৭ জানুয়ারি শহরের বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র-ছাত্রী সংগঠনগুলি স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে এবং গণপরিবহন স্বাভাবিক রাখার দাবিতে এক প্রতিবাদী মিছিলের আয়োজন করে।
কোভিড ও তার দোসর ওমিক্রনের ধাক্কায় ফের অনিশ্চিত হল পঠন-পাঠন। রাজ্যের মুখ্যসচিব সাংবাদিক বৈঠক করে শপিং মল, সিনেমা হল, পানশালা খোলা রাখবার বার্তা দিলেও, বন্ধ করে দিল স্কুল-কলেজ। কমিয়ে দেওয়া হল লোকাল ট্রেনের সংখ্যা, রাত ১০টা অবধি চলবে লোকাল ট্রেন। বড়দিনে যে সরকার পার্ক স্ট্রিটে উৎসবের আয়োজন করেছিল, সেই সরকার অবলীলাক্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষৎ প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিল। ছাত্র-ছাত্রী আন্দোলনের কর্মী এবং বিপ্লবী ছাত্র ফ্রন্ট-এর মুখপাত্র তথাগত রায়চৌধুরী জানান, “গত দু বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বার বারই দেখছি আক্রমণ নামছে স্কুল, কলেজ এবং লোকাল ট্রেনের উপরে। এবং এই প্রতিটা লকডাউনের পরেই দেখা যাচ্ছে শয়ে শয়ে ছাত্র-ছাত্রী স্কুলছুট হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা অবিলম্বে স্কুল-কলেজ খুলবার এবং গণপরিবহন স্বাভাবিক করার দাবি জানাচ্ছি।”
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র ফেডারেশনের মুখপাত্র শিল্পক জানান, “গত দু’বছরের স্কুল কলেজ বন্ধ থাকা সবচেয়ে বেশী ভুগিয়েছে প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের। একদিকে গ্রাম বা শহরের বস্তির ছাত্ররা পড়াশোনার যাবতীয় সুযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, লকডাউনে পরিবারের কাজ চলে যাওয়ার অভিঘাতে বেছে নিচ্ছে অন্য রাজ্যে সস্তায় মজুর খাটতে যাওয়ার সর্পিল পথ। অন্যদিকে, লকডাউনের খাড়া স্কুল কলেজের প্রান্তিক ছাত্রীদের ওপর এসে পড়ছে অল্প বয়সেই কার্যত তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে। অর্থনৈতিক, সামাজিক প্রভাব তো বটেই, একটানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং তার সাথে সংযুক্ত সমস্ত ধরণের যৌথতার বাতাবরণ থেকে বিযুক্ত শিক্ষার্থীসমাজের একটা বড় অংশের মানসিক স্বাস্থ্যের হাল তথৈবচ; বহুক্ষেত্রেই যা জন্ম দিচ্ছে মানসিক রোগের…”
গত বছর ছাত্র-ছাত্রীরা ‘আনলক ক্যাম্পাস’ শ্লোগান তুলে আন্দোলনে নামলে, তাঁদের বিরুদ্ধে ডিএম অ্যাক্টে মামলা করা হয়। এ বারের মিছিল থেকে আনলক ক্যাম্পাস আন্দোলনের কর্মীদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হয়।