শুক্রবার ৭ অগস্টের আগে সরকারের তরফে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি আন্দোলনরত নার্সদের সঙ্গে। শুক্রবার আন্দোলন মঞ্চের কথা ছিল এক বড় র্যালি বের করার। তার আগেই সরকারের তরফ থেকে ডাক আসে আলোচনায় বসার। মিছিল স্থগিত রাখা হয়। নার্সেস ইউনিটির নেতৃত্বর সঙ্গে আলোচনায় বসেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এই দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় শেষ পর্যন্ত সরকার তাঁদের দাবি মেনে নিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন ডিপ্লোমা/ডিগ্রিপ্রাপ্ত নার্সরা যাতে ১২ নং স্কেলে বেতন পান তার প্রক্রিয়া আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে, চতুর্থ মাস থেকে নতুন পে-স্কেল চালু হয়ে যাবে। সুদর্শনা চক্রবর্তীর রিপোর্ট।
টানা ১২ দিন অবস্থান বিক্ষোভের পরে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি নার্সদের বেতন বৈষম্য দূর করার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। গত ২৬ জুলাই থেকে দিনরাতের এই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। নেতৃত্বে ছিল পশ্চিমবঙ্গের নার্সদের সংগঠন নার্সেস ইউনিটি। মূল দাবি ছিল ডিপ্লোমা/ডিগ্রি প্রাপ্ত নার্সদের ন্যায্য পে-স্কেল দেওয়া। এখন তাঁরা যে ৯ নং স্কেল পাচ্ছেন তা পরিবর্তিন করে — অন্যান্য সমমানের সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে – ১২ নং স্কেল দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের কাছে তারা দাবি করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হচ্ছিল না। তার মধ্যেই কোভিড মহামারিকালীন সময়ে নার্সরা কোভিড যোদ্ধা হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত এই অবস্থানের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন তাঁরা, যদিও বিভিন্ন শিফটে ডিউটি করে এসে, রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা সামান্যতম বিঘ্নিত না করেই ১২দিন ধরে চলেছে এই অবস্থান আন্দোলন।
শুক্রবার ৭ অগস্টের আগে সরকারের তরফে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি আন্দোলনরত নার্সদের সঙ্গে। শুক্রবার আন্দোলন মঞ্চের কথা ছিল এক বড় র্যালি বের করার। তার আগেই সরকারের তরফ থেকে ডাক আসে আলোচনায় বসার। মিছিল স্থগিত রাখা হয়। নার্সেস ইউনিটির নেতৃত্বর সঙ্গে আলোচনায় বসেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। নার্সেস ইউনিটি প্রথম থেকেই বলে এসেছে তাঁরা শান্তিপূর্ণ আলোচনার মধ্যে দিয়েই সমস্যার সমাধান চান, যাতে সরকার মানবিকভাবে তাঁদের দাবি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। এই দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় শেষ পর্যন্ত সরকার তাঁদের দাবি মেনে নিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন ডিপ্লোমা/ডিগ্রিপ্রাপ্ত নার্সরা যাতে ১২নং স্কেলে বেতন পান তার প্রক্রিয়া আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে, চতুর্থ মাস থেকে নতুন পে-স্কেল চালু হয়ে যাবে। মন্ত্রীদের তরফে আশ্বাস পেয়ে ১২ দিনের দিন-রাতের অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনরত নার্সরা। এর সঙ্গে বাকি যে বিভিন্ন দাবি ছিল সেগুলি নিয়েও ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলবে বলে জানা গেছে।
নার্সেস ইউনিটির সেক্রেটারি ভাস্বতী ব্যানার্জি জানালেন, “আমরা মনে করছি আমাদের আন্দোলনের শক্তিই জয় নিয়ে এল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হওয়ার জন্য। আমাদের দাবি সম্পূর্ণ ন্যায্য, সুতরাং লড়াই থেকে সরে আসার প্রশ্ন ছিল না। সরকার সাড়া দেওয়ায় ভালো লাগছে। আমরা ১২ দিনের অবস্থান, টেনশন এগুলো ভুলে সামনের দিকে তাকাতে চাই। আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় নিশ্চয়ই আমরা খুশি। কিন্তু পরিস্থিতির উপর আমাদের নজর থাকবে। চার মাস কেন, আমরা পাঁচ মাস সময় ধরে নিচ্ছি, তার মধ্যে সরকারের আশ্বাস বাস্তবে কার্যকর না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।”