ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবার মুখে। প্রতিবাদীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে, জোর করে জমি নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। গোড্ডা থেকে পাকুড় হয়ে, মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কার বল্লালপুর, সামসপুর, ভোলাকান্দি, দাদনটোলা ও ইমামনগর হয়ে পদ্মার উপর দিয়ে বাংলাদেশের নবাবগঞ্জ-রাজশাহি হয়ে বিদ্যুৎ-এর লাইন পৌঁছবে রংপুর পাওয়ার গ্রিডে। ফরাক্কার ৫-৭ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দের বিরোধ বেধেছে। চার লক্ষ ভোল্টেজের হাইটেশন বিদ্যুতের লাইন নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এই বিরোধ। ২ জুলাই, ২০২২ বিনা নোটিশে, বিনা চুক্তিতে আদানি গোষ্ঠীর সেই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জোর করে জমি কাড়তে নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বাহিনী। ফারাক্কার দাদনটোলা গ্রামে। রক্তাক্ত করেছে প্রতিবাদী মানুষদের।
সারা পূর্ব ভারত জুড়ে আদানির কোম্পানি রাজ, প্রযত্নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। গোড্ডা থেকে ফারাক্কা, জমি লুঠের এক সর্বনাশা প্রকল্প। নবান্নের অলিন্দে দাঁড়ানো মমতা-আদানির ছবির বিপ্রতীপে নতুন করে দেখা যাক গোড্ডাকে। গত ডিসেম্বর, ২০২০তে সেখানে যায় আমরা এক সচেতন প্রয়াস-এর এক তথ্যানুসন্ধান দল। কীভাবে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় কর্পোরেট-রাষ্ট্রশক্তির আঁতাতে লুণ্ঠিত হচ্ছে আদিবাসীদের জমি। তা নিয়ে আমরা এক সচেতন প্রয়াস-এর তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন।
গোড্ডা তথ্যানুসন্ধান
ঠিক এই মুহূর্তে পূর্বভারতের তিনটি রাজ্যে কর্পোরেট-রাষ্ট্রশক্তির আঁতাতে লুণ্ঠিত হচ্ছে আদিবাসীদের জমি। বৃহৎ পুঁজিকে লাল কার্পেট দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলি। লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধকে আটকানো হয়েছে, প্রতিবাদ করলেই ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট আক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে।
ওড়িশার জগতসিংপুর জেলার পস্কো প্রকল্প আটকে দিয়েছিলেন সেখানের মানুষ। পস্কো সরেছে, এসেছে জিন্ডাল।তার প্রতিবাদে ঢিঙ্কিয়া গ্রামের মানুষ পথে নামলে, পুলিশ চালিয়েছে নির্মম অত্যাচার। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবার মুখে। প্রতিবাদীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে, জোর করে জমি নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। পশ্চিমবঙ্গে বীরভূম জেলার মুহম্মদবাজার ব্লকের কয়লা ব্লক সংশ্লিষ্ট কথিত প্রকল্প নিয়ে এখন সরকারি হুঙ্কার। সর্বত্রই একই ছবি। জোর করে, প্রলোভন দেখিয়ে জমি দখল। ২ জুলাই, ২০২২ বিনা নোটিশে, বিনা চুক্তিতে আদানি গোষ্ঠীর সেই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জোর করে জমি কাড়তে নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বাহিনী। ফারাক্কার দাদনটোলা গ্রামে। রক্তাক্ত করেছে প্রতিবাদী মানুষদের। সারা পূর্ব ভারত জুড়ে আদানির কোম্পানি রাজ, প্রযত্নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।
