ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন একতা (উগ্রাহা)-এর নেতা যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহার একটি সাক্ষাতকার


  • March 7, 2021
  • (0 Comments)
  • 1055 Views

সংযুক্ত কিষান মোর্চার সংঘটক ইউনিয়নগুলির অন্যতম বিশিষ্ট সংগঠনগুলির মধ্যে একটা আলাদা ধরনের সংগঠন হল ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন একতা (উগ্রাহা) এর নেতা হলেন যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহা। অনেক সময় উনি বিতর্কের কারণ হয়েছেনসংবাদের শিরোনামেও উঠে এসেছেন। তবু ওঁর সংগঠনের অস্তিত্ব বাকিদের থেকে আলাদা থাকা সত্ত্বেও দিল্লির সীমান্তে থাকা টিকরি বর্ডারে দৃঢ়তার সঙ্গে অবস্থান করছেন। এখানে বেশ কিছু কিলোমিটার জুড়ে ওঁর ইউনিয়নের সাথে যুক্ত কৃষকরা এখানে আছেন। টিকরি বর্ডার আর সিংঘু বর্ডারে যে মোর্চা বসে আছে, তাদের সাথে যেসব মিটিং হয় তাতে সামিলও থেকেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সাথে যে মিটিং হয় যেমন অমিত শাহদের সাথে, তাতেও সামিল থেকেছেন। তবুও উনি কিষান মোর্চার থেকে পৃথক অস্তিত্ব বজায় রেখে চলেছেন।

                            

পাঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস যদি দেখা হয়, তাহলে বিগত কুড়ি বছর ধরে যত কৃষক আন্দোলন হয়েছে তার অক্ষে অনেক সময়ই যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহা থেকেছেন। যখন এই কৃষক আন্দোলনের সূচনা হয়, যখন পাঞ্জাবের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের নেতা অমরিন্দ্র সিং-এর ঘরের বাইরে ধর্না হয়, পাঞ্জাবের আকালি দলের নেতা ও পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী  প্রকাশ সিং বাদলের ঘরের বাইরে ধর্না হয় যখন দিল্লি চলো অভিযান শুরু হয়, রেল রোকো আন্দোলন হয়, সমস্ত আন্দোলনের কেন্দ্র তারা থেকেছেন কিন্তু এই কিষান আন্দোলনের যে যৌথ মোর্চা তৈরি হয়েছে তার থেকে বাইরে থাকছেন।

 

আবার এই পরিচয়ও মাথায় রাখতে হবে যে উনি কিছু বছরের জন্য সেনাবাহিনীতেও কাজ করেছেন। এখন উনি একজন কৃষক আর একজন কৃষক নেতা তো বটেই। যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহার যে সাক্ষাতকার সাংবাদিক অজিত অঞ্জুম ফেব্রুয়ারি ২০২১-এর মাঝামাঝি সময়ে নিয়েছিলেন সেটা এখানে অনুবাদ করা হল।

 

 

সাংবাদিক: ১২ বার সরকারের সাথে বৈঠক হয়ে গেল, এক সময় প্রধানমন্ত্রী বললেন যে কৃষিমন্ত্রী একটা ফোন কল করার মতো ব্যবধানের মধ্যেই আছেন। তবু কিছু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। সবাই জানতে চাইছেন যে কখন সমস্যার সমাধান হবে। সবাই জানতে চাইছেন যে এরপর আন্দোলন কোন দিকে এগোবে? আপনি কি বলবেন?

 

উগ্রাহা: দেখুন ভাই, এই আন্দোলন যখন শুরু হয়, আমার এটা জানাই ছিল যে এই আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদী হবে। সমস্ত সংগঠনের নিজের নিজের মতো করে একটা আন্দাজ থাকে, নিজেদের মতো করে একটা সমীক্ষা থাকে। আমাদের সমীক্ষা ছিল যে এটা হল নীতি পরিবর্তনের আন্দোলন। ধাপে ধাপে এর জয় আসতে পারে। প্রথম পর্যায় আমরা পাঞ্জাবে শুরু করেছিলাম। পাঞ্জাবের পর্যায়ে আমরা জয় অর্জন করছি। দ্বিতীয় পর্যায় এল দিল্লিতে, যেখানে আমাদের দায়িত্ব ছিল একে এক সামাজিক আন্দোলনে রূপান্তরিত করা। দিল্লিতে আসার পর আমরা একে সামাজিক আন্দোলন থেকে আন্তর্সামাজিক আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছি। যে সব রাজ্যের মানুষ সম্পূর্ণ চুপচাপ বসেছিল, তারা সবাই এখন এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। এখন এই আন্দোলন আর কেবল পাঞ্জাবের আন্দোলন নেই। এখন এই আন্দোলন সারা ভারতের আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সারা দুনিয়ায় এই আন্দোলনের সমর্থনে প্রচার হচ্ছে।

 

এখন আমরা আন্দোলনের রূপরেখায় পরিবর্তন এনেছি। নিঃসন্দেহে আমরা আহ্বান করেছি যেন ১৪ তারিখে পুলওয়ামার শহিদ জওয়ানদের স্মরণে গ্রামে গ্রামে মশাল মিছিল হয়, শহরে মোমবাতি মিছিল হয়। ১৮ তারিখে সারা দেশে ৪ ঘণ্টার রেল রোকো আন্দোলন হয়। আর আমরা এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সারা ভারতে সমস্ত রাজ্যগুলিতে যেখানে যেখানে সম্ভব হবে বড় বড় পঞ্চায়েত হোক। সেখানে যেন এটা জানানো সম্ভব হয় যে এই আন্দোলন কোন পর্যায়ে আছে, সংগঠনগুলি কী অবস্থান নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন ইত্যাদি। যেসব মানুষ এই আন্দোলন সম্পর্কে জানেন না, তাদেরকে অবগত করাতে হবে যে এই আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদি হবে। এই আন্দোলনকে দীর্ঘমেয়াদি করানোর জন্য আরও আন্দোলন করা দরকার। তাতে সাহায্য করার জন্য আমরা সম্পূর্ণ ভারতে এই আন্দোলন শুরু করেছি।

 

সাংবাদিক: আপনি বলছেন আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদী হবে। আন্দোলন ৮১ দিন (সাক্ষাতকার নেবার সময় পর্যন্ত) ধরে চলছে। আন্দোলন যেমন চলছে তাতে এটা বুঝতে পারা মুশকিল যে সরকার কখন নত হবে। সরকারের এখনকার মনোভাব হল কৃষকরা যতদিন খুশি বসে থাকুক। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আপনি কি কোনো রাস্তা দেখতে পাচ্ছেন যা থেকে মনে হয় যে যেসব দাবিগুলি নিয়ে আপনারা বসে আছেন সেই দাবিগুলি মেনে নেওয়া হতে পারে?

 

উগ্রাহা: দেখুন আমরা যখন মঞ্চ গঠন করে বসছি, তখন আমাদের এই টিকরি বর্ডারের মঞ্চের পাশাপাশি সিংঘু বর্ডার, গাজীপুর বর্ডার, পলওয়ল, শাহজাপুর মিলিয়ে দিল্লির রাস্তায় পাঁচটি জায়গায় ব্যারিকেড হয়েছে। পাঁচটা ব্যারিকেড দিল্লির আশেপাশের রাস্তায় গঠন করার ফলে আমাদের আন্দোলন ভারত জুড়ে বিকশিত হচ্ছে। আর বিজেপির নামক যে রাজনৈতিক পার্টি আছে, তাদের কত রাজনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে, আমরা কত সমর্থন পাচ্ছি, এই বিষয়গুলির সমীক্ষা করতে হবে। আন্দোলনের প্রতি সমর্থন বাড়ছে, নাকি কম হচ্ছে? এই ব্যাপারটার সমীক্ষা করা দরকার।

 

সাংবাদিক: সমর্থন হয়তো বাড়ছে। আমিও বার বার টিকরি বর্ডার এসেছি, সিংঘু বর্ডারে প্রায় কুড়ি বার গিয়েছি। গাজীপুর বর্ডারেও প্রায় কুড়ি বার গিয়েছি। কখনো সমর্থন বাড়ে, কখনো কমে। এই ব্যাপারে আমি পরে কথা বলব, তবে আমি কেবল এটা জানতে চাইছি যে প্রধানমন্ত্রী যখন ২৬ জানুয়ারির পর বলেছিলেন যে আমরা একটা ফোন কলের সমান দূরত্বে আছি। তখন এর সাথে এটাও বলা হয়েছিল যে, যে তাদের প্রস্তাব আপনারা বাতিল করেছেন। উনি সংসদেও বলেছেন যে “আমরা আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত আছি।”

সেই কথা বলার পর বেশ কিছু দিন পেরিয়ে গেছে কিন্তু সেই ফোন কল আপনাদের দিক থেকে কেউ করবে কি করবে না? কেননা, আপনি হয়তো বলবেন যে – আমরা কল না করলে, সরকারও তো কল করছে না। তাহলে এই মাঝখানের দরজার কড়া ধরে কে নাড়া দেবে?

 

উগ্রাহা: এটা ঠিক যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে কেবল একটা ফোন করার মতো দূরত্বই তো বাকি আছে। কিন্তু কল করবে কে? আমরা যদি কল করি তাহলে তার মানে হচ্ছে যে তারা যা বলেছেন সেটা আমরা মেনে নিচ্ছি; ওনার কল করার অর্থ হল, কৃষকরা যে প্রস্তাব রেখেছিলেন সেটা তাঁরা (কেন্দ্রীয় সরকার) মেনে নিয়ে সংশোধন করে নিচ্ছেন। সরকার সংশোধন করতে চাইছে নাকি চাইছে না? এটাই হল প্রশ্ন। এই কারণেই ওদিক থেকে ফোন আসছে না, আর সেই কারণেই এখান থেকেও কোনও ফোন যাচ্ছে না। আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় আছি, সরকার নিজের অবস্থানে অনড় আছে। সরকার আইন বাতিল করার জন্য প্রস্তুত নেই। আমরা কেবল সংশোধন মেনে নিতে প্রস্তুত নেই। আমাদের মধ্যে যে ডেডলক হয়েছে, তেমন আগেও হয়েছিল। ২৫ দিন ধরে আন্দোলনে ডেডলক হয়েছিল। এখনও ডেডলক হতে পারে। যখন ডেডলক ভাঙবে, তখন সরকারকে এই ব্যাপারে (ভাবতে হবে)। আমরা যে এখানে বসে আছি, এই নিয়ে সরকারের যে কোনো চিন্তা নেই এমনটা সত্যি না। প্রধানমন্ত্রী বলতেই পারেন যে বসে থাকতে দাও যতদিন খুশি বসে থাক, কিন্তু এখানে বসে থাকার ফলে সারা দুনিয়াতেও তো আলোচনা হচ্ছে। উনি আমাদের কথা শুনবেন না? এটা গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে মানুষের কথা শুনবেন না? কৃষকের কথা শুনবেন না? দেখা যাক, প্রধানমন্ত্রী কত দিন কথা না শোনেন। আমাদের যত দিন বসে থাকবার ক্ষমতা আছে, বসে থাকব। তারপর, ভাবব পরিস্থিতি অনুসারে।

 

সাংবাদিক: বেশ, আপনি বললেন যে ডেডলক। ডেডলক আর ডেড এন্ড দুটো ব্যাপার আছে। ডেডলকের পর তো দরজা খুলে যায়। কখনো কখনো ডেড এন্ডও হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতি কি হয়েছে যে ডেড এন্ড হয়ে যাবে? কেননা, আপনিও নত হতে চাইছেন না, উনিও নত হতে চাইছেন না। আপনি বলছেন আইন ফিরিয়ে না নিলে ঘরে ফিরে যাবেন না। উনি বলছেন যে এই সংশোধন করে দিচ্ছি, আর আইনটি দেড় বছরের জন্য স্থগিত থাকা মেনে নাও, তাহলে দুই দিক থেকে এটা কোনো ইগোর লড়াই হয়ে যাচ্ছে না তো?

 

উগ্রাহা: দেখুন, আমরা হলাম ফরিয়াদি (অভিযোগকারী), ফরিয়াদিদের কাছেই বিনয় থাকে, ইগো তো ক্ষমতাশালীদের কাছে থাকে। একে আপনি বলছেন যে আমরা আইন বাতিল করার কথার উপরে জেদ ধরে আছি। এটা তো আমাদের দাবি। কেবল দাবিই না, আমাদের নথিপত্র আছে। আপনি যে আইন তৈরি করেছেন, সেটা তো প্রয়োগই হয়নি। প্রয়োগ করার আগেই আপনাকে সংশোধন করতে হল। তাকে স্থগিত করতে হল। সুতরাং এর এটাই অর্থ যে এই আইন কোনো কাজেই আসবে না। একে বাতিল করো, স্থগিত রাখো আর আবর্জনার বাক্সে ফেলে দাও। নতুন করে মানুষের সাথে আলোচনা করো, মানুষকে রাজি করাও আর নতুন করে আইন তৈরি করো। তাই, আমাদের ইগো কোথায় রইল? ওরা হল রাজা, আমাদের কথা শুনলেও ভালো না শুনলে বসে আছি, যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ব, সরে যাব, তখন চলে যাব।

 

সাংবাদিক: তাহলে কবে ক্লান্ত হবেন আর কত দিন ক্লান্ত হবেন না?

 

উগ্রাহা: ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেখব। দেখা যাক ক্লান্ত হই নাকি সরে যেতে হয়। ভাই, আমরা হলাম আন্দোলনকারী। আন্দোলনকারীদেরকে তো জানেন অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। মানুষ আমাদের কতদিন পর্যন্ত সমর্থন করেন, কত দিন ধরে আমাদের কাছে মানুষ আসছেন দেখা যাক। এটা ঠিক যে, এখান থেকে আন্দোলনের দিশা পরিবর্তন করা যেতে পারে। এখান থেকে পরিবর্তন করার রাস্তা কী হবে? সঙ্গে কারা থাকবেন? এমন কোন্‌ সহযোগী আছেন যারা আন্দোলনের দিশা পরিবর্তন করে দেবেন? এই প্রশ্ন এসে উপস্থিত হয়েছে। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলছে আমরা বসে থাকছি।

 

সাংবাদিক: একটা প্রশ্ন আছে যেটা মনে ঘুরছে, আন্দোলন যখন চলতে থাকে, তখন উভয় পক্ষকে কিছুটা করে নত হতে হয়। আর একটা বোঝাপড়ায় এসে উপস্থিত হতে হয়। তারপর আন্দোলনকে বন্ধ করে দিতে হয়। সেখান থেকে ডেডলক ভাঙবার জন্য কোনো একটা রাস্তা তো বের করতেই হবে। তাই না? যেমন – কিছু নেতা এমন বলছেন যে যদি সরকার এমএসপির কথা মেনে নেয়, আর আইনে যদি কিছুটা সংশোধন হয়ে যায়, তাহলে, আমরা রাজি হয়ে যাব। এই ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

 

উগ্রাহা: যারা এই কথা বলছেন, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন যে ভাই, মানুষকে আপনি উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? যারা বলছেন যে এমএসপি-র কথা শুনুন আর বাকি আইনের মধ্যে কিছু সংশোধন করে আমরা আন্দোলনটা শেষ করে দেব, তাদের জন্য বলি, আপনিও জানেন যে মানুষগুলো গ্রাম থেকে উঠে এখানে চলে এসেছেন, আপনার তো অনেক সোর্স আছে, আপনি প্রত্যেকটা ট্রলির কাছে গিয়ে জানতে চান যে এমএসপিকে যদি আইনি মান্যতা দিয়ে দেওয়া হয়, – অবশ্য, সেটা খুবই বড়ো কথা, সরকার সেটা করতে পারবে কিনা সন্দেহ – তাহলে তারা কি সে কথা মেনে নেবেন? যদিও আমরা জানি যে এটা কত বড়ো ব্যাপার। এটা এই আইনগুলি বাতিল করার চেয়েও বড়ো লড়াই।

 

সাংবাদিক: ১৭ লক্ষ কোটি টাকার ব্যাপার …

 

উগ্রাহা: লক্ষ কোটির কথা ছাড়ুন। এটা কেবল টাকা পয়সার ব্যাপার না। টাকা  পয়সার ব্যবস্থা তো হয়ে যেতে পারে। এটা অনেক বড়ো ব্যাপার। এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া সংক্রান্ত ব্যাপার। এটা অনেক বড় নীতিগত ব্যাপার। এমএসপি যদি সারা ভারতের সমস্ত ফসলের উপরে প্রযোজ্য হয়, তাহলে সেটা এই আইনগুলির চেয়ে অনেক বড় ব্যাপার। আমাদের এটা জানাই ছিল। আমরা এই দাবি করার আগে থেকেই জানতাম যে এটা কত বড় লড়াই। কত দিন পরে এই সাফল্য পাওয়া যাবে। যারা বলে যে আমাদের জন্য এটা করে দাও, সেটা করে দাও, আমরা চলে যাব, তাদের এই বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। মানুষ চলে যাবেন না। এটা আর কেবল কৃষকদের আন্দোলন নেই। এটা গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এটা সাধারণ মানুষের আন্দোলন হয়ে উঠেছে। সমাজের এমন কোনো ধারা বাকি থাকবে না যারা এই আন্দোলনের মধ্যে সামিল হননি। এ কারণেই সরকারকে মানুষের এই মনোভাব বুঝে নিয়ে কাজ করতে হবে। এটা কি আর ডিজেলের রেট ঠিক করার মতো সামান্য আন্দোলন? পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে সেখান থেকে তিরিশ টাকা কমিয়ে দিয়ে কুড়ি টাকা রেখে দেবেন! এটা সেই ধরনের বোঝাপড়া করার মতো বিষয় না। এটা কি আর কোনো পঞ্চায়েতের বোঝাপড়া করার মতো ব্যাপার, যে আপনি একটু পেছনে সরে যান আমিও একটু পেছনে সরে আসছি? এটা সেরকম কিছু না।

 

সাংবাদিক: আচ্ছা, এটা বলুন যে এমএসপি নিয়ে যে ভি এম সিং বলেছিলেন, গুরনাম চডুনিও দুই তিন দিন ধরে এই অবস্থান নিচ্ছেন যে এমএসপি দেওয়া হোক। কিছু কৃষক নেতা মনে করছেন, সরকার যদি এমএসপির কথা মেনে নেয় (তবে সরকার সেটা মেনে নেবেন কিনা আলাদা ব্যাপার), যদি আইনি বৈধতা দেওয়া হয়, তাহলে কি এই তিনটি আইন নিজে থেকেই দুর্বল হয়ে যায় না? তাহলে সরকারের যে উদ্দেশ্য রয়েছে সেটা তো ব্যর্থ হবে।

 

উগ্রাহা: না। এমএসপির আইন মেনে নিলে এই তিনটে আইন ব্যর্থ হতে পারে না। জরুরি পণ্য আইন কীভাবে ব্যর্থ হবে বলুন। চুক্তি চাষের আইন কীভাবে ব্যর্থ হবে? চুক্তি চাষ নিয়ে তো আলোচনা করা হয়নি। তাই না? ঠিক আছে, মেনে নিচ্ছি যে সেটা খুবই বড় ব্যাপার হবে। মার্কেটের জন্য বড় ঘটনা, কিনবার জন্য বড় ঘটনা। প্রাইভেটকেও সংযুক্ত করতে হবে। কিন্তু এমএসপিকে আইনি কর্তৃত্ব দেবার পর এই তিনটি আইনের যে কোনো অর্থ থাকে না, সেটা ঠিক না।

 

সাংবাদিক: আইনের বিপদ কিছুটা কমে যাবে। যে প্রাইভেট মান্ডি বনাম এপিএমসি যেটা ছিল তার বিপদ কমে যাবে।

 

উগ্রাহা: ঠিক আছে, আমি আপনার সাথে একমত হচ্ছি। বিপদ কিছুটা কমে যাবে। কিছু না কিছু পার্থক্য হবে। কিন্তু ততটা না। কর্পোরেট সেক্টরের জন্য যে রাস্তা খুলে রাখা আছে সেই রাস্তা দিয়ে ওরা আসছে। খাদ্য দ্রব্যের উপরে ওদের নিয়ন্ত্রণ হাসিল করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার ভাগিতে এক বিশাল সম্মেলন হয়েছিল। সেখানে ভারতকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বলেছিল যে ২০১৭-র মধ্যে আপনারা সরকারি উদ্যোগে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় বন্ধ করুন। এফসিআইকে ফেল করিয়ে দিন। এখন তো ২০২০-২২এসে গেল। এই কারণে এটা ওদের বাধ্যবাধকতা আছে। এদের পেছনে বিশাল শক্তির প্রশ্রয় আছে। সেই নীতির দিশা ঘুরিয়ে দিতে হবে। আমাদের জানা আছে, যে এই লড়াই মোদীর বিরুদ্ধে না। এ হল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াই। এ আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর বিরুদ্ধে লড়াই। এ বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে লড়াই। এ সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। বিশাল লড়াই। তার জন্যই তো বলছি বড় লড়াই দীর্ঘদিন ধরে চলে।

 

সাংবাদিক: তাহলে আপনি বলতে চাইছেন আপনার যে সংগঠন – ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন একতা উগ্রাহা, আপনি যার অধ্যক্ষ, এই তিনটি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন শেষ করবেন না। আর তার সাথে এটা মেনেও নিচ্ছেন যে এমএসপিকে আইনি কাঠামো পরাতে হবে।

 

উগ্রাহা: এটার তো আইনি বৈধতা দিলে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ওরা যদি তিনটি আইন বাতিল করার কথা মেনে নেয়, তাহলে এটার ব্যাপারে আমরা ভেবে দেখতে পারি।

 

সাংবাদিক: তার মানে আপনি বলছেন যে যদি তিনটি আইন বাতিল করার কথা যদি মেনে নেওয়া হয় তাহলে এমএসপি নিয়ে আপনারা জোর দেবেন না।

 

উগ্রাহা: জোর দেব। কেন দেব না? যতটা জোর দেওয়া সম্ভব ততটাই জোর দেব। যতটা দিলে আমাদের মনে সন্তুষ্টি হবে ততটা নিয়েই ছাড়ব।

 

সাংবাদিক: তাহলে আপনার অগ্রাধিকার হল তিনটি আইন বাতিল করা।

 

উগ্রাহা: এটা আইন বাতিল করানোর আন্দোলন। এটা বাতিল করতেই হবে। তাই আমরা তো এই নিয়ে আন্দোলন করবই। এই যে বললেন বাতিল করার কথা কেবল আমাদের সংগঠন বলছে, সেটা ঠিক না। এটা সংযুক্ত মোর্চারও অবস্থান। সংযুক্ত মোর্চার প্রত্যেক মিটিং-এ আমি যাই। যে সিদ্ধান্ত হয় আমরা সেটা পালন করি। আমরা দিল্লির এই আন্দোলনের জন্য এটা ঠিক করেছি, হিন্দুস্থানের যেকোনো সংগঠন যারাই এই আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, আমরা তাদের সাথে একতা দেখাতে চেষ্টা করব। সংগঠনগত ভাবে আমরা তো সবাই আলাদাই আছি।

 

সাংবাদিক: আচ্ছা, আলাদা আলাদা কেন আছেন? বেশ, এই বিষয়েও জিজ্ঞেস করেই নিই – লড়াই এক, উদ্দেশ্য এক, দাবি এক, মোদী সরকারের কাছে দাবি করছেন, মিটিংও এক, সেই একই কৃষিমন্ত্রীর সাথে আপনিও দেখা করছেন, অমিত শাহ-এর সাথে দেখা করছেন, তাহলে এই সংগঠনগুলি আলাদা আলাদা কেন? মঞ্চ আলাদা কেন? সংযুক্ত মোর্চা আলাদা, যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহা আলাদা।

 

উগ্রাহা: দেখো ভাই, আপনি দেখছেন যে আমরা আলাদা, আমাদের স্টেজ আলাদা – সেটা ঠিক। তবে অন্যেরা আমাদের মঞ্চের থেকে বলেন, আমরাও অন্যের মঞ্চ থেকে বলি। গাজীপুরেও গেছি, শাহজাহাপুরেও গেছি, সব জায়গায় আমরা বক্তব্য রেখে আসি। ওরাও এখানে বক্তব্য রাখেন। টিকরি বর্ডারের এত বড় বর্ডারের এলাকা ২২ কিলোমিটার লম্বা। একটা মঞ্চ দিয়ে কি সম্ভব? আমাদের তো দুটো স্টেজ রয়েছে। ওদিকে একটা স্টেজ রয়েছে, আমরা এদিকে রয়েছি। এদিকে হরিয়ানার লোকেরা দাবি করছেন যে আমাদের এদিকে আরেকটা স্টেজ দরকার। তিনটে স্টেজ দিয়েও পুরো এলাকাটা কভার করা যাচ্ছে না। এটা তো আমাদের বাধ্য বাধকতা। দ্বিতীয় কথা হল স্টেজের কোনো কাঠামো থাকা। এটা আলাদা কথা যে আমাদের স্টেজ ওদের থেকে আলাদা। কারণ স্টেজের কাছে আমরা তাদেরও ডেকে আনি, যাদেরকে আমরা স্টেজের উপরে উঠতে দিই না। কারণ স্টেজের একটা ঐতিহ্য আছে। কারণ স্টেজের উপরে সেই ধরনের ব্যক্তিকেই বলতে দেওয়া উচিত যারা তার উপযুক্ত, যারা এই উদ্দেশ্যের প্রতি সমর্থন দিচ্ছেন। ঐ স্টেজকে কেউ সাম্প্রদায়িক রঙ দেবে সেটা আমরা সহ্য করব না।

 

সাংবাদিক: কীভাবে? একটু বলুন।

 

উগ্রাহা: যেমন খালিস্তানের ইস্যু। আগামী দিনে হয়তো বা অন্য কোন ইস্যু নিয়ে আসতে পারে। যেমন মদদগারদের ইস্যু, নাগপুরের মদ্যের ইস্যু, জলের ইস্যু।

 

সাংবাদিক: খালিস্তানের ইস্যু নিয়ে আপনি কী বললেন?

 

উগ্রাহা: কোনো ব্যক্তি এমনও বলতে পারেন যে খালিস্তানের দাবি করো তাহলে সমস্যার সমাধান হবে। কেউ কোনো একটা সম্প্রদায়ের কথা বলতে পারে। এমন বলতে পারে যে এটা শিখদের আন্দোলন। এই সম্প্রদায়কে কেউ সংগত দিতে চাইতে পারে। কিন্তু এর অনুমতি আমরা কেউ দেব না। এটা শিখদের আন্দোলন নয়। এ কোনো জাতের আন্দোলন না, ধর্মের আন্দোলন না। এ হল কৃষকদের আন্দোলন। এই কারণে আমরা কিছু বিষয়কে নিষেধ করেছি। কিন্তু যেসব ব্যাপারে সবার অংশগ্রহণ দরকার, সেগুলির মধ্যে কোনোটার থেকে আমরা দূরে থাকি না।

 

সাংবাদিক: আপনি কিছু কথা সংযুক্ত মোর্চার মঞ্চের ব্যাপারে বলেছেন, স্টেজের কথা বলেছেন। কিছু আপত্তির কথা বলেছেন। এই একই কথা ওদের দিক থেকেও বলা হয়েছে যে আপনার মঞ্চে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা মানবাধিকার নিয়ে আন্দোলন করেন; বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিজীবীরা আছেন, বামপন্থীরা আছেন। আর আজকের দিনে যাদেরকে আরবান নকশাল বলা হয়, তাদের গ্রেফতার হবার বিরোধ করে আর তাদের মুক্তির দাবিতে পোস্টার নিয়ে আপনার কৃষকরা বসেছিলেন। এই নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠেছে যে এটা তো কৃষক আন্দোলনের দাবি না। এই আন্দোলনের দাবি হল – কৃষি আইনগুলি বাতিল হোক, এমএসপির গ্যারান্টি হোক। তাহলে ঐ পোস্টার কেন এল? এই নিয়ে সম্ভবত সেই দিনই সংযুক্ত মোর্চা বলেছে যে আমাদের যোগীন্দ্র সিং-এর ঐ মঞ্চের সাথে আর ঐ দাবির সাথে সম্পর্ক নেই। আর এই কথা প্রধানমন্ত্রীও এখন সংসদে বলে দিয়েছেন যে দেখুন কৃষক নেতারা এই দাবি করছেন।

 

উগ্রাহা: আমরা তিনটি কৃষি আইনের বিরোধ করার জন্য তো লড়াই করছি। তাই না? আপনি কীভাবে বলছেন যে আমরা নকশালপন্থীদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে বলছি? আপনার এই রকম প্রশ্ন করা উচিত না। আপনার প্রশ্ন করা উচিত যে মানবাধিকার নিয়ে আমরা কী করেছি? আমরা যেকোনো আন্দোলনে – কেবল এই আন্দোলনের জন্য না – যেকোনো চলমান আন্দোলনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিবস এসে গেলে, সেই বিশেষ দিবসের ব্যাপারে আমরা কথা বলি যে সরকার এই দিনের ঘটনায় কী করেছে। মানবাধিকার দিবসে সেই সব ব্যক্তিদের বিষয়ে, বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপারে, যাদেরকে আমরা কলমকার (লেখক) বলি, যাদেরকে আমরা মিডিয়াওয়ালা বলি, যাদেরকে আমরা পথ প্রদর্শনকারী বলে থাকি, তাদেরকে মুক্ত করার কথা বলেছিলাম। নকশালবাড়ির দাবি আমরা করিনি। আমরা কোনো আতঙ্কবাদীর কথা বলিনি। আমাদের খবরের কাগজের প্রেস নোট পড়ে নিন। আমরা বলেছি যে “বুদ্ধিজীবীদের নির্দোষ ভাবে মুক্ত করে দেওয়া হোক।”

 

সাংবাদিক: ১০ তারিখ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ছিল। আমি নকশালপন্থী বলিনি। আমি বলেছি আজকের দিনে সরকার এদেরকে আরবান নকশাল ইত্যাদি বলে। আজকের দিনে যারাই সরকারের সাথে অসম্মতি প্রকাশ করেন তারা সবাই দেশদ্রোহী। সবাই অ্যান্টিন্যাশনাল। আমি সেটার উল্লেখ করছিলাম। যেভাবে সরকার বলছে।

 

উগ্রাহা: ঠিক আছে। ঠিক আছে। আপনার এই কথাটা ঠিক আছে।

 

সাংবাদিক: ভীমা কোরেগাঁও কেস তো আমরা দেখছি, তাই না? বিনা প্রমাণে, প্রমাণে কারচুপি করে মানুষকে জেল বন্দি করে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে খবর ছাপা হয়েছে। তিন দিন ধরে খবর চলছে।

 

উগ্রাহা: আপনার কথা একদম ঠিক। কিন্তু তারপর আপনি দেখুন, আমার সম্পর্কে বলা হয় যে এ হলো নকশালপন্থী। কেন বলা হয় আমি জানি না। গুরু গোবিন্দ সিং-এর দিবস এল, আমরা সেটা পালন করেছি। সাহেবজাদার দিবস এসেছে, আমরা সেটা পালন করেছি। সুভাষ চন্দ্র বোসের দিবস এসেছে, আমরা সেটাও পালন করেছি। ভগত সিং-এর দিবস আসবে, আমরা সেটাও পালন করব। এরপর গুরু তেগবাহাদুরের গুরুপরব আসবে, আমরা সেটাও পালন করব। আমরা যদি একটা আন্দোলনে কোনো একটা দিবস পালন করি, তাদের বিষয়ে কথা বলি, তাতে অপরাধটা কোথায়? আমাদের সংবিধান কি সেই অনুমতি দেয় না যে কেউ নিজের কথা বলতে পারবে? আমি বলছি, আপনি মিডিয়ার সাথে কাজ করা মানুষ। কোনো ভালো কথা, মানুষের পক্ষের কথা, সত্যকে মানুষের মধ্যে নিয়ে যাওয়া আপনার কাজ। আমরা কী বলছি, ওরা কী বলছে, সরকার কী বলছে, সেসব কথা স্পষ্ট ভাষায় মানুষের মাঝে আপনারা নিয়ে যান। কাল যদি সরকার আপনার উপরে দেশদ্রোহী হবার কেস চাপিয়ে দেয়, জেলে বন্ধ করে দেয়, তাহলে ভাই আপনার হয়ে কথা কে বলবে? আপনি সকাল থেকে দেখছেন, আমাদের দেখছেন, আমাদের জন্যও কাজ করছেন, আপনার জন্যও কাজ করছেন। আপনার দায়িত্ব হল আপনি মিডিয়ার মানুষ। আমাদের জন্য আপনি কাজ করছেন এই জন্য বলছি যে আপনি আমাদের কথা মানুষের কাছ পর্যন্ত পৌঁছে দেবার দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি ভাই বড় কাজ করেছেন। যদি আপনাকে কাল জেলে ঢুকিয়ে দেয়, আপনার কাছে কোনো সংগঠন নেই। আমরা যদি আমাদের ব্যাপারে যারা লিখছেন, আমাদের ব্যাপারে যারা গান লিখছেন, আমাদের যারা রাস্তা দেখাচ্ছেন যে এই আইন বিপজ্জনক, নয়া আর্থিক নীতি দেশের কী সর্বনাশ করবে, বেসরকারিকরণ দেশের কী ক্ষতি করবে, আদিবাসী এলাকার দ্বন্দ্ব কী নিয়ে হচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যা কী, পাঞ্জাবের চাষিদের সমস্যা কী, বেকারত্ব কেন চলছে, দেশের উপর ঋণের বোঝা কেন রয়েছে, এই সব জ্ঞান দেবার জন্য যারা সম্পাদকীয় লেখেন, প্রবন্ধ লেখেন, বই লেখেন, তাদের যদি জেলে বন্ধ করে সরকার দেশদ্রোহী বলে, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের পক্ষ নিয়ে কারা কথা বলবে? তাদেরই তো সেই কথা বলা উচিত, যাদের ব্যাপারে তারা লিখছিলেন। তাই না? তাদের মুক্তির জন্য দাবি করেছি। এবার আপনি বলুন যে আমরা ঠিক করেছি নাকি ভুল করেছি।

 

সাংবাদিক: এই মাত্র একটা খুব বড় কথা যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহা বললেন, আর যেই বিষয় নিয়ে যোগীন্দ্র সিং উগ্রাহা আর ওঁর ইউনিয়নের সমালোচনা হচ্ছে, সরকারের ডজন ডজন মন্ত্রী আর তার প্রবক্তারা টিভি চ্যানেলগুলিতে নিন্দা-মন্দ করতে থাকলেন, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও সংসদে উল্লেখ করলেন যে এমন সব ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি কেন করা হল? টুইটার আর সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্রমাগত বিদ্রূপ করা হল যে কৃষক ইউনিয়নের দিক থেকে কেন তাদের মুক্তির দাবি করা হল? কিন্তু তারা নথিপত্র দিয়েছেন। আপনার হয়তো জানা আছে, ছয় জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এখন সিডিশনের (রাষ্ট্রদ্রোহিতার) কেস করা হয়েছে। মৃণাল পাণ্ডে, রাজদীপ সরদেশাই, জাফর আগা এবং এমন আরও অনেক সাংবাদিক আছেন যারা এমন কিছু খবর দিয়েছেন যে আইটিও-তে একজন যুবকের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে। বলা হচ্ছে যে সেই বক্তব্য নাকি সঠিক ছিল না। তাদের নামেও রাজদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। এমন হয়েই থাকে, যে অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহের মামলা করা হয়। তাহলে আপনি বলছেন যে মিডিয়ার কর্মীদের উপরেও যদি এমন কিছু করা হয় তাহলে আপনি তার বিরুদ্ধেও নিজের প্রতিবাদ করবেন।

 

উগ্রাহা: অবশ্যই করব। আমাদের দাবির জন্য আন্দোলন করছি। কোনো সাংবাদিককে যদি গ্রেফতার করা হয়, তাহলে আমরা তার সাথে থাকব, আর লড়াই করব। লড়েছি, লড়তেই থাকব। কারণ এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকারকে হত্যা করার সামিল। গণতন্ত্রের হত্যা। এই মিডিয়া হল স্তম্ভ, চতুর্থ স্তম্ভ। ভারতের সবাই এটা মনে করেন। যে সত্য বলে, তার সত্য বলা কি পাপ? এই কি তার শাস্তি? তাহলে যে মোদীর বিরুদ্ধে কথা বলবে সে কি দেশদ্রোহী? যে মোদীর পক্ষ নিয়ে কথা বলে সে কি দেশের খুব উপকারী? এই দেশের কি তারাই আসল বাসিন্দা যারা মনে করে যে মোদী যা বলে সেসবই ঠিক? কিন্তু যারা দেশের সেবা করেন, যারা দেশের ভেতরে থেকে সত্যি কথা বলেন, সত্যকে প্রকাশিত করেন, তাদেরকে যেকোনো এলাকায় গ্রেফতার করা হলে আমরা তাদের পাশে থাকব। থাকতেই থাকব।

 

সাংবাদিক: বেশ। দেখা যাচ্ছে, এঁদের ইস্যু হল কৃষকদের সমস্যা, কৃষি আইন বাতিল করা, কিন্তু তারপরও এসবের থেকে একটু আলাদা একটা মতামতও উনি রেখেছেন আর গণতান্ত্রিক অধিকারের সমর্থনে নিজের কথা বলেছেন। এখন শেষ প্রশ্ন, এমন কি মনে হয়, যে এই আন্দোলনে আজ ৮১ দিন চলছে, এক পর্যায়ে এমন এক দিনও দেখা গেল, যখন ২৬ জানুয়ারি লাল কেল্লার উপরে শ’ দুয়েক থেকে হাজার মানুষ এসে পৌঁছে গেলেন, আর নিশান সাহেব উড়িয়ে দেওয়া হল, তারপর দুই তিন দিন ধরে আন্দোলন এক ধাক্কা খেল, গাজীপুর খালি হতে হতে সামলে নিলো। সিংঘু বর্ডারের মানুষের মনেও হতাশা এসে থাকবে। এখানকার ব্যাপারেও এমন হতে পারে যে কিছু মানুষের মনে হয়ে থাকতে পারে যে ভুল হয়েছে। সেখান থেকে এই আন্দোলনে ভাঁটাও পড়ল, তারপর পালটা জোয়ারও এলো। আন্দোলনে একটা নতুন মোড়ও কি এল?

 

উগ্রাহা: দেখুন ভাই, ২৬ জানুয়ারির যে কর্মসূচি ছিল, সেটা সংযুক্ত মোর্চার মিটিং-এ পাশ হয়। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমরা সম্মতি দিয়ে দিয়েছিলাম যে ঠিক আছে। কিন্তু ২৬ তারিখের যে কর্মসূচি ছিল, সেখান থেকে আমাদের যে আহ্বান ছিল, সেটা দিল্লি যাবার আহ্বান ছিল না। তাই প্রশাসন আমাদের জন্য যেই রাস্তাই দিক আমাদের সেই রাস্তা মেনে নেওয়া উচিত ছিল। আর দিল্লিতে যেন কোনও হিংসা না হয় সেই ব্যাপারে সাবধান থাকতে হত। এটার জন্য কেবল আমিই না, সংযুক্ত মোর্চার সমস্ত সংগঠনগুলি খুব বড় ভুল করেছে। চিন্তিত ছিলাম চার-পাঁচ দিন ধরে। কিন্তু কী বলব, আমি তো কেবল এটাই বলতে পারি যে এটা সরকারের একটা পরিকল্পিত কর্মসূচি ছিল। আপনার হয়তো জানাই আছে, আমরা নভজগড় গিয়েছিলাম। কিষান মার্চের সময় আমাদের সংগঠন চাপ দিয়েছিলাম যে আমাদের এই ব্যারিকেড চাই – আমরা নভজগড় এলাকায় আমরা মার্চ করব। আমরা রাত দুটোর সময় সেই ব্যারিকেডের উপরে দখল নিয়েছিলাম। ৯টার সময় আমাদেরকে প্রশাসন বলেছিল যে তোমরা মিছিল করতে পারো। ৯টার সময় প্রশাসন ব্যারিকেড খুলে দেয়। আমরা ব্যারিকেড ভাঙিনি। ব্যারিকেডের উপর দিয়ে মিছিল করে আমরা সামনের দিকে চলে যাই। আমাদের জন্য যে রাস্তা নির্ধারিত হয়েছিল তার উপরে আমরা চলে আসি। এটা আলাদা কথা যে আমাদের ঝান্ডা নিয়ে কেউ অন্য দিকে চলে গেছে, কেউ বিভ্রান্ত হয়েছে, কেউ অন্য দিকে নিয়ে গেছে। কারণ খুব বড় বাধা ছিল। কিন্তু আমরা আমাদের রাস্তা ঠিক করে নিয়েছিলাম। আমাদের নির্ধারিত রাস্তা ধরে আমরা ফেরত চলে আসি। সিংঘু বর্ডারের যে সংগঠন ছিল, তাদের যে রাস্তা দিয়ে যাবার কথা ছিল, সেই রাস্তার সামনে বাধা দেওয়া হয়েছিল, ব্যারিকেড করা ছিল। রাস্তা বন্ধ করা ছিল। তাদের জন্য নির্ধারিত করে রাখা রাস্তায় সরকার ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই কারণে অন্য দিকে লাল কেল্লার উপরে যে দুই হাজার মানুষ/ চার হাজার মানুষ/ দশ হাজার মানুষ – জানি না কতজন মানুষ চলে গিয়েছিল। আমি তো বুঝতেই পারি না যে গণতন্ত্র দিবসে, লালকেল্লায় এত মানুষের চলে যাওয়া, আর সেখানে গিয়ে ঝান্ডা লাগিয়ে দেওয়া কীভাবে হল? এটা বড় ঘটনা। এ কথাটা আমি বলব। দেখুন, আমার যেমন বুদ্ধি আমি তো ততটাই বলতে পারব। আমি যেমন বুঝতে পারছি, এক গণতান্ত্রিক দেশের ভেতরে আমরা এত বড় শক্তি নিয়ে আছি। আমাদের কাছে এত বড় বাহিনী আছে। লালকেল্লার উপরে কাল যদি অন্য দেশের কেউ ঝান্ডা লাগিয়ে দেয়? এই যে ঝান্ডা লাগিয়ে দেবার কার্যকলাপ, আমি কালকে একটা চ্যানেল দেখছিলাম, সিম্রনজিত মান বলছিলেন – লালকেল্লার উপরে যে ঝান্ডা তুলেছে সে তো আমি তুলিয়েছি। আমি বুঝতে পারি না (যে উনি কেন এমন বলেন)। এই জন্যই বলছি যে এটা আমাদের সংগঠনগুলির কাজ ছিল না। ওরা আমাদেরকে আঘাত করেছে, আন্দোলনে অন্তর্ঘাত করেছে। একেবারে ক্ষতি তো হয়েইছে। কিন্তু আমরা সামলে নিয়েছি। বিজেপির এটা প্ল্যান ছিল। তার পরের দিন থেকেই ২৭ তারিখে, আর ২৮ তারিখে, বিজেপির লোকেরা পেছনে লাগতে শুরু করেছে। এরা ধর্নাকে অপমান করেছে। কেস দিয়েছে। ধরে ধরে জেলে বন্ধ করে দিয়েছে। কেবল ২৬ তারিখেই না, ২৬ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মানুষকে ধরে ধরে জেলে বন্দি করে কেস দিয়েছে। যারা আটকে গেছে তাদেরকে কেস দিয়েছে। শুধু কেসই দেয়নি। তারপর বিজেপি নিজেদের লোকেদের পাঠিয়েছে। তেরঙ্গার অপমান করেছে, গুন্ডাগিরি করেছে। সিংঘুতে আক্রমণ করেছে। গাজীপুরে বিজেপির লোকেরা গেছে। ২৮ তারিখে প্রচুর ফোর্স সমস্ত ব্যারিকেডের উপরে মোতায়েন করে রাখা হয়। আক্রমণ করেছে। আক্রমণ করা হচ্ছে। ভয় দেখানো, ধমকানোর মতো কাজও অনেক করেছে। কিন্তু দুই দিন পর, ২৮ তারিখের পর, আন্দোলন সম্পর্কে মানুষ এক সামগ্রিক বিচার করে ফেলেন যে দিল্লির ঘটনা বিজেপির পরিকল্পিত কার্যকলাপ ছিল। এর ফলে এই আন্দোলনকে আরও বেশি সমর্থন দেওয়া হতে লাগল। আর মানুষ দুই তিন দিনের পর আবার নিজের আগের রূপে ফিরে আসে। এভাবে সরকার যখন আন্দোলনের উপর হামলা করে, তখন কখনো সরকার আধিপত্য করে, কখনো আন্দোলন আধিপত্য করে, আবার কখনো সরকার আধিপত্য করে, তারপর আবার আন্দোলনকারীরা আধিপত্য করেন – এভাবে চলতেই থাকে। এটা তো ভাই আপনাকে মানতেই হবে যে সরকারের সমতুল্য শক্তি তো আমাদের নেই। আমরা তো ভাই ফরিয়াদি (অভিযোগকারী), আমরা তো আঁচল পেতে আছি। কিছু চাইতে এসেছি। আমাদের কাছে তো কেবল বিচার আছে, হাতিয়ার তো আর নেই। আমরা তো বিচার দিয়ে কথা বলতে এসেছি। আমরা তো কোনো হাতিয়ার নিয়ে আসিনি। আপনি গিয়ে দেখুন, বসুন না সিংঘু, টিকরি, গাজীপুর। যে ২০-২২ কিলোমিটার লম্বা ট্রলির মিছিল আছে, সেখানে আপনি গিয়ে দেখুন। আপনি কোথাও ডেক বাজছে বলে দেখতে পাবেন না। মদ খাওয়ার মানুষ দুই একজনকে দেখতে পাবেন – অল্প কিছু থাকতে পারেন। কিন্তু আপনি গুন্ডাগিরি করার মতো, কমবয়সীদের বদমায়েশি করার মতো কাউকে দেখতে পাবেন না। কেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে দেখতে পাচ্ছেন? রাস্তা ধরে গেলে আপনি দেখতে পাবেন যেন রীতিমতো একটা কায়দা মাফিক শহর গড়ে উঠেছে।

 

সাংবাদিক: সেটা আমি দেখেছি। আজকেও আমি দশ বারো কিলোমিটার এসেছি।

 

উগ্রাহা: এমন পরিকল্পনা করে সবাই থাকছে। আমরা ফরিয়াদি মানুষ। সরকারের সাথে আমাদের কোনো মোকাবিলা সম্ভব হতে পারে না। এ এক অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সরকার যদি মেনে নেয় তাহলে ঠিক আছে। না মানলে আমরা আপনাদের কাছে জানতে চাইব যে ভাই সরকার তো এখন রেগে গেছে কী করব। তখন আপনারা বলে দেবেন। যেমন বলবেন সেভাবে কাজ করব।

 

সাংবাদিক: বেশ, একটা আলোচনা হয়ে থাকে আপনার সংগঠন আর আপনার কাজ করার ধরন নিয়ে। ২০ বছরের মধ্যে আপনি এত বড় সংগঠন গড়ে তুলেছেন। আপনি কী ধরনের পদ্ধতি নিয়ে চলেছেন? শুনেছি যে আপনি সেনাবাহিনীতেও ছিলেন। আপনি কীভাবে চাকরি ছেড়েছেন আর এই কাজে এসেছেন। আপনি কীভাবে এত কিছু দাঁড় করিয়েছেন?

 

উগ্রাহা: দেখুন আমি তো সেনাবাহিনীতে খুব কম সময়ের জন্য ছিলাম। আর সংগঠন দাঁড় করাবার আমি কে? আমি আন্দোলন গড়ে তুলিনি।

 

সাংবাদিক: সংগঠন? আপনার সংগঠন?

উগ্রাহা: আমার সংগঠন যেটা আমি গড়ে তুলেছি সেটা তো নীতির উপর নির্ভর করে গড়ে তোলা হয়। আমরা যখন কোনো ইস্যু ধরি, আমরা সেটার জন্য জান দিয়ে দেই। এর সাথে যত বড় আন্দোলন হয় আমাদের শক্তি তত করতে হয়। এর মধ্যে সবাইকে সামিল করি। সামিল করার পরে – আপনি আমার যেকোনো ইন্টারভিউ দেখে নিন। আমার যত ইন্টারভিউ হয়েছে, যেখানেই আমাদের সংগঠনের প্রশ্ন উঠেছে, কোথাও আমি এটা বলিনি যে এই আন্দোলনটা ছোটো খাটো আন্দোলন। আমি বলেছি যে এটা খুব বড় আন্দোলন। অনেক চাপ আসবে। এই আন্দোলনটা এত দ্রুত জিততে পারবার মতো আন্দোলন না। তবু শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। তাহলেই আমরা এতে জয় লাভ করতে পারব। এই আন্দোলনটা আমরা বুঝেছিলাম যে এটা অনেক বড় ব্যাপার। বড় ব্যাপারের জন্য বড় শক্তি দরকার হয়। একলা পাঞ্জাব এতে জয় লাভ করতে পারবে না, হরিয়ানা আর পাঞ্জাব মিলেও এতে জয়লাভ করতে পারবে না। আমরা এই নীতি নিয়ে চলছি। মানুষকে আমরা সেটাই বলছি যেটা আপনার প্রশ্ন। আমাদের উপরে মানুষের একটা বিশ্বাস তৈরি হয়ে গেছে যে আমরা যা বলি সেটাই করি। তার চেয়ে বেশি করি না। আপনি পাঞ্জাবে যান, প্রশাসনের সাথে কথা বলুন। দেখবেন যে, আমাদের যদি কোনো একটা অফিসে যেতে হয়, যদি জেলা কালেক্টরের অফিসে যাই, সেখানকার অফিসারও বলেন যে এরা যা বলেন সেটাই করেন। অর্থাৎ এরা সেই জেলা কালেক্টরের অফিসেই যাবে তার চেয়ে বেশি অন্য কোথাও যাবে না। আমরা যা বলি, সেটাই করি। এভাবে আমাদের সংগঠনের একটা মর্যাদা গড়ে উঠেছে।

 

এখানে আমাদের সংগঠন এমন যে আমাদের ধর্না অবস্থানকে সাতটা শহরের মতো এলাকায় সংগঠনের দায়িত্বে ভাগ করা আছে। এটা আগে বন্দা সিং বাহাদুর বিভিন্ন শহরের মধ্যে ভাগ করে রেখেছেন। সাতটা শহরের সাতটা কমিটি আছে। আপনি রাতে যদি দেখেন, দেখবেন, রাতে এখানে পেট্রোলিং হয়। স্পিকার বিশিষ্ট গাড়ি আছে। সেটা এখন চলতে শুরু করবে। ৯-১০টা পর্যন্ত ঘোষণা হতে থাকে – ভাই কেউ মদ খেয়ে থাকবেন না। কেউ গুন্ডাগিরি করবেন না। ভাঙ্গরা করবেন না। রাত পাহারা দিন। ভলান্টিয়াররা থাকেন। দিনের বেলায় তারা চলে যায়। এই প্রশিক্ষণও আন্দোলনেরই একতার একটা অংশ। আমরা নিজেদের ক্যাডারদেরকে শেখাই যে আন্দোলন কীভাবে করতে হয়। আপনি কখনো আমাদের স্টেজে গিয়েছেন? আমাদের স্টেজে গিয়ে দেখুন। এর শৃঙ্খলারও আপনাকে প্রশংসা করতে হবে। এত বড় স্টেজ আছে কিন্তু সেখানে একটা গ্লাসও স্টেজে থাকবে না। স্টেজ পুরোপুরি খালি থাকবে। অন্য স্টেজগুলিতে গিয়ে দেখুন, সেখানে ভিড় হয়ে থাকে। কখনো কখনো সেটা ভেঙেও যায়।

 

সাংবাদিক: আজকে সকালেই গিয়েছিলাম। একজন ব্যক্তি ভাষণ দিচ্ছিলেন। একাই সেই স্টেজে ছিলেন।

 

উগ্রাহা: হ্যাঁ। আপনি ঠিক দেখেছেন। এটা আমাদের শৃঙ্খলা বিকশিত করার উপায়। আমি নিজেও স্টেজের নীচে বসে থাকি।

 

Feature Image courtesy: Frontline-The Hindu

 

To listen to the original interview see this link

https://www.facebook.com/Agriculture1111/videos/450461792769804/

 

Share this
Leave a Comment