‘ফেমিনিস্টস ইন রেসিস্টেন্স‘ থেকে প্রকাশিত কৃষি বিল বিরোধী কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে একটি বিবৃতি।
আজ প্রায় মাসাধিক কাল ধরে কৃষকদের যে আন্দোলন চলছে, তাতে আমরা আপ্লুত, অনুপ্রাণিত। পাঞ্জাব, হরিয়ানাতে শুরু হয়ে আন্দোলন আজ ছড়াতে শুরু করেছে রাজস্থান সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে। এমনকি, যে সমস্ত রাজ্যে – যথা বিহার – ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বহুদিন ধরেই লাগু নেই আর, সেখানেও শুরু হয়েছে কৃষকদের মধ্যে রাজনৈতিক অনুরণন, যার ফলশ্রুতিতে পাঞ্জাবের কৃষক-আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে পথে নামলেন বিহারের কৃষকেরা। তাই, আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি ফ্যাসিবাদী দুর্গে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। আইন করে, পুলিশ-মিলিটারি-রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন নামিয়ে এদেশের জনগণের কর্পোরেট বিরোধী, বৃহৎ পুঁজি বিরোধী লড়াইকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
গত কয়েকমাসে আমরা যেটা আশংকার সাথে লক্ষ্য করেছি, তা হলো, কোভিড -১৯ জাত মহামারী ও লকডাউনের সুযোগ নিয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক জনবিরোধী আইন চালু করে চলেছে। আনা হয়েছে নতুন শ্রম কোড, কৃষি আইন, পাল্টানো হয়েছে অত্যাবশকীয় পণ্য আইন, আমূল পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে পরিবেশ প্রভাব মূল্যায়নে। কর্পোরেট-বৃহৎ ব্যবসায়ীদের হাতে সরাসরি তুলে দেওয়া হয়েছে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদসহ মূল মূল ক্ষেত্রগুলি। একদিকে “আত্মনির্ভর ভারতের” গালভরা বুলি, অন্যদিকে কর্পোরেটদের হাতে প্রায় বিনামূল্যে দেশকে বিকিয়ে দেওয়া, এটাই আজ ভারতবর্ষের রাজনৈতিক বাস্তবতা। ২০১৮ সালেও গড়ে উঠেছিল কৃষকদের জোরদার আন্দোলন, এককালীন ঋণবাতিলের দাবিতে। সজোরে আওয়াজ উঠেছিল স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশসমূহের ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা চাই পার্লামেন্টে। কৃষক-আত্মহত্যার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়েই গড়ে উঠেছিল এই আন্দোলন ও তদজনিত দাবি। ২০২০-এ এসে সেই দাবীসমূহকে তো বিচার করাই হলো না , বরং সশব্দে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আনা হলো নতুন জনবিরোধী কৃষি আইন।
তদানুসারে, কৃষি দ্রব্য বাজার কমিটি আইন (এপিএমসি) এবং চুক্তি চাষী বিল কৃষকদের কোনো ধরণের আইনি সহায়তা দেবে না। কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারগুলির বিরুদ্ধে, কিংবা কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে কোনো নালিশ দাখিল করারও সুযোগ নেই। কাজেই, কোনধরনের প্রতিবিধানের দায় থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হলো এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে। এবং, এই নতুন আইনি পরি কাঠামো প্রণয়নের মধ্য দিয়ে একধরনের তীব্র কৃষক-অসহায়তার বাতাবরণের খসড়া তৈরী করা হলো। আরেকটু বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে যা স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হলো, দলিত, মহিলা, আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত, সংখ্যালঘু ও শ্রমজীবী জনগণের ওপর সার্বিকভাবে যে আক্রমণ নামিয়েছে এই সরকার, তার ধারাবাহিকতাতেই এসেছে এই নতুন কৃষি আইন।
এই নতুন কৃষি আইনের ফলে, বেসরকারি সংস্থাগুলিকে নিজেদের মান্ডি গড়া, দাম ও চুক্তি নির্ধারণ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। সেখানে কোনো ধরনের কোনো সরকারি বা রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার জায়গা নেই। গত কয়েকদিন ধরে, আন্দোলনকারী কৃষকরা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে পূর্বতন মান্ডিগুলির প্রায় কোনো ক্ষমতাই থাকবে না এই নতুন বেসরকারি মান্ডিগুলির সাথে প্রতিযোগিতায় নামার। কারণ, বেসরকারি মান্ডিগুলোর রয়েছে অনেক বেশি ক্রয়ক্ষমতা ও তদজনিত দর কষাকষির ক্ষমতা। অনেকটা ঠিক এই বিষয়টিই ঘটে চলেছে মধ্য প্রদেশে। এবং তাঁরা এও বলেছেন যে অতিপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুতদারির উপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবার ফলে দেশের যে রেশন ব্যবস্থা, তা গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হবে। ফলে, দেশে শুরু হবে ব্যাপক খাদ্যসংকট, যার ভুক্তভোগী হবেন গরিব, প্রান্তিক, খেটেখাওয়া মানুষ। এই নতুন আইনের ফলে অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকা থেকে সরানো হয়েছে বিবিধ শস্যদানা, আলু, পেঁয়াজ ও সবজিজাত তেল। ফলস্বরূপ, আজ দেখা যাচ্ছে যে কর্পোরেটগুলি চাষিদের কাছ থেকে সস্তায় খাদ্যদ্রব্য কিনে রাখতে পারে যথেচ্ছ, সেই সস্তায় কেনা খাদ্যদ্রব্য মজুত রাখতে পারে নিজ নিজ গুদামঘরে, এবং সময়সুযোগ বুঝে সেই একই খাদ্যদ্রব্য অগ্নিমূল্যে বেচতে পারে বাজারে। একইভাবে তারা তৈরী করতে পারে কৃত্রিম খাদ্যসংকটও। বাংলার মানুষের কাছে এই বাস্তবতা অপরিচিত নয়। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরে ঠিক প্রায় একই প্রক্রিয়ায় এক বছরের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছিল লক্ষাধিক মানুষকে, যার ফলশ্রুতিতেই পরবর্তী সময়ে লাগু করা হয় অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্য আইন। কাজেই, মোদী সরকার একভাবে ফিরিয়ে আনলো এদেশে ঔপনিবেশিক বাস্তবতাকে। কারণ, একভাবে দেখতে গেলে, গণহত্যার রাজনীতিই , তা সে দাঙ্গার মধ্য দিয়েই হোক অথবা আকালের বাস্তবতা নির্মাণের মধ্য দিয়ে, এই সরকারের ভিত্তিগত রাজনীতি।
তাই, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের মধ্যে দিয়ে যেটুকু ছিঁটেফোঁটা সুরক্ষা মিলতো দেশের একাংশের কৃষকদের, সেই সুরক্ষার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়া হলো তাঁদের কাছ থেকে। তাই, কৃষকদের পাল্টা দাবি, সমস্ত কৃষিজাত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করতে হবে।
লিঙ্গ ও নারী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমরা কৃষকদের লড়াইকে পূর্ণ সমর্থন জানাই। বিশেষত:, আজ এই মুহূর্তে যখন পাঞ্জাব, সিঙ্গু বর্ডার ও টিক্রি বর্ডার পার হয়ে কৃষক আন্দোলন ক্রমশ: সম্প্রসারিত হচ্ছে দেশের অন্যান্য জায়গায়, আমরা সেই লড়াইতে সংহতিমূলক শক্তি হিসেবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লড়াই শুধু কৃষকদের লড়াই নয়, এই লড়াই আমার লড়াই, আপনার লড়াই। এই লড়াইয়ের সাথে জড়িয়ে আছে তামাম ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নটি। আমার, আপনার খাদ্যসুরক্ষার প্রশ্নটি। তাই, আন্দোলনকারী কৃষকদের সাথে আমরাও এই নিপীড়নমূলক কৃষি আইনের বাতিলের দাবি সজোরে গলা তুলতে চাই।
বিশেষত, আমরা সমর্থন ও সংহতি জানাতে চাই সেইসব মহিলা কৃষকদের, যাঁরা এই আন্দোলনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই ও আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন ও করেছেন, পুরুষ সাথীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন আন্দোলনজাত সমস্ত রাজনৈতিক দায়িত্ব। অবশ্য ভারতবর্ষের কৃষি ক্ষেত্রের লিঙ্গভিত্তিক শ্রমের ধারা আর একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে ঐতিহাসিকভাবে, মেয়েরাও সমস্ত ধরনের কৃষিশ্রম – তা সে বীজ বোনাই হোক, অথবা ট্র্যাক্টর চালানো – তাতে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। কাজেই, আন্দোলনের ক্ষেত্রেও যে তাঁরা সমানভাবে অংশগ্রহণ করবেন, তাতে কোনো আশ্চর্য নেই।
যদিও, তার সাথে সাথে এটাও সত্য যে কৃষিভিত্তিক শ্রমে সমানভাবে অংশগ্রহণ করলেও, জমির মালিকানায় এখনো মহিলাদের সমানাধিকার বাস্তবত নেই। সেন্টার ফর ল্যান্ড এন্ড গভর্নেন্স ইনডেক্স অনুসারে, মেয়েদের মালিকানায় রয়েছে মাত্র ১২.৮% চাষের জমি। ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী, যদিও বারোতবর্ষে কৃষিক্ষেত্রে মোট শ্রমের প্রায় ৪২% শ্রম দেন মেয়েরা, ২% এরও কম জমির মালিকানা মেয়েদের হাতে। তৎসহ, কৃষিশ্রমে মেয়েদের অংশগ্রহণ বহুলাংশেই দাঁড়িয়ে আছে মজুরিবিহীন শ্রম ও সস্তা শ্রমের উপর। অন্যদিকে, দলিত সম্প্রদায়গুলির মেয়েদের জমির মালিকানার হার আরোই কম। এতে অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার বিশেষ কিছু নেই, কারণ ভারতবর্ষে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে সিংহভাগ দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। এই পরিপ্রেক্ষিতে এই কথাও মনে রাখা প্রয়োজন জাতপাত ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য রয়েছে কৃষিক্ষেত্রেও। কৃষিক্ষেত্রের মহিলা শ্রমিকদের মধ্যে ৮১% দলিত ও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। কাজেই, ভূমি-সংস্কার ও জমি পুনর্বণ্টনের যে জটিল ইতিহাস এদেশে, যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে জাতপাত ও লিঙ্গ প্রশ্ন, তাও আজ কৃষক আন্দোলনের পটভূমিতে আমাদের মনে রাখতে হবে। কারণ, বহুলাংশেই আইনি সংশোধনের মধ্যে দিয়ে এই ঐতিহাসিক বৈষম্যকে দূর করা যায়নি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিশেষভাবে সংহতি জানাই মহিলা কৃষকদের, যাঁরা উপর্যুপরি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন – ধার নিতে গিয়ে, নিজের জমির পরিকাঠামোগত উন্নতিসাধন করতে গিয়ে, মৃত স্বামীর জমি নিজের নামে বদলাবদলি করতে গিয়ে। আমরা বিশেষভাবে সংহতি জানাই সেইসব মহিলা কৃষকদের, যাঁরা বাড়ির পুরুষরা কর্মসংস্থান করতে শহরে চলে এলেও অসীম সাহসিকতার সাথে গ্রামে থেকে গিয়ে চালিয়ে গেছেন গৃহশ্রম ও কৃষিকাজ দুইই। বৈষম্য ভোগ করেছেন রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের কাছে , কিন্তু ভেঙে পড়েননি। লড়াইয়ের ময়দানে তাঁদের উপস্থিতিই তাই আজ প্রমাণ করে, সমবন্টনের প্রশ্নটিকে বাদ দিয়ে আজ আর কৃষিক্ষেত্রকে দেখা যাবে না।
একইসাথে, আজকের লড়াইয়ে কৃষক মহিলাদের অংশগ্রহণকে দেখতে হবে ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায়, যেখানে কৃষিভিত্তিক সম্প্রদায়ের মেয়েরা থেকেছেন লড়াইয়ের অগ্রভাগে, লড়েছেন পুলিশের সাথে, রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে। লড়েছেন প্রাত্যহিক সামন্ততান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধেও। যদিও সবসময়ে সেই অংশগ্রহণের সঠিক স্বীকৃতি মেলেনি, মেলেনি সঠিক মূল্যায়নও। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে বর্তমান সময়ের যে ফ্যাসিবাদ ও কর্পোরেট তন্ত্রের বিরুদ্ধে যুগপৎ লড়াই, তাতে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সামনে থাকবেন কৃষক মেয়েরা। লিঙ্গ ও নারী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমরা এই বিষয়টিকে বারবার মনে রাখতে চাই, সামনে এগিয়ে ধরতে চাই।
সাথে সাথে আমরা আজ একথাও সজোরে ঘোষণা করতে চাই যে, এই লড়াই শুধু কৃষকদের লড়াই নয়। এ লড়াই জনসাধারণের। আমার-আপনার। এ লড়াই রুটি-রুজির লড়াই, এই লড়াই খাদ্যসুরক্ষার লড়াই, এই লড়াই সুস্থ পরিবেশের জন্য লড়াই। এই লড়াই কর্পোরেট-তন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই। এই লড়াই আমাদের সবার গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই।
আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, দমন ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ণের মধ্য দিয়ে মানুষের গণতান্ত্রিক বোধকে গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই, আজ দেশের মানুষ লড়ছেন এনআরসির বিরুদ্ধে, জিএসটির বিরুদ্ধে। শাহীনবাগে পথে নেমেছিলেন মুসলিম মহিলারা। গোটা দেশ জুড়ে আমরা দেখেছিলাম আরও প্রচুর প্রচুর শাহীনবাগ। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখছি, কিভাবে ভীমা করেগাঁও সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবিতে দেশের মানুষ লড়ছেন। পাঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষক আন্দোলনকেও আমরা দেখতে চাই সেই লড়াইয়ের ধারাবাহিকতাতেই। আমরা অনুপ্রাণিত হই এই ভেবে ও দেখে যে ঠিক যেমনভাবে শাহীনবাগকে ঘিরে এদেশে তৈরী হয়েছিল আরও অনেক শাহীনবাগ, ঠিক একইভাবে আজ সিংহু ও টিক্রি বর্ডারকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা লড়াই গড়ে তুলছেন।
তাই, এই পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি :
১. নতুন কৃষক আইনের আশু বাতিল
২. কৃষি আইনের আশু সংস্কারের মধ্য দিয়ে মহিলাদের মধ্যে জমির সঠিক উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণ
৩. জাতপাত, লিঙ্গ বৈষম্যকে মাথায় রেখে কৃষিজমির সুসম বন্টন ও ভূমি সংস্কার
৪. মহিলা কৃষকদের কৃষি প্রযুক্তি ও ঋণপ্রাপ্তিতে যথাযত সহায়তা
ফেমিনিস্টস ইন রেসিস্টেন্স
জানুয়ারী ২০২১
The statement (in English) ‘The Ongoing Farmers’ Struggle is Your and My Struggle, for Right to Life’ published by Feminists in Resistance in support of the protesting farmers:
[pdf-embedder url=”https://www.groundxero.in/wp-content/uploads/2021/01/FIR_Statement-supporting-farmers.pdf” title=”FIR_Statement supporting farmers”]