এই প্রেক্ষাপটে একটু ফিরে দেখা যাক। কয়েকমাস আগের কথা, আমরা দেখতে পেলাম নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গৌতম আদানির ‘খুশি খুশি’ ছবি। তার কয়েকমাস বাদে আবার কোলকাতায় বাৎসরিক শিল্প উৎসবে গৌতম আদানির চমক দেওয়া ভাষণ, যে ভাষণে উনি বাংলার নারীশক্তি বোঝাতে প্রীতিলতা, রোকেয়া, মাতঙ্গিনীর সঙ্গে মমতার নাম উচ্চারণ করেন। অবলীলায় এবং এক নিঃশ্বাসে। বীরভূমের দেউচা-পাচামি-হরিণসিঙ্গার মানুষদের কত দুঃখের বিনিময়ে এই ‘খুশি’ তা বোঝা যাচ্ছে এখন। ফারাক্কার কত লিচু আর আম বাগানের বিনিময়ে আর মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই ‘খুশি’ তাও পরিষ্কার হচ্ছে ক্রমশ। এই ডিলে কত কত কোটি টাকা ঢুকবে কোন কোন গোপন আকাউন্টে তা হয়ত জানা যাবে না। কিন্তু সম্ভবত হোমওয়ার্ক ঠিক মত করে আসেননি আদানি সাহেব, বাংলার নারীশক্তি কি জিনিষ তা টের দিতে শুরু করেছে দেউচা-পাচামি-হরিণসিঙ্গা। ফারাক্কাতেও পরাজিত হবে তারা। নিশ্চিত।
‘আমরা এক সচেতন প্রয়াস’ বস্তুত যে কাজ দিয়ে তার অস্তিত্ব প্রথম জানান দেয় তা ছিল ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের ওপর তথ্যায়ন, যা পরবর্তীতে ‘পিপুলস ট্রাইবুন্যাল’-এ জমা দেওয়া হয়। বলা যেতে পারে জমি আন্দোলনের তথ্যায়ন দিয়েই আমাদের পথ চলার শুরু। ২০১৯ সালে আমরা প্রথম ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা যায়, জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার আর এক মানচিত্রে। আমরা কথা বলি যারা জমি দিতে চাননি তাই সরকারের পুলিশ বাহিনীর বা আদানির নিয়োজিত দালাল তথা গুন্ডা বাহিনীর দ্বারা নিগৃহীত, তাঁদের সঙ্গে। কথা হয় যারা জমি দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে। আমরা আদানির প্ল্যান্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলতে চেষ্টা করি কিন্তু ব্যর্থ হোই। আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি পুলিশ আধিকারিক, প্রশাসনিক আধিকারিকরাও, কারণ নির্বাচনের আচার সংহিতা তখন বলবৎ ছিল, উল্লেখ্য ঝাড়খণ্ডে তখন বিধানসভা নির্বাচন ছিল। আমরা কথা বলেছিলাম স্থানীয় বিধায়ক, জমি আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে। আদিবাসী, অনাদিবাসী নির্বিশেষে কথা হয় সাধারণ মানুষের সঙ্গে। আমাদের সেই তথ্যানুসন্ধান রিপোর্ট ইতিমধ্যে গ্রাউন্ড জিরোতে প্রকাশিত হয়েছে। নবান্নের অলিন্দে দাঁড়ানো মমতা-গৌতমের ছবির বিপ্রতীপে নতুন করে দেখা যাক গোড্ডাকে। উল্লেখ্য আমরা গত ডিসেম্বর, ২০২০তে আবার সেখানে যায়, উদ্দেশ্য লকডাউন উত্তর পর্বের জরীপ। আমাদের এই তথ্যানুসন্ধান দলে ছিলেন মান্যুয়েল সোরেন, সুনিরাম সোরেন, ফারুক উল ইসলাম, শুভ প্রতিম এবং শমীন্দ্র সরকার।
আমরা জানি বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ রপ্তানির উদ্দেশ্যে একটি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে সেখানে আদানি পাওয়ার-এর জমির দরকার ছিল। গোড্ডা জেলার গোড্ডা ব্লকের চারটি গ্রাম, মোতিয়া, পাটোয়া, গাঙটা ও নয়াবাদ এবং পরেয়াহাট ব্লকের পাঁচটি গ্রাম, সন্ডিহা, পেটবি, গায়ঘাট, মালি আর রাঙ্গানিয়ার জমি নিয়ে মেসার্স আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড ২X৮০০ মেগাওয়াট রপ্তানিকৃত কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই জন্য বাছা হয়েছিল গোড্ডা শহরের অনতিদূরে এমন একটি এলাকার জমি যা রেকর্ডে অনাদিবাসীদের নামে যদিও আদিবাসীরা জানতো তা তাদেরই জমি। জমিগুলো চাষ করতো আদিবাসীরাই। আদানির গুণ্ডারা জমি কিনতে গ্রামে গ্রামে ঢোকে। তারপর ভয় দেখিয়ে হোক বা প্রলোভন দেখিয়ে জমি কিনে নিতে থাকে জমির ‘রেকর্ডকৃত’ মালিকদের থেকে। এই মালিকরা বলাবাহুল্য অনাদিবাসী। স্বল্প জমির মালিক। সত্যি বলতে কি তখন আদিবাসীদের টনক নড়ে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ভূমিরাজস্ব দপ্তরের অফিসে গিয়ে দেখে জমি অন্যের নামে। তাঁদের দারিদ্র এবং জানাবোঝা এতটাই কম যে অনেকে সেই অফিস পর্যন্তও পৌঁছাতে পারেনা। তারা তখন দিশেহারা। আবার যারা ভূমিহীন চাষি তাদের অবস্থা আরও সঙ্গিন। এসবের মধ্যে আদানি জমি কিনতে থাকে। দেওয়াল উঠতে থাকে।
তাহলে একটা বিষয় পরিষ্কার এই এলাকাটি বেছে নেওয়ার পিছনে আদানির গ্রাউন্ড ওয়ার্ক মজবুত ছিল। রাজ্য সরকারি দপ্তর তা সে ভূমিরাজস্ব দপ্তর হোক বা পুলিশ প্রশাসন সকলের মদতে এখানে ৮০০একর জমি এখনও পর্যন্ত আদানির দখলে এসেছে লকডাউনের আগে। হ্যাঁ এটা জমি ডাকাতিই।
গত বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ডে সরকারের বদল হয়েছে, কিন্তু আদানির ‘অপরাধ’ থামেনি। আগের সরকার তার যাবতীয় নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে দাঁড়িয়েছিল জমি-ডাকাত আদানির পাশে। অর্থাৎ আদিবাসীদের বিরুদ্ধে। সরকারে এখন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশান, যাতে কংগ্রেসও শামিল। মুখ্যমন্ত্রী শিবু সোরেনের ছেলে হেমন্ত সোরেন। স্থানীয় মানুষের বাচনে, ‘বিজেপি’র প্রিয় আদানি-আম্বানি, আর কংগ্রেসের ‘টাটা-জিন্দাল’। এই প্রসঙ্গে বলা যায় একই আশঙ্কার কথা আমরা শুনেছিলাম ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলায়। পাথলগডি আন্দোলনের মাটিতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন কানহাইয়া মুন্ডা, কিংবদন্তী বিরসা মুন্ডার বংশের উত্তর পুরুষ, বলেছিলেন, এখন আমরা আশঙ্কা করছি জিন্ডাল গোষ্ঠীকে না আমাদের জমি-পাহাড় দিয়ে দেয়। এখন সে প্রসঙ্গ থাক।
আদানির কিন্তু আরও জমির দরকার ছিল (এবং এখনও আছে)। যেসব গ্রাম তাদের লক্ষ্য ছিল তার মধ্যে মালি আর গাঙটা রুখে দাঁড়িয়েছিল প্রবলভাবে। আজও তারা একই অবস্থানে। কিন্তু অআদিবাসীদের গ্রাম আন্দোলনের শুরুর দিকে শামিল হলেও পরে প্রলোভনে জমি দিতে থাকে। আন্দোলনের অন্যতম নেতা চিন্তামণি সাহু’র পরিবারের সকলে, তাঁর দাদা, ভাইয়েরা জমি দিয়ে দিয়েছেন। চিন্তামণি দেননি। যদিও ‘বুঁদির কেল্লা’ কতদিন রক্ষা করবেন সন্দেহ আছে।
গাঙটা গ্রামে সূর্যনারায়ণ হেমব্রম আন্দোলনের অগ্রণী মুখ। মালি গ্রামে ম্যানেজার হেমব্রম আন্দোলনের আর এক মুখ।এদের জ্ঞাতি মিলিয়ে শখানেক পরিবার এখনও জমি দেননি। আদানির পাঁচিল এই দুটি গ্রামের পাশ দিয়ে গেছে। প্রায় ঘিরে রেখেছে গ্রামদুটি। সূর্যনারায়ণের ১৩ কাঠা জমি আদানির পাঁচিলের মধ্যে। জোর করে এই দখল। আজ তিন বছর তারা সেই জমিতে চাষ তো দূরের কথা প্রবেশ পর্যন্ত করতে পারেনি।
দুটি গ্রামেই আদানির গুন্ডা বাহিনী ঘুরছে। ভয় দেখাচ্ছে। প্রথমে অবশ্য অন্য ‘তরিকা’ নিয়েছিল তারা। আদানির দালালরা গাড়ি ভর্তি জুতো এনে বিলিয়েছিল গ্রামগুলিতে। ‘পয়সা পাবে, অন্য জায়গায় জমি কিনে তোমরা চলে যাও’, এই ছিল তাদের পরের কথা। গ্রামের মানুষ জুতো ও কথা ফিরিয়ে দিয়েছিল। ‘বেড়িয়ে যাও কোন কিছু আমাদের চাইনা’, জবাব দিয়েছিল মালি আর গাঁওটা গ্রামের মানুষ। ধাক্কা খেয়ে স্বর বদলে যায়, বলে তোমাদের জমি তো অধিগ্রহণ হয়ে গেছে। কখনও বলে তোমাদের জমি আদানি কিনে নিয়েছে। বাস্তবতা হল, গত দুই বছর জমির কোন কর নেওয়া হচ্ছে না। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরছে আদানির দালাল ও গুন্ডা। ম্যানেজার হেমব্রম গ্রামছারা। গ্রামের মানুষ অশনিসংকেত দেখছেন।
এর প্রেক্ষিতে আমরা এবারে কথা বলি মালি গ্রামের মানুষদের সঙ্গে। ম্যানেজার হেমব্রমের স্ত্রী সীতা টুডু সহ মহিলাদের সঙ্গে। কথা হয় ম্যানেজারের ছেলে রাকেশ হেমব্রমের সঙ্গেও। রাকেশ আমাদের শোনালেন ‘বিশ্বাসঘতকতার কথা’, শোনালেন লড়াই জাড়ি রাখার চ্যালেঞ্জ।
আমরা- জমি দেবেন না, পয়সাও নেবেন না। তাহলে কি করতে চাইছেন? আবার কি হুল (বিদ্রোহ) হতে চলেছে?
রাকেশ- ওর থেকেও বড় কিছু। কেননা ইংরেজ সেইসময় যেরকম শোষণ করছিল সে তো কবে থেকে করছিল। কিন্তু এখন তার থেকে বেশি শোষণ হচ্ছে। আমরা সিনেমায় যাসব দেখেছি, তা অনেক ছিল কাল্পনিক, কিন্তু এখানে এখন এসব বাস্তবতা। এসবের বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন। এখন কোর্টেও আমরা বিচার পাচ্ছি না। চার বছর আমাদের দৌড়তে হয়েছে। দশদশটা স্বাক্ষি দিয়েছি আমরা। যেদিন আমাদের ফাইনাল শুনানি ছিল সেইদিন আমাদের উকিল আমাদের সঙ্গে ধোঁকা দিয়ে দিল।
আমরা- কোথায়?
রাকেশ- গোড্ডা কোর্টে, জেলা কোর্টে। আমরা যতজন গিয়েছিলাম ততজনকে উল্টোপাল্টা বোঝাচ্ছিল।আমাদের বোঝানো হচ্ছিল, দেখো জি, কোম্পানিকা আপনা জাজ হ্যায়। জাজমেন্ট হামলোগকো নেহি মিল সাকতা হ্যায়। আমি ওনাকে বলেছিলাম, দেখুন জাজমেন্ট মিলে চায় না মিলে, আপকা যো কাম হ্যায় কিজিয়ে। জাজ যো দেগা বো উনকা মর্জি হ্যায়। আপকো তো কাম কারনা চাহিয়ে। লেকিন উহা পে ক্যা হুয়া, কুছ ভি উহাপে নেহি হুয়া।
উসিদিন হামনে বোলা, যিতনা ভি মেরা ডকুমেন্ট হ্যায়, আপ ভাই হামকো দিজিয়ে, আপসে উকিলগিরি নেহি হোগা। হাম তো জান গায়ে আপ পায়সা মে বিক গয়ে।
আমরা- ইয়ে শুনবায়ি কব থা? ২০২০ মে?
রাকেশ- ২০২০ মে।
আমরা- ইসকা বাদ ওর কুছ ডেভেলপমেন্ট হুয়া নেহি?
রাকেশ- কুছ নেহি। তো তখন খুব গালিগালাজ করে আমরা চলে এসেছিলাম। আমাদের যত ডকুমেন্ট ছিল নিয়ে চলে এসেছি।
আমরা- এই যে অনশন আন্দোলন হয়েছিল, লাগাতার অবস্থান হয়েছিল, আজকের দিনে কি তা আবার সম্ভব হবে?
রাকেশ- হ্যাঁ, হতে পারে। এখনও হতে পারে।
আমরা- রাঁচি থেকেও অনেক মানুষ এসেছিলেন, আপনাদের সঙ্গে আলোচনাও করেছিলেন। কিন্তু সেখানে কি কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল?
রাকেশ- আমরা জামতারার সঙ্গে কথা বলেছিলাম।
আমরা- গোড্ডাতে উকিল আছেন ইমাম আহমেদ, হিউম্যান রাইটস ল নেটওয়ার্ক-এর…।
রাকেশ- ওহি তো হামলোগকা উকিল থা।ওই তো আমাদের বলেছিল, আমি সমাজসেবী ইত্যাদি ইত্যাদি। ওকেই তো বললাম, ‘উল্লু হামকো মত বানায়ইয়ে’, আমাদের বলছে‘কিতনা পায়সা দিয়া হ্যায় জি?’, আমরা বললাম ‘দেখিয়ে ভাই, হামলোগ দশ রূপিয়া দিয়ে হ্যায় না, বহুত মেহনত করকে দিয়ে হ্যায়’।
আমরা- ও তো এইচ আর এল এন-এর উকিল, পয়সা সেখান থেকেই নিয়েছে যা নেবার। কিন্তু আপনি বলছেন, কোর্টে ও বলে, জাজ আদানির পক্ষে, তাই তো?
রাকেশ- একদম তাই। আবার বলছে কি এখানে জেতা মুশকিল, হাইকোর্ট যাবো। আমরা বলেছিলাম, দেখুন স্যার, আমাদের জিত হোক বা না হোক আপনি এখানে তো লড়ুন। কিন্তু ও কোন বেহেসই করলো না। আমরা বললাম, আদানির যে উকিল ওর মুখে কি পোকা (কিরা) ছিল যে ও বরবর করে ভাষণ দিচ্ছিল। এ চুপ ছিল। আমরা জানি, কোর্টে উকিলে উকিলে টক্কর হয়, তারপর বিচারক রায় দেন।
আমরা বললাম, চার বছর ধরে আমরা আপনার পিছনে ঘুরলাম। আপনাকে বিশ্বাস করলাম।
হামলোগ কো এইসা বুরবক বানা দিয়ে যো কোর্ট কে আন্দর হামলোগকো জানেই নেহি দিয়া। আমাদের বলল কি, আরে ইহা বৈঠনে নেহি দেগা, আপলোগ বাহার বৈঠিয়ে, হাম করকে আতে হ্যায়।
আমার বিশ্বাস ছিল যে রায় আমাদের পক্ষেই যাবে। কেননা দশ দশ জন ব্যক্তি স্বাক্ষি দিয়েছে।
সীতা মুরমু- (সাঁওতালি), বলল কি যো যো নিকলো। এখান থেকে যাও।
আমরা- আজ কা দিন মে স্থিতি ক্যা হ্যায়?
রাকেশ- একই হ্যায়।
আমরা- আপনারা হাইকোর্ট গেলেন না কেন?
রাকেশ- জানা তো চাহাতে হ্যায়, কিন্তু ভরসা করতে পারছি না। কিউকি আভিতক হামলোগকা রাসিদ নেহি কাট রাহা হ্যায়।এক একর কা কাট রাহা হ্যায়। যিতনা ভি কোম্পানিবালাকে হ্যায়, দালাললোগকা হ্যায়, তিন আদমি দালালি কিয়া থা সামুচা প্লট মে। তিনও দালাল সে মেরা খুব পহচান হ্যায়, উলোগ সে যবভি ভেট হোতা হ্যায় তবভি হামলোগকা ঝাগরা স্টার্ট হো যাতা হ্যায়। হামসে পুছতা হ্যায়, ক্যা হাল হ্যায় রাকেশজি? হাম তব পুছতে হ্যায়, আপলোগ কা ক্যা হাল হ্যায়? হামলোগ কা হাল তো দেখবে কর রাহা হ্যায়, মারহি দিয়া হ্যায় হামলোগ কো। ওরা বলে, আপলোগকা পাস একই রাস্তা হ্যায়, পয়সা লে লিজিয়ে। নেহিতো আপলোগকা জমিন তো চালা গিয়া। আপলোগকা জমিন সব আদানিকা পাশ চালা গিয়া। এহি বলতা হ্যায় বো লোগ।
কেননা আমাদের জমির কোন রসিদ কাটা হচ্ছেনা। সারা প্লট তিনজন দালালি করেছিল। যখনই ওদের সঙ্গে দেখা হয় ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। আমাদের রগর করে জিজ্ঞেস করে,ক্যা হাল হ্যায় রাকেশজি? আমি বলি আমাদের হাল (অবস্থা) তো দেখছই, আমাদের মেরেই ফেলেছ তোমরা। ঘিরে ফেলেছ চারিদিক। তখন বলে, একই রাস্তা পয়সা নিয়ে নিন। নাহলে আপনাদের জমি চলে গেছে, কিছু করতে পারবেন না। আপনাদের জমি সব আদানির নামে হয়ে গেছে। যেকোন দিন আমাদের ওপর হামলা হতে পারে।
আমরা- গ্রামের সকলে এককাট্টা আছেন?
রাকেশ- হ্যাঁ। আসুক না দেখি, কত দম।
আমরা কথা বলি গ্রামের শেষে এক অতিবৃদ্ধার সঙ্গে। সাঁওতালি ছাড়া অন্য কোন ভাষা তাঁর জানা নেই। আমাদের স্থানীয় সঙ্গি ম্যানুয়েল আর সুনিরাম কথা বলছিলেন তাঁর সঙ্গে। শীর্ণ হাত নেড়ে বা গলা উচ্চগ্রামে তুলে যা বলছিলেন তার মানে-
আমরা জমি দেব না। দিনে রাতে গুন্ডা আসছে, আমরা এখানেই থাকবো। এই গ্রাম ছেড়ে আমরা যাবই বা কোথায়, আর যাবই বা কেন? তাঁর নাম জিজ্ঞেস করাতে তিনি বলছিলেন, নাম বলবো কেন? যদি নাম বললে আমার জমি লিখে নিস!
(২)
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যে জমি নিতে ‘সফল’ আদানি অসফল থেকেছে গোড্ডা জেলারই অন্য দুটি জায়গায়। সুন্দরপাহাড়ি আর সুন্দরজলাশয়। সুন্দরপাহাড়ির কয়লা আর সুন্দরজলাশয়ের জল ছিল তাদের লক্ষ্য। বলাবাহুল্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য। কিন্তু আদিবাসী জনতার প্রতিরোধে থামতে হয়েছে আদানিকে, সরকারকে।
সুন্দরপাহাড়ি আন্দোলন প্রসঙ্গ
আদানির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যে বাইপাস রাস্তা হয়েছে পরেয়াহাট থেকে সেখানে সুগাবাথান নামে একটি জায়গা আছে। ওই এলাকায় একটি বড় ড্যাম আছে।আমাদের অনুমান সেই ড্যাম থেকে জল আনা হবে, যদিও ওদের পরিকল্পনা কি তা আমরা জানিনা। আমাদের অনুমানের ভিত্তি অবশ্য স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথোপকথন।
পরেয়াহাট ও তার আশেপাশের জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ করা হয়েছিল। এর জোরদার বিরোধ হয়েছিল, আমরা খবর কাগজে পড়েছি। এই প্রসঙ্গে কথা হয় সুভাষ হেম্বরমের সঙ্গে। সুভাষ সুন্দরপাহাড়ি আন্দোলনের অন্যতম মুখ। আমরা কথা বলি মেরি নিশা টুডুর সঙ্গেও। মেরি সুন্দরজলাশয় আন্দোলনের অগ্রণী মুখ। সুভাষ বলেন,ওই সময় ওরা (আদানি) পিছু হটেছিল। কেননা ওদের পলিসি ছিল এগুতে গেলে আপাতত পিছু হটতে হবে। রাস্তার জন্যও জমিঅধিগ্রহণ হয়েছিল। তবে ড্যাম বা অন্য উদ্দেশ্যে জমি নিতে পারেনি।এখানে সুভাষ ও মেরির সঙ্গে আলোচনার সংক্ষিপ্ত অংশ রাখা হল।
আমরা- জলাশয়ে হাত দিতে পারেনি আদানি?
মেরি- না। আমরা দিতে দিইনি।
আমরা – আমরা যখন পরেয়াহাট হোয়ে প্ল্যান্টের দিকে আসছিলাম তখন দেখেছিলাম ঘরের ওপর দিয়েই রাস্তা হয়েছে, অনেক মানুষের জমি নেওয়া হয়েছে মনে হচ্ছিল।কিছু মানুষের দোকান ছিল। তাই ক্ষতিপূরণ নিশ্চয় দেওয়া হয়েছে। আচ্ছা এই রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে কোন বিরোধ কি হয়েছিল?
সুভাষ- দেখুন রাস্তার জন্য জমি তো আদানি নেয়নি, সরকার নিয়েছিল। এটাই সব থেকে বড় সমস্যা। আমাদের ওখানে, মানে সুন্দরপাহাড়ি এলাকায় জিতপুর কোল ব্লক নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন হয়েছিল।
আমরা – ওখানের বিষয়ে শুনতে চাইছি। ওখানে ঠিক কি হয়েছিল?
সুভাষ- দেখুন, ওখানে কোল ব্লক নিলামের মাধ্যমে আদানিকে পাইয়ে দেবার পরিকল্পনা হচ্ছিল। সেই সময় ঝাড়খণ্ডে বিজেপি সরকার। কেন্দ্র সরকারের অধীনে কোল ইন্ডিয়া। কয়লা ব্লক আদানিকে দেবার ব্যাপারে নক্সা তৈরি ছিল।
যেহেতু আদানি বড় কোম্পানি, খবরটা চেপে রাখা যায়নি। আমাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। ওখানে আগে থেকেই প্রতিবাদ আন্দোলন চলছিল। এর আগে জিন্দাল কে কোল ব্লক দেবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে।
এবারে খুব প্রলোভন দেবার চেষ্টা হয়েছে। কিছু চুক্তিও (Agreement) হয়েছিল, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ এর বিরুদ্ধে ছিল এবং এখনও আছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস। তো সেইসময় প্রায় দুই হাজার মানুষ রাস্তায় অবস্থানে বসেছিল। আমাদের প্ল্যান ছিল ওদের (আদানি) মূল জায়গায় যেতে দেওয়া যাবে না। কেননা ওইখানে পৌছলেই কিছু গড়বর হতে পারে। আমরা তখন অবস্থা সামলাতেও পারবো না। এরজন্য ওদের প্রবেশের (Entry) আগেই আমরা রুখে দিয়েছিলাম। ওরা আমাদের কাগজ দেখাচ্ছিল, যে ওরা নিলামে পেয়েছে (হামলোগকা auction মে মিলা হ্যায়)। আপনারা কে যে আমাদের থামাচ্ছেন। যখন কেন্দ্র সরকার আমাদের এই কয়লা খনি দিয়ে দিয়েছে, তখন আপনারা কে যে আমাদের আটকাচ্ছেন?
এখানে এমনিতে একটা ব্যাপার আছে, ঝাড়খণ্ডে সাঁওতাল পরগণা টেনেন্সি অ্যাক্ট আছে, আমরা জানি সেই আইনবলে আমাদের (আদিবাসীদের) জমি কেউ নিতে পারবে না। তো এই কেন্দ্র সরকার কে হচ্ছে আমাদের জমির অধিকার আপনাদের দেবার?
উত্তর দিতে না পেরে এখানের যারা সরকারি আধিকারিক ছিল তাদের ওরা (আদানি) তখন এগিয়ে দিয়েছিল, ‘এরা কি বলছে, এদের মোকাবিলা করুন’ (ক্যা বোল রাহা হ্যায়, ইসকা সামনা করো। আমরা আধিকারিকদের বললাম, এখানে এসেছেন কোন সূচনা বা খবর দিয়েছেন কি? এটা বেআইনি। দুই হাজার মানুষ আছে, জিজ্ঞেস করুন। আইন অনুসারে এটা শিডিউল এলাকা, আইন হচ্ছে এখানের গ্রামবাসীদের জানিয়ে অফিসারদেরও আসতে হয়।কিন্তু আপনারা তা করেননি।
এদিকে কথাবার্তা চলছে, কথাবার্তা আর কি বলবো ঝামেলা (টকরাও)বলা যেতে পারে, তা চলছে আর পুলিশ তার কাজ শুরু করেদিল। কয়েকজন যুবককে গ্রেফতার করলো। আমরা পরে জানলাম।
আমরা স্পষ্ট বললাম, একই সাথে কথা আর গ্রেফতারি চলতে পারেনা। সরাসরি কথা বলুন (সিধে সিধে বাত করো)। জমি যদি চাই তো কথা বল, (বার্তা করো), আর নাহলে কাউকে গ্রেফতার করে জমি পাওয়া যাবে না। আমরা ট্যারা কথা জানিনা।যার জমি দরকার সে এসো, জমির মালিক আমরা, কথা বল।
এখানের সবথেকে বড় অফিসার হল কমিশনার, তাঁকে ডাকা হোক। আজ না হলে অন্যদিন কবে আসবেন বলুন। দাম আমরা ঠিক করবো, যদি আপনারা নিতে চান। কিন্তু আমাদের দিল্লি, মুম্বাই দেখাবেন না। জমি নিতে হলে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
এরপর আর কথা এগোয়নি। ওদের ছেড়ে দিয়েছিল। ছাড়ার পর আমরা বলেছিলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত না সকল আধিকারিক রেভেনিউ ডিপার্টমেন্ট থেকে না আসবে আমরা কোন কথা বলতে পারবো না, জমিও দিতে পারবো না।
সেদিন তো আটকে দিয়েছিলাম, কিন্তু পরে আমাদের মাওবাদী বলা হল। কাঠহারি বলে একটা গ্রাম পুলিশ ঘিরে ফেললো, বলল নকশাল এই গ্রামে ঢুকেছে। নির্বিচারে (আন্ধাধুন)গুলি চালানো হয়। গ্রামের লোক তো ভেতরেই ছিল, ওখানে তো বাইরের কেউ ছিল না। ওখানে দ্বিতীয় কোন হাতিয়ার তো ছিল না, তিরধনুক ছিল, যা আমাদের চিরাচরিত হাতিয়ার। প্রতিটি ঘরেই তা পাবেন।
পুলিশ যখন গুলি চালাতে লাগলো তখন গ্রামের মানুষও জবাবী হামলা’ শুরু করেদিল। মানুষও তির চালাতে লাগলো। একথা সত্য। এর ফলে কি হল? এখানে সুন্দরপাহাড়ির যে থানা প্রভারি ছিলেন সবথেকে প্রথম তির তার পায়ে লাগে। সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। গ্রামবাসী কেউ মারা যায়নি, কিন্তু দুইজন পুলিশ মারা যায়।
এরপর তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, বিরাট বড় হাঙ্গামা হয়ে গেছে বলে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে দেয়। হইচই পরে যায়। আপনারা জানেন, এসব ক্ষেত্রে বড় নাটক করা হয়। ‘সুন্দরপাহাড়িতে নকশাল আছে’ এই বলে বদনাম অবশ্যই করা হল, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আজ পর্যন্ত একজনের নামেও কোন এফ আই আর করা হয়নি।
আমরা- এখন কি ১৪৪ ধারা লাগু আছে?
সুভাষ- না।এখন নেই।
আমরা- আদানির মতলব কি ছিল?
সুভাষ- ওখানের যে কোল ব্লক আছে তা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যোগান দেওয়া। আমাদের প্রতিরোধের পরেই ওরা অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানির কথা বলল।
মেরি- কয়লা আনবে অস্ট্রেলিয়া থেকে আর জল আনবে কোথা থেকে?
আমরা- আপনাদের কাছে কি আন্দোলনের কোন পুস্তিকা, কোন বিবৃতি আছে?
সুভাষ- না তা নেই।
আমরা- এই আন্দোলনের গঠনগত বিষয়ে কিছু বলুন। বর্তমানে কি অবস্থায় আছে?
সুভাষ- মূলত যুবক, ছাত্র সহ সাঁওতাল সমাজের সকল শ্রেণি শামিল হয় আন্দোলনে। আমরা আদবাসীদের বিশেষ অধিকার মানে সাংবিধানিক অধিকার, ঝাড়খণ্ডের বিশেষ আইন এসব বিষয়ে আন্দোলনে শামিল ছাত্র যুবাদের কর্মশালা করেছি। পরিবেশগতভাবে কয়লা উত্তোলন কতটা ক্ষতিকারক তাও জেনেছি। রাঁচি থেকে, ঝাড়খণ্ডের অন্য জায়গা থেকে গবেষক, প্রতিবাদী মানুষ এসেছেন।
আমরা- ‘হাসা ও ভাষা বাঁচাও আন্দোলন’ কি এসবের মিলিত ফল।
মেরি- হ্যাঁ ঠিক তাই।
আমরা- ‘হাসা ও ভাষা’-র মানে কি?
মেরি- হাসা মানে জল, আর ভাষা মানে ভাষা, সংস্কৃতি। জল হল জীবন। আদানির বিরুদ্ধে লড়াই হল জীবন আর সাঁওতাল সংস্কৃতি বাঁচানোর আন্দোলন।
আমরা জানি, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা ব্লকের চারটি গ্রাম, মোতিয়া, পাটোয়া, গাঙটা ও নয়াবাদ এবং পরেয়াহাট ব্লকের পাঁচটি গ্রাম, সন্ডিহা, পেটবি, গায়ঘাট, মালি আর রাঙ্গানিয়া নিয়ে মেসার্স আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড ২X৮০০ মেগাওয়াট রপ্তানিকৃত কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে চলেছে। ‘রপ্তানিকৃত কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র’ কথাটি ভারত সরকারের পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি বলছে (বিজ্ঞপ্তি নম্বর- J-13012/01/2016-IA.I(T), তারিখ-৩.৯.২০১৯)। এই বিজ্ঞপ্তি আসলে গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে পরিবেশের ছাড়পত্রের সংশোধিত ভাগ। আদানি এর আগেই ছাড়পত্র হস্তগত করে, ৩১.৮.২০১৭ তে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রক কতটা সহজে গঙ্গা ও চীর নদীর জলও আদানিকে দিয়ে দিতে পারে তা এই বিজ্ঞপ্তি না দেখলে বোঝা যেত না।
(ক্রমশ)
পড়ুন :
[…] https://www.groundxero.in/2022/07/02/godda-to-farrakka-adani-modi-mamata-nexus-a-destructive-project…f) […]