রামপুরহাটে কৃষিবিল প্রত্যাহার, পরিযায়ী শ্রমিকের অধিকার ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে জনজোয়ার


  • October 17, 2020
  • (1 Comments)
  • 1387 Views

গ্রাউন্ডজিরো রিপোর্ট

 

বীরভূমের রামপুরহাটে ১৭ অক্টোবর, শনিবারপ্রায় ৫০০০ মানুষের এক মিছিল বের হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিলের বিরুদ্ধে। সদ্য সংসদে পাশ হওয়া কৃষি বিল ২০২০ রদ করার দাবি তোলার পাশাপাশি এই মিছিলে দাবি ওঠে – দলিত ও নারীদের উপর ক্রমাগত বাড়তে থাকা হিংসা বন্ধের ও পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রাপ্য সাংবিধানিক অধিকার দেওয়ার। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ-এর আহ্বানে আজকের মিছিল শুরু হয়েছিল রামপুরহাটের বোগটুই মোড় থেকে যা শেষ হয় রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ডের গণ সমাবেশে।

 

প্রসংগত, গতবছর অক্টোবর মাসে কাশ্মীরে জঙ্গীদের গুলিতে প্রাণ হারান পাঁচজন বাঙালী পরিযায়ী শ্রমিক। এরপর কারফিউ চালু হলে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক কাশ্মীরে আটকে পড়েন। তার মধ্যে বেশ কিছু বীরভূমের শ্রমিকও ছিলেন। সেই সময় এঁদের বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিলো বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। এর পর লকডাউন পর্যায়েও রাজ্যের বাইরে আটকে পড়া বহু বাঙালী শ্রমিককে ঘরে ফিরতে যথাসাধ্য সাহায্য করে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। তাঁদের মধ্যেও অনেকেই ছিলেন বীরভূমের বাসিন্দা। এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা বড় অংশ আজকের মিছিলে পা মেলান। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও কেন্দ্র সরকারের নীতির বিরূদ্ধে একজোট প্রতিবাদের নানা ছবি এই দীর্ঘ মিছিলে ধরা পড়ে।

 

এই মিছিলে উপস্থিত জনতা মূলত কৃষি বিল ২০২০-এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ মনে করে এই বিল সম্পূর্ণভাবে সাধারণ কৃষকদের বিরোধীই শুধু নয় দুশ্চিন্তার বিষয় হল যে অদূর ভবিষ্যতে এর ফলে জমির কেন্দ্রীকরণ ঘটতে পারে আর তার ফলে কৃষকদের এক বিরাট অংশ ক্রমেই ভূমিহীন দিনমজুরে পরিণত হবেন। এই নিন্দনীয় কৃষিবিল কৃষকদের জন্য চূড়ান্ত ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠছে। তাই এদিনের মিছিলে দাবি ওঠে নিঃশর্তভাবে এই কৃষিবিল রদ করার।

 

এদিনের এই মিছিলে উত্তর প্রদেশের হাথরাস-এ সম্প্রতি এক দলিত তরুণীর উপর ঘটা নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়। সভ্য সমাজের যাবতীয় সীমা লঙ্ঘন করেছে এই ঘটনা, হত্যা হয়েছে মানবধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারের। এই মিছিলের আহ্বায়কেরা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন –

যেভাবে নির্দিষ্ট রাজ্য প্রশাসন আক্রান্তের পরিবারকে টানা ভয় দেখিয়ে চলেছে ও পরিবারের অনুমতি ছাড়াই মৃতের দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো নির্লজ্জ কাজও করেছে তা এক কথায় চূড়ান্ত নিন্দনীয় ও প্রতিবাদযোগ্য। শুধু তাই নয় উত্তর প্রদেশ প্রশাসন যখন কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলকে, গণমাধ্যমকে এমনকি আইনজীবীকেও গ্রামের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না – তা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দেওয়ারই উদাহরণ। নিঃসন্দেহে উত্তর প্রদেশে দলিত ও নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়ছে।

 

এই মিছিলে শ্লোগান, পদযাত্রার পাশাপাশি আদিবাসী মানুষদের প্রতিবাদী নাচ-গানেও ফ্যাসিবাদী শক্তি ও মানবাধিকার বিরোধী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের দৃঢ় বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।

 

 

Share this
Recent Comments
1
  • comments
    By: MD Abul Hasan on October 18, 2020

    বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ জিন্দাবাদ

Leave a Comment