কৃষক বিরোধী কৃষি বিলকে সামনে রেখে গত ২৫ সেপ্টেম্বর গোটা ভারতে কৃষকরা বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন এবং যাদবপুর কমিউন-এর ছাত্রছাত্রীরাও দেশের সমস্ত কৃষকের পাশে দাঁড়াতে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। গ্রাউন্ডজিরোর প্রতিবেদন।
কোভিড সংক্রমণ মহামারির আকার ধারণ এবং সমাজের এক বড় অংশের মানুষ উপার্জন হারিয়ে আর্থিভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে কলকাতায় যাদবপুর কমিউনের ছাত্রছাত্রীরা গত ছয় মাস দশ দিন ধরে যাদবপুর সংলগ্ন স্টেশন এবং বস্তিগুলোতে নিয়মিতভাবে একবেলা খাবার দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছেন। বর্তমানে অতিমারি পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে চলা ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন, এই পরিবারগুলিতে দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট, অসংখ্য মানুষ দিন কাটাচ্ছেন অনাহারে-স্বল্পাহারে। আর দেশের ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু দেশের একের পর এক সম্পদ বেসরকারি পুঁজিপতিদের হাতে বিক্রি করে দিচ্ছে তাই নয়, অগণতান্ত্রিকভাবে পাল্টে দিচ্ছে দেশের মানবাধিকার আইনের মূল ধারাগুলিকে, আমূল পরিবর্তন আনছে শিক্ষা, পরিবেশ, কৃষি ও শ্রম আইনে। সংসদে প্রায় গা-জোয়ারি করে পাশ হয়ে গেছে স্বৈরাচারী কৃষি বিল। যা কেড়ে নিচ্ছে ভারতের কৃষকের সমস্ত অধিকার। ভারতবর্ষের সামন্ততান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করে কৃষকের সমস্ত অধিকার বাতিল করে বহুজাতিক কোম্পানি এবং কর্পোরেট পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হল নব-পণ্যায়ণের সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়ে।
এই কৃষক বিরোধী কৃষি বিলকে সামনে রেখে গত ২৫ সেপ্টেম্বর গোটা ভারতে কৃষকরা বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন এবং যাদবপুর কমিউন-এর ছাত্রছাত্রীরাও দেশের সমস্ত কৃষকের পাশে দাঁড়াতে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন।
সকাল আটটা থেকে যাদবপুরের এইট-বি বাস স্ট্যান্ডে চলে পথসভা যেখানে কৃষিবিলের এই জটিল শোষণ-চরিত্রকে মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। এরপর তাঁরা সুলেখা এবং যাদবপুর বাজারে যান, যেখানে ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ী এবং বাজারের আলু বিক্রেতা, সব্জি বিক্রেতাদের সঙ্গে এই আইন বিষয়ে কথা বলেন। চলে গান, স্লোগান ও বক্তৃতা। কমিউনের প্রতিনিধিরা জানান, এইট-বি চত্বরে ৪৫ মিনিট ধরে চলে অবরোধ যেখানে কৃষি আইনের প্রতিলিপি জ্বালিয়ে শপথ নেওয়া হয় – আগামীর কৃষক আন্দোলনে তাঁরা দেশের নয়া সামন্ততান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনমত প্রতিষ্ঠিত করার সার্বিক উদ্যোগ নেবেন। এই চিত্র-প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেদিনের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের খণ্ড-মুহূর্ত তুলে ধরা হল।