গ্রাউন্ডজিরোর প্রতিবেদন
বাংলা ও বিহারের গণ অভিবাসনের ‘ঐতিহাসিক ও চলমান অভিজ্ঞতা’ বিনিময় করলেন দুই প্রতিবেশী রাজ্যের বিশিষ্ট সমাজবিদ্যা-গবেষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, আইনজীবী ও নাগরিক আন্দোলনের কর্মীরা। ২৯-৩০ অক্টোবর কলকাতায় ‘বাংলা-বিহার সংলাপ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করেছিল মহানির্বাণ ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ (সিআরজি)।
আলোচনায় বিশিষ্টদের মতামতে এ কথা উঠে আসে যে, দুই রাজ্যের অভিবাসীরাই স্থানীয় সমাজে পুরোপুরি মিশে যেতে পারেননি ফলে তাঁরা সুনিশ্চিত ভাবেই প্রান্তিক ও নিরাপত্তাহীন। ক্রমবর্ধমান মেরুকরণের রাজনীতি ও সামাজিক প্রতিক্রিয়াশীলতার এই সময়ে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নও উঠে আসে যে, আজকের শহরগুলিতে কি তবে অভিবাসীরা শুধুমাত্র ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অস্থায়ী শ্রমিক হিসাবেই স্বাগত? আলোচকরা মনে করেন, কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতায় এই প্রশ্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আলোনায় অংশগ্রহণকারীরা সকলেই একমত যে, আন্তঃরাজ্য অভিবাসন সম্পর্কে ‘যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ও পরিসংখ্যান’ অপ্রতুল। ফলে অভিবাসীদের সমস্যাগুলি বোঝার ক্ষেত্রে জটিলতা বেড়েছে। তাঁরা মনে করেন, অভিবাসীদের “দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা বুঝতে এবং তাঁদের জন্য প্রকৃত সুরক্ষানীতির প্রয়োজনে গবেষক ও সরকারি সংস্থাগুলিকে তথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও প্রকাশে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগী নিতে হবে।“
বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রসঙ্গও দু’দিনের সভায় উঠে আসে। আলোচকরা একমত হন যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিবাসনের অন্যতম কারণ। তাঁরা মনে করেন, “বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশের তোয়াক্কা না করে সংগঠিত উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ আজকে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের অনেক দুর্যোগ-প্রবণ এলাকার বিপন্নতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।“ এই সমস্ত ক্ষেত্র গণমাধ্যমের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিশিষ্ট আলোচকরা বলেন,“ভ্রান্ত তথ্যের গোলকধাঁধা থেকে বেরিয়ে, মুক্তচিন্তার পরিবেশের সম্প্রসারণ করে এক নতুন নাগরিক সমাজ তৈরিতে গণমাধ্যমের মতন প্রতিষ্ঠানগুলিকে উদ্যোগী হতে হবে।“
উদ্যোক্তারা জানান, ‘এই অন্ধকার সময়ে’ পূর্ব ভারতের অঞ্চলগুলির মধ্যে এই ধরণের সংলাপ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।