ট্রাম্পের বিতর্কিত “চেঞ্জমেকার ড্রাগ” দিয়ে করোনা মোকাবিলার পথে আইসিএমআর। দোকান থেকে লোপাট হাওয়ার পথে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। লিখেছেন ডঃ অমিতাভ আইচ।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর করোনা টাস্ক ফোর্স নোভেল করোনা ভাইরাস যার পোশাকি নাম সারস কোভিড ২, তার প্রতিষেধক (প্রোফাইল্যাকটিক ইউজ) হিসাব বিতর্কিত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার শুরু করার নির্দেশ জারি করল। গতকাল, ২৩ মার্চ এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে, যা সংস্থার ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে, এ খবর জানানো হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে আপাতত সব চেয়ে বিপদের মধ্যে যারা আছেন, অর্থাৎ, নোভেল করোনা ভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা করছেন যে সব স্বাস্থ্যকর্মীরা, বা ল্যাবরেটারিতে যে সব রোগীদের কোবিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে, তাদের বাড়ির লোকেদের বিশেষ জরুরি অবস্থায় এই ওষুধ নির্ধারিত মাত্রায় দেওয়া যেতে পারে। এবং এই ওষুধ শুধুমাত্র একজন রেজিস্ট্রার্ড মেডিকেল প্র্যাকটিশনরের মারফতই দেওয়া যেতে পারে। তারা এও বলেছে যে এর অর্থ এই নয় যে এর ফলে এই স্বাস্থ্যকর্মী বা করোনা আক্রান্ত বাড়ির লোক বা যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছে তারা যাবতীয় বর্তমান সতর্কতা বিধি (যথা দূরত্ব রাখা, হাত ধোওয়া বা মাস্ক পড়া বন্ধ করে দেবে বা যেখানে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে) মানবে না। নির্দেশিকা বারংবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ওষুধ নিয়ে কেউ যেন মনে না করেন তিনি নিশ্চিন্ত হয়ে গেলেন, বরঞ্চ কোনোরকম উপসর্গ দেখা দিলেই তিনি প্রেসক্রিপশন যিনি করেছেন সেই ডাক্তারের সাথে বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাথে যোগাযোগ করবেন। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে এই ওষুধ ১৫ বছর বা তার নীচের বয়সের কোনও ছেলে বা মেয়েকে দেওয়া যাবে না, দেওয়া যাবে না কিডনির অসুখে ভুগছেন এমন রোগীদের বা যাদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা ওই জাতীয় ওষুধে এলার্জি আছে। নির্দেশিকায় আগে বর্ণিত দুই ধরনের ব্যক্তিদের কী মাত্রায় এই ওষুধ দেওয়া হবে তা স্পষ্ট লিখিত আছে।
এই নির্দেশনা থেকে এটা স্পষ্ট নয় যে সব রোগী এখনই করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসারত, তাদের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে কিনা।স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে হঠাৎ এই নির্দেশিকা কেন? আর এবিষয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ কী করছে? প্রকৃত অর্থে বিষয়টি নিয়ে কোনও স্পষ্ট রূপরেখা বা নীতি কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। চিন, ইতালি ও ফ্রান্সে কিছু ব্যবহার হয়েছে, এবং যারা ব্যবহার করেছেন তারা বলেছেন, তারা প্রত্যেকেই বলছেন এই ওষুধ ব্যবহারে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার মাত্রা বহুগুণ কমে যায়, এমনকি নির্মূল হয়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়ে সব বিশেষজ্ঞরা একমত নন। বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে, যখন ক্রমাগত বিষয়টাকে অস্বীকার করতে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনও উপযুক্ত প্রমাণ ও কারণ ছাড়াই ঘোষণা করে দেন যে, আমেরিকার ফেডারাল ড্রাগ এজেন্সি (এফ ডি এ) নাকি করোনার চিকিৎসায় ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে অনুমোদন করেছে (এফ ডি এ পরে তা অস্বীকার করে)। গত ২৩ মার্চ নাইজেরিয়ার স্বাস্থ্য দপ্তরকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা সি এন এন জানায়, নাইজেরিয়ায় বিপুল লোক অতিরিক্ত ক্লোরোকুইন খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, সরকার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
নতুন করে শিরোনামে
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ থেকে ম্যালেরিয়া নিরোধক হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া ক্লোরোকুইন ও হাই্ড্রক্সিক্লোরোকুইন প্রথম আবার নতুন করে খবরের শিরোনামে আসে যখন চিন ও ফ্রান্সের কতিপয় ডাক্তার ও হাসপাতাল এর সাফল্য দাবি করে করোনা ভাইরাসের আক্রমণের চিকিৎসায়। চিকিৎসা সংক্রান্ত বিখ্যাত ওয়েব পোর্টাল মেডস্কেপ এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটির মতে ম্যালেরিয়া ও রিউম্যাটিক আর্থারাইটিসের মতো রোগে ব্যবহৃত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে প্রথমবার নতুন করে সংবাদ শিরেনামে আনেন ফ্রান্সের মার্শেলির সংক্রামক রোগের চিকিৎক ও “আই এচ ইউ মেডিটেরানি ইনফেকশন” হাসপাতালের অধ্যাপক দিদিয়ে রওল্ট। তিনি ২৪ জন রোগীর উপর এটি পরীক্ষা করেন ও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার সফলতা একটি ইউটিউব ভিডিওতে প্রকাশ করেন ও পরে জার্নালেও প্রকাশিত হয়। স্বাভাবিক ভাবেই খুব কম জন রোগীর উপর ডবল ব্লাইন্ড ফোল্ডেড র্যান্ডমাইজ্ড ক্লিনিকাল ট্রায়ালের নিয়ম না মেনে করা এই পরীক্ষার তথাকথিত সাফ্যলের বিষয়টাকে সারা পৃথিবীর বিশেষ করে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা বিশেষ পাত্তা দেননি। কিন্তু চীনের বেজিং স্থিত পিকিং ইউনিভার্সিটি থার্ড হাসপাতালের একদল গবেষক পরে পরীক্ষাগারে এই ওষুধের সাফল্য দাবি করেন। তাদের এই গবেষণা ক্লিনিকাল ইনফেকশাস ডিজিজ নামক একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয় গত ৯ মার্চ। এর পরে চীন দেশ থেকে আরেকটি এরকম গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত কম নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার কারণে এগুলিকে বিশেষ আমল দিতে চান না। এর পরে একই রকম কিছু সাফল্যের খবর আসতে থাকে ফ্রান্স থেকে, সেখানে ও পৃথিবীর বহু দেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন কম্বিনেশন ড্রাগের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করা শুরু হয়ে যায়। বিক্ষিপ্ত সাফল্যের খবরও জমা হয়। বিতর্ক না কমলেও বা পৃথিবীর তাবৎ বড় মাপের বিশেষজ্ঞরা তেমন বড় সার্টিফিকেট না দিলেও মিডিয়ার দৌলতে বিষয়টি ভালই প্রচার পায় ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কিছুদিন আগে বলে ফেলেন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন হল, “গেম চেঞ্জার, আই ফিল গুড এবাউট ইট।” কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ডোজ এত অতিরিক্ত মাত্রায় দিতে হবে যে এর মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, এবং বিশেষ করে হার্টের ও কিডনির অসুখে যারা ভুগছেন তাদের এই ওষুধ দেওয়াই যাবে না। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার সোসাইটি ফর ক্রিটিকাল হেলথ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে ক্লোরোকুইন বা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে কোভিড ২০১৯ গভীর ভাবে আক্রান্ত রোগীদের উপর প্রয়োগ করার পক্ষে তাদের কাছে কোনও যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সি ডি সি) পরিষ্কার বলছে যে এখনও পর্যন্ত সারস কোবিড২ বা কোভিড-১৯ এর রোগীদের ট্রিটমেন্টের জন্য আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ প্রেসক্রিপশন করছে না। সিডিসি তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে এখন সারা পৃথিবীতে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়ার জন্যে যে ওষুধগুলো নিয়ে ট্রায়াল চলছে, তার মধ্যে এই দুটিও আছে, কিন্তু কোনও সুনির্দিষ্ট সর্বজনগ্রাহ্য ডবল ব্লাইন্ড ফোল্ডেড র্যান্ডমাইজড ক্লিনিকাল ট্রায়ালের মাধ্যমে তৈরি হওয়া এবং সবাইকে জানানোর মতো এই ওষুধ গুলির কোনও নির্ধারিত মাত্রা তাদের কাছে নেই। তবে চিকিৎকরা সেটি নিজেদের মতো ব্যবহার করছেন এটা তারা স্বীকার করছেন। সিডিসি যে ওষুধগুলোকে কোবিড-১৯ এর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে বলেছে তার মধ্যে অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভির ও আছে, যা আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের ক্ষেত্রে তেমন ভাল কাজ করেনি কিন্তু গবেষণাগারে কোভিড -২ ও সারস করোনার ভাইরাসগুলির উপর খুবই আশাপ্রদ ফল দিচ্ছে, সাথে রিটোনাভির, লপিনাভির নামক দুটি এইডস ভাইরাস বিরোধী ওষুধের কথাও আছে।
কী বলছে হু:
এ বিষয়ে কী বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’, বিজ্ঞান গবেষণা সক্রান্ত ওয়েব পোর্টাল সায়েন্স জানাচ্ছে কোবিড-১৯ এর দুনিয়াজোড়া সংক্রমণকে ঠেকানোর জন্য ‘হু’ নজিরবিহীনভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে এই রোগের যাবতীয় যতো ওষুধ নিয়ে কাজ হয়েছে তার সম্পর্কে সঠিক ও বড়মাপের তথ্য সংগ্রহের ( হু-এর কথায় It’s an unprecedented effort—an all-out, coordinated push to collect robust scientific data rapidly during a pandemic) ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে যার নাম তারা দিয়েছে ‘সলিডারিটি’। ‘হু’ এই পরীক্ষায় উপরে বর্ণিত সবকটি ওষুধই আছে সাথে আছে রিটোনাভির, লপিনাভির ও ইনটারফেরন বিটা নামক তিনটি ওষুধের একটি সমন্বয়। হু- এর বক্তব্য নতুন ওষুধ বা ভ্যাকসিন আসতে অনেক সময় লাগবে আর তাই এমন কোনও ওষুধ বা ওষুধের কম্বিনেশন তারা খুঁজছে, যা মোটের উপর নিরাপদ, যেগুলি অন্য রোগে ব্যবহৃত হচ্ছে কিন্তু যা এখনও এই রোগে অ্যাপ্রুভড নয় কিন্তু গবেষণাগারে সারস করোনা ভাইরাসের উপর ভাল ফল দিয়েছে বা এমন ওষুধ যা ভাইরাসের সংক্রমণের হার ও গতি কমাতে পারে, যেগুলিকে সংক্রামিত কোনও রোগীই শুধু নয়, যে সব স্বাস্থ্যকর্মীরা ও রোগীর আত্মীয়স্বজন এই রোগীদের সংস্পর্শে আসবে তাদেরকেও সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাবে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্যে ডাক্তারকে রোগীর যাবতীয় তথ্য ও তার কাছে কী কী ওষুধ আছে বলতে হবে, সাথে রোগীর অনুমতিও লাগবে। এর উপর ভিত্তি করে তাকে যে কোন এক ধরনের ওষুধ দেওয়া হবে। এখন অনেকে বলছেন এটা তো ব্লাইন্ড ফোলডেড হল না, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে গোল্ডেন স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়, এর ফলে রোগী যেহেতু জেনে যাচ্ছে পুরো বিষয়টা তার ফলে তার উপর “প্লেসবো এফেক্ট” হতে পারে, মানে ওষুধে নয়, ওষুধ পড়েছে এই ভাবনাতেই রোগী হয়তো ভাল হয়ে গেল। কিন্তু “হু” বলছে তারা এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানের বন্ধুর পথ আর গতির মধ্যে ব্যালেন্স আনতে চাইছে। “হু” বলছে তারা রেকর্ড টাইমের মধ্যে এই কাজ করতে চাইছেন। ওদিকে ফরাসি বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ এজেন্সি ‘ইনসার্ম’ ও জানিয়েছে যে তারাও গোটা ইউরোপে ‘হু’ এরই মতো একটি ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করবে, যাতে সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ৩২০০ রোগীর উপর পরীক্ষা করা হবে, যার মধ্যে ৮০০ জন ফ্রান্সের। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইনসারম তাদের এই পরীক্ষা থেকে ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে বাদ দিয়েছে। ওদিকে সায়েন্সের ওয়েব পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী ‘হু’ প্রাথমিক ভাবে তাদের পরীক্ষা থেকে ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে বাদই দিচ্ছিল, পরে গত ১৩ মার্চ জেনিভাতে একটি মিটিঙে তারা এটি পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় কেননা সারা পৃথিবী নানা জায়গা থেকে ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনকে কোভিড ২০১৯ এর প্ব্রতিষেধক বা চিকিৎসায় ব্যবহার নিয়ে নানান কথা আসতে থাকে। মনে করা হয় ক্লোরোকুইন কোষের ক্ষারত্ব বাড়িয়ে দিয়ে ভাইরাসের মোকাবিলা করে, কিন্তু সব বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত নন। এদিকে জেনিভার সন্মেলনে যে সব চিনা বিশেষজ্ঞ এসেছিলেন তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সংখ্যক এই বিষয়ক তথ্য না পাওয়ার অভিযোগও শোনা গেছে। বিষয়টা অনেক সহজ করে দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোরনিয়ার ডঃ ডেভিড স্মিথ। তিনি বলেছেন, আমাদের ক্লোরোকুইন গ্রুপ নিয়ে তথ্য চাই কেননা, যে পাগলামি শুরু হয়েছে তাতে যাদের এই ওষুধটা বেশি দরকার সেই ম্যালেরিয়া আর রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের রোগীরাই এই ওষুধটা আর পাবে না।
বস্তুত পাগলামি শুরু হয়ে গেছে দেশেও। গত কয়েকদিনে গুগল ট্রেন্ড ডেটা অ্যানালাইসিস করে দেখা গেছে যে গত কয়েকদিনে ইন্টারনেটে রেকর্ড পরিমাণ লোক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বলে সার্চ দিয়েছেন। সব চেয়ে বেশি সার্চ হয়েছে মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর ও দিল্লি থেকে। এদিকে হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে ভুল খবর ছড়িয়ে পড়ায় ওষুধের দোকান থেকে লোপাট হয়ে যেতে শুরু করেছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কেননা লোকে মাস্ক, স্যানিটাইজার, মদ, মাংস, চাল আর আলুর মতোই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও মজুত করতে শুরু করেছে।
অতঃপর
প্রশ্ন হল এমন একটা বিতর্কিত ওষুধের ব্যবহার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসংস্থাটি কেন করতে গেল। আবার করবেই যদি তাহলে তার নোটিফিকেশন কি ওয়েব সাইটে দেওয়া বাধ্যতামূলক? আর তা ভাইরালই বা করল কারা? এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি। তবে কি সরকার স্বাস্থ্য কর্মীদেরই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে নামিয়ে দিল, ‘হু এর ছাড়পত্র আসার আগেই, আর তার দায় পুরো চাপিয়ে দিল যে সব প্রফেশনাল ডাক্তাররা আছেন তাদের উপর? কেননা প্রেসক্রিপশন তো তারাই করবেন। যদিও যাদেরকে এই ওষুধ দেওয়া হবে তাদেরকে কড়া নজরদারির মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওদিকে ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ যে লোপাট হচ্ছে সে দায় কে নেবে? কোনও উত্তর মেলেনি। হয়তো স্বাস্থ্য কর্তারাই এর সঠিক জবাব দিতে পারবেন। জানা নেই।
সূত্রঃ
১. https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/hcp/therapeutic-options.html
২) https://www.medscape.com/viewarticle/927033
৩) https://www.sciencemag.org/news/2020/03/who-launches-global-megatrial-four-most-promising-coronavirus-treatments
৪) https://edition.cnn.com/2020/03/23/africa/chloroquine-trump-nigeria-intl/index.html
লেখক: সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট সংস্থার সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রোগ্রাম)।