজ চাই তাহলে আমাকে কাজ দিতে হবে। কিন্তু, বলা হল কাজ নেই কারণ কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, দুর্নীতি হচ্ছে তাই টাকা দেওয়া হবে না। এই কথাটার আর পুনরাবৃত্তি করব না বার বার এসেছে। এখন যেটা রোজ মনে হয়, সেটা হচ্ছে যে, তোমাদের ঝগড়া তোমরা মেটাও, মেটাবে কি মেটাবে না, রাজনীতি করবে—তোমাদের সমস্যা। গরিব মানুষ, শ্রমজীবী মানুষ তাঁকে কেন টাকা দেওয়া হবে না? তাঁকে কেন কাজ দেওয়া হবে না? এর জবাব কে দেবে? এটাই তো প্রথম কথা হওয়ার দরকার, বাকিটা পরের কথা।
তো, এগুলো তো আমরাই বলব, আমরাই শুনব, এই করে কতদূর এগোনো যাবে আমরা জানি না। সেজন্যই বেসিক জায়গাগুলো থেকে কী করে সামাজিক আন্দোলনগুলোকে আরও বেশি জোরদার করে গড়ে তোলা যায়, তো, সেগুলোর মধ্যে ওই সংযোগ তৈরি করা কি সম্ভব? এ নিয়ে আমরা সবাই মিলে একটু ভাবি, তাহলে কাজের কাজ হতেও পারে।
এটুকুই আমার বক্তব্য। আমি শুনতেই এসেছিলাম এবং সেটা খুবই বড় অভিজ্ঞতা হল আজকে আমার কাছে। আপনাদের সবাইকে নমস্কার।