নীচের লেখাটি চৌঠা মে’র ইস্তাহার নামে পরিচিত। কে বা কারা লিখেছেন জানা যায় না। গতবছর, অর্থাৎ ২০১৮-র মে মাস নাগাদ, ১৯১৯-এর ঐতিহাসিক মে আন্দোলনের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে লেখা এই ইস্তাহার চীনা ইন্টারনেটে আসে, এবং দ্রুত মিলিয়ে যায়। ইয়ং পাইওনিয়ার সংগঠনটি চীনা কমিউনিস্ট দলের যুব সংগঠন, কিন্তু এই লেখা কোনও অবস্থাতেই সে সংগঠনের নয়। সম্ভবত পিকিং (বেইজিং) বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্ক্সপন্থী সমিতির সদস্যদের লেখা এই ইস্তাহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে গঠিত এই সমিতির সদস্যদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চলেছে বলে শোনা যায়। তাঁদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়, তার পর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ। বাড়াবাড়ি করলে সমিতি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে, হয়তো বন্ধ করে দেওয়াও হয়েছে ইতিমধ্যে। এসব ঘটনা মূলত ২০১৮-র, এখন কীএই অবস্থা, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট খবর নেই। বর্তমান লেখাটি, ইংরেজিতে নিউ লেফট রিভিউ পত্রিকা‘র মার্চ–জুন ২০১৯ সংখ্যায় প্রকাশিত।
লেখাটি থেকে হালফিলের চীনের অবস্থা বোঝা যায়। চীনে পুঁজিতন্ত্র জাঁকিয়ে বসেছে, এটা এখন আর খবর নয়। সেখানে মতপ্রকাশের বা প্রতিবাদের স্বাধীনতা নেই, এও জানা। যা জানা নেই, তা হচ্ছে প্রতিবাদের, প্রতিরোধের কথা –চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে, চীনা সমাজের বিভিন্ন অংশে ঘটতে থাকা ছোটবড় আন্দোলনের কথা। এই লেখাটির বিশেষ গুরুত্ব সে কারণেই। এই ইস্তাহার চীনা সমাজের অন্দরমহল থেকে উঠে আসা পুঁজিতন্ত্র-বিরোধী রাষ্ট্র-বিরোধী দীর্ঘমেয়াদি বিপ্লবের ডাক।
লেখাটি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন আরোহণ বল।
চৌঠা মে‘র ইস্তাহার
লাল নিশান, লাল পতাকা, লাল কার্পেট। রক্তিম দেখাচ্ছে গ্রেট হল অফ চায়না’র অভ্যাগতদেরও। মাথা তুললে দেখা যাবে, ১৯১৯-এর চৌঠা মে’র আন্দোলনের শতবর্ষে গমগমে স্মরণসভা।
ঠিক এ মুহূর্তে, যুব দিবসের দিনেই, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন প্রগতিশীল শিক্ষার্থী আটক, বিনা কারণে।
স্মরণসভায় ওরা গাইছে, “লড়াই ক’রেই মিলবে জাতির নতুন জীবন”, মাথার ওপরে স্লোগান লেখা নিশান, “সাগ্রহে লেখো, চীনা জাতির নবজন্মে মহতী সাম্য-স্বপ্ন দেখতে শেখানো তারুণ্যের অবদান।” বুঁদ হয়ে বসে শুনছে কমবয়েসিরা। অধীর হুজুগে খাতায় টুকছে সাধারণ সম্পাদকের মুখনিঃসৃত প্রত্যেকটা শব্দ।
অথচ মাত্র দিন দুই আগে, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে শিক্ষার্থীদের ফেলে মারা হয়েছে। পেছনে হাত মুড়ে বেঁধে, পুলিশ ভ্যানে হিঁচড়ে তোলা হয়েছে, লাথানো, পেটানো হয়েছে।
গতকালই, সকাল আটটা-ন’টার সূর্য সাক্ষী রয়েছে ছ’জন শিক্ষার্থীর বেপাত্তা হয়ে যাওয়ার। ওদের গলার আওয়াজ শেষবার পাওয়া গেছে মা-বাবার সাথে টেলিফোন কথোপকথনে, চাপা চিৎকার, “খারাপ খবর, পুলিশে ধরেছে”।
ওরা আইন-ভাঙা-দুষ্কৃতী নয়। ওরা মার্ক্সীয় চিন্তার অনুগামী, আসন্ন চার-ই মে আর আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে মেহনতী মানুষের লড়াইয়ে যৌবনটুকু সমর্পণ করতে চেয়েছে।
গ্রেট হলের ভেতরটা অত্যুজ্জ্বল, প্রশস্ত, আর অভ্যাগতরা সম্ভ্রম জাগানো পোশাক পরিহিত আর পুরোনো, গেঁজে যাওয়া কিছু শব্দে মোহাবিষ্ট, যথা ‘যৌবন, সময়, অঙ্গীকার’ ইত্যাদি। হলের বাইরে যদিও, যেকোনো ‘আন্দোলন’ নিষিদ্ধ। ‘সর্বসাধারণের শৃঙ্খলাভঙ্গ’র দায়ে জড়ানোর দোহাই দিয়ে অনুমোদন রয়েছে শুধু খেলা দেখার।
চৌঠা মে-র এই উৎসবের দিন আজ অশ্লীল হয়ে উঠেছে। উৎসবের হুজুগটাই অবজ্ঞার, অপবিত্রতার। আর আমরা না লড়লে, মে মাসের এই চার তারিখের আসল নিশানটাই কলঙ্কিত হয়ে পড়বে, অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
২|
একশো বছর আগে, এই দিনে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার, স্বদেশদ্রোহীদের দূর করার লড়াইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বয়কট করেছিল, শ্রমিকরা ধর্মঘট, ব্যবসায়ীরা বন্ধ ডেকেছিল। আর দিকে দিকে সাধারণ মানুষ ঝাঁপিয়েছিল জাপানি পণ্যদ্রব্য বর্জনের মাধ্যমে উত্তাল বিক্ষোভে, প্রতিবাদে, যা দেশজোড়া দাবানলের রূপ দিয়েছিল সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী, সামন্ততন্ত্র-বিরোধী এই আন্দোলনকে। এই আন্দোলন প্রকৃত অর্থেই গণ-বিস্ফোরণ। এই আন্দোলনে চীনা মেহনতী শ্রেণি প্রথমবার স্বাধীন শক্তি হিসেবে ইতিহাসে পা-রাখল। প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী ও মেহনতী মানুষের মধ্যে সংহতির গৌরবময় পরম্পরা সেই শুরু।
এই আন্দোলন অধঃপতিত পুরোনোকে ঝেঁটিয়ে সাফ করেছিল, বদলে এনেছিল তাজা, নতুন চিন্তা। সাংস্কৃতিক দিক থেকে, গণতন্ত্র, বিজ্ঞান, মুক্তি, সাম্যের নতুন চিন্তায় চুরমার করেছিল সামন্ত প্রথার স্বৈরাচারী, নীতিভ্রষ্ট, অত্যাচারী, ভেদবাদী অস্তিত্বকে। রাজনৈতিকভাবে, সামাজিক সাম্য, মুক্তির লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রী পথের দাবিতে মুখর শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সাধারণ জনতার উপস্থিতিতে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ও সামন্ততন্ত্র-বিরোধী শিবিরের কলেবর বেড়েছিল। চীনে মার্ক্সীয় চিন্তার প্রসার ও চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির (সিপিসি) প্রতিষ্ঠা এরই ফলশ্রুতিতে। ফিরে দেখলে, সেই যুদ্ধ-ঘোষণা আজ ইতিহাস। মাঝখানে এসে পড়েছেএকশোটা বছর।
শতবর্ষ পরে, ইতিহাসের চাকা গড়িয়েছে, চীনে স্বর্গ-মর্ত্য কাঁপানো বদল ঘটে গেছে। চৌঠা মে আন্দোলনের তিরিশ বছর পর –বিপ্লব জিতে গেল। নতুন চীনে সমাজতন্ত্রের নির্মাণ হল। স্বপ্ন সত্যি হল বিগত প্রজন্মের।
অথচ মে মাসের এই চার তারিখ আন্দোলনের ষাট বছর পরে, পার্টির মধ্যে একদল ক্ষমতালিপ্সু পুঁজির দালাল সমাজতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ‘বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধা’-র কথা বলে তারা শেষমেশ বেড়ালের (পুঁজির) হাতই ধরল, পুঁজিপতিদের আরও মুনাফা কামাতে সাহায্য করল।
মুক্তদ্বার নীতি (ওপেন ডোর পলিসি) প্রণয়নের পর থেকে গত চল্লিশ বছরে, চীন তথাকথিত উন্নয়নী বাজার অর্থনীতির এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বুলেট গতিতে ছুটেছে, ঘটিয়েছে সারা পৃথিবীকে চমকে দেওয়া ‘চীনা ম্যাজিক’, তারই সঙ্গে সমাজে তৈরি করেছে অগণিত, সীমাহীন সঙ্কট-কুণ্ডলী।
বাজার অর্থনীতির পরিচালনায় ক্ষমতা ও অর্থ হাতে হাত মিলিয়েছে। সরকারি আমলারা জনসাধারণের সেবক থেকে হয়ে উঠেছে জনসাধারণের মালিক। সংস্কার যুগের ‘বসন্তবাতাস’ ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্যকে চূড়ান্ত সীমায় ঠেলে দিয়েছে। জনসংখ্যার মাত্র ০.৪% মোট সামাজিক সম্পদের ৭০%-এর মালিক। চীনের সবচেয়ে বড়লোক তিনজনের সম্পত্তি প্রায় ৮০০ বিলিয়ন আরএমবি (রেনমিনবি)।
‘দেশের নিয়ন্ত্রক’ থেকে ‘রক্ত-ঘামের ক্রীতদাস’ হয়েছেন শ্রমিকরা। তাঁরা ঘুপচি ঘরে মাথা গুঁজে থাকেন, আচার আর ভাপানো রুটি খান, ঠুনকো ‘সেফটি’ হেলমেট পরে সারাজীবন হাড়ভাঙা খাটুনি খাটেন, উপার্জন শরীরে বাসা বাঁধা রোগ-জ্বালা,প্রতিটা অঙ্গে।
অর্থ কিনে নিতে পারে জ্ঞানকেও, জীবনের সওদা করতে পারে, আত্মপরিচয়সহ আস্ত ব্যক্তিকেই দাঁড়িপাল্লায় চাপাতে পারে অর্থ। চিন্তা-অনুভবে দখলদারি, মতামত প্রকাশে কড়া নজরদারি, ওদিকে সামন্ততান্ত্রিক ভাঁওতা, বুজরুকি আর গোলামি মূল্যবোধ — “ছেলেরা সমান আকাশের আর মেয়েরা সমান মাটির”, অথবা, রাজা-মন্ত্রী/বাপ-ব্যাটা সম্পর্কের তারতম্যপুষ্ট মাথাভারী ক্ষমতাতান্ত্রিক কনফুসীয় বিশ্বাস, সবেরই পুনর্ভব হচ্ছে।
সর্বত্র দেখা যাবে লাল পতাকা। কিন্তু অবস্থাটা আসলে ১৯৪৯-এর আগে ক্যুওমিনতাং পার্টি-শাসনভুক্ত অঞ্চলে বসবাস করার মতো। শ্রমিকরাই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে ম্যাজিক ঘটিয়েছেন।অথচ সব ক্ষমতা আর সম্পদ কুক্ষিগত করেছে সুবিধাভোগী শ্রেণি। তাহলে কার পুনরুজ্জীবন, কার ‘নবজন্ম’ ঘটল? কার ‘উত্থান’ হল?
এটা চীনা জনমানুষের পুনরুজ্জীবন নয়। এটা বুর্জোয়া শ্রেণির পুনরুজ্জীবন। এটা সমাজতন্ত্রী চীনের উত্থান নয়। এই উত্থান নতুন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির।
৩|
আজকের দিনে চৌঠা মে-র অন্তরাত্মার জাগরণের পথে, গণতন্ত্র ও প্রকৃত বিজ্ঞানচেতনার উন্মেষের পথে সবচেয়ে বড় বাধা আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়া শ্রেণি।
চীনা সমাজের অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা এই আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়া শ্রেণি।
চীনা মেহনতী মানুষের সবচাইতে বড় শত্রু আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়া শ্রেণি।
উদ্বৃত্ত মূল্য (উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়মূল্যের সাথে ওই পণ্যদ্রব্য তৈরি করে মজুর যে মজুরি পায় তার ফারাক) বাগিয়ে নিতে শুধু শ্রমিকদের প্রত্যক্ষ শ্রম শোষণ করেই এই বুর্জোয়া শ্রেণি ক্ষান্ত হয় না, এদের শোষণ চলতে থাকে বাসস্থান, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদির বাজারিকরণের মাধ্যমেও। একইসঙ্গে এই বুর্জোয়াতন্ত্র সামাজিক অভিমতকে, ভাবাদর্শকে নিজের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করে, লাগাতার প্রচার করে চলে কনফুসীয় ‘পরিবার প্রথা’, ‘নারীর মর্যাদা (রক্ষা)’ ও আরও নানা গোঁড়া সামন্ততান্ত্রিক ধ্যানধারণা। কোনও বিরুদ্ধস্বর ওঠা মাত্র তার গলা টিপে ধরা আর সমাজের প্রত্যেক অংশকে পুঁজির শাসনাধিকারে আনাই এর কাজ।
যে কোনো শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবেই।
ত্রিশ বছর আগের এক বসন্তে ও গ্রীষ্মে, প্রগতিশীল কলেজ শিক্ষার্থীদের মিছিল এগিয়ে গিয়েছিল তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারের দিকে। আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে, সংস্কার যুগের প্রথম দশ বছরে বেড়ে যাওয়া দুর্নীতি ও ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে, সরকারি মুনাফাবাজি আর বিদ্রোহী স্বর রুদ্ধ করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। চীনের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে, আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, গণতন্ত্র, প্রকৃত স্বাধীনতা, বিজ্ঞানচেতনা ও ন্যায়ের অনুশাসন। আন্দোলনের শুরুয়াত বেজিঙের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হলেও দেশজোড়া লক্ষাধিক শিক্ষার্থীদের সমাবেশে, লাখো বেজিংবাসীর যোগদানে এই আন্দোলন ফেটে পড়েছিল। এর অগ্রগামী তাৎপর্য ও ঐতিহাসিক প্রভাব অনস্বীকার্য।
তা সত্ত্বেও, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পথে মূল বাধা যে পুঁজিবাদী শোষণযন্ত্রটাই। তাই পুঁজিবাদী মূল্যবোধ অতিক্রম করে সমাজতন্ত্র অভিমুখে যাত্রা না করলে গণতন্ত্র ও মুক্তির প্রশ্নে সদর্থক দিশা পাওয়া যাবে না।
তাই আজকের তরুণদের সামাজিক কর্তব্য কী?
‘নবজীবন লাভ’, ‘জাতীয় শক্তিবৃদ্ধি’ ইত্যাদি ফাঁকা বুলি আওড়ানো নয়। কর্তব্য গণতন্ত্র, বিজ্ঞানচেতনা ও সাম্যের পথে হেঁটে সামাজিক চৈতন্য নির্মাণ, দারুণ শক্তিশালী পুঁজিদানবের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে জীবন সমর্পণ। এই পথেই আজকের তরুণসমাজ উপলব্ধি করবে যে, ‘চীনের মুক্তির জন্য মার্ক্সীয় চিন্তা অপরিহার্য’।
এই ‘আন্দোলন’ জব্দ হবে না, চুপ করবে না। দমিত হয়ে গ্রেট হলের ভেতরে সেঁধিয়ে পড়বে না। যে শিক্ষার্থীরা হুবেই প্রদেশে তিআনমেনে বিক্ষোভ জানাতে গিয়েছিল, যারা নানজিঙে ভাড়াটে গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে লড়ছে, অগণিত অন্যান্যরা যারা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মুখর, তাদের নিয়েই আজকের যৌবন জলতরঙ্গ। তাদের মধ্যেই জ্বলছে চৌঠা মে-র আগুনলহর অন্তরাত্মা।
আজকের তরুণদের শুধু ক্যাম্পাস-গণতন্ত্রের লড়াইতেই থামলে চলবে না; শিল্পাঞ্চলে, মফঃস্বল অঞ্চলে, ব্যাপক সমাজজীবনের ময়দানে পৌঁছতে হবে। এই তরুণদের শুধু স্বৈরতন্ত্র-বিরোধী লড়াইতেই থামলে চলবে না। শ্রমিক-কৃষক জনমানুষের প্রতিটি লড়াইয়ের সংহতিতে থাকতে হবে, প্রত্যক্ষ অংশ নিতে হবে সেই লড়াইয়ে, অংশ হয়ে উঠতে হবে বৃহত্তর সংগ্রামী ঐক্যের।
প্রতি মুহূর্তে মনে রাখতে হবে – যে নতুন সমাজের জন্য আমাদের লড়াই, তার হাল ধরা আছে শ্রমজীবী মানুষের হাতে, সেখানে অধীনতা শুধু জীবনের প্রতি, সে সমাজ শ্রেণিগত শোষণ-পীড়নকে উৎখাত করবে, খুঁজবে সাম্য আর মুক্তি, সেখানে ক্রমবিকাশ প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। এই লড়াই অনায়াস নয়, বরং কঠিন ও দীর্ঘ। তাই লড়াই চলবে হাতে হাত রেখে, একসাথে। অন্ধকার, মেঘ, কুয়াশার ঘনঘটা দূর হবে একদিন। কোনোকিছুই অসম্ভব নয়।
Cover Image: Students attend a Youth Day celebration at Nanchang Middle School, May 4, 2011, Shenyang, Liaoning province. The celebration commemorates the beginning of the May Fourth Movement (1919). VCG/Getty Images.
Article is helpful