সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় দু’ধাপ নীচে নামল ভারত, দায়ী মোদীর ‘ট্রল ব্রিগেড’: আরএসএফ রিপোর্ট


  • May 2, 2018
  • (0 Comments)
  • 3975 Views

বিশ্ব জুড়ে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে শাসকের আক্রোশ বেড়ে চলেছে। আমাদের দেশ তার ব্যতিক্রম নয়। ‘প্রেস ফ্রিডম ইন্ডেক্স’ অনুযায়ী ২০১৮ সালে ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক গত বছরের তুলনায় দু’ধাপ নীচে নেমেছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে এ দেশের স্থান ১৩৮। ৩ মে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’। তার প্রাক্কালে ভারতের হালহকিকত নিয়ে একটি রিপোর্ট।

গ্রাউন্ডজিরো: ক্ষমতাকে সত্যি কথাটা শোনানো-ই সাংবাদিকের কাজ। অন্যথা হলে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। কিন্তু, কোনোকালে কোনও দেশেই শাসক সত্যি কথাটা শুনতে পছন্দ করে না। তবে, মাত্রার তফাত ছিল। আছেও। মিলিটারি জুন্টা কিংবা স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যের অধিকার বলে কিছু হয় না। শাসক সমালোচনা কিংবা গণবিতর্ক সহ্য করে না। সাংবাদিকরা সাহসী হলে সেখানে কোতল হবে কিংবা জেলে পচবে। এটাই নিয়ম। গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে তুলনামূলকভাবে যেটুকু স্বাধীন পরিবেশ ছিল, সেই পরিসরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। বিশ্বের এমন বহু রাষ্ট্রই আর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংবাদমমাধ্যমকে গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়। ঘরে-বাইরে প্রায় সর্বত্রই একই হাল।

ছবি: আরএসএফ

মিডিয়া ওয়াচডগ ‘রিপোর্টার স্যানস ফ্রন্টিয়ারস’ (যা ‘রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার’ বলেও পরিচিত) বা আরএসএফ তার ২০১৮ সালের বার্ষিক রিপোর্টে, বিশ্বে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে জানাচ্ছে শুধুমাত্র স্বৈরাচারী দেশগুলিই নয়,” উত্তরোত্তর গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানরাও আর সংবাদমাধ্যমকে গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখতে চাইছে না। দেখছে প্রতিপক্ষ হিসেবে এবং খোলাখুলি তাদের বিরাগ, বিতৃষ্ণা প্রকাশ করছে।” শুধু তাই নয়, “রাজনৈতিক নেতারা খোলামেলা ভাবে সংবাদমাধ্যমের প্রতি এই শত্রুতাকে মদত দিচ্ছে।” সংস্থার মতে, ২০১৮ সালের স্বাধীনতা সূচকের অবনমন “সাংবাদিকদের প্রতি এই ক্রমবর্ধমান বৈরিতার প্রতিফলন।”  রিপোর্টে আক্ষেপ করা হয়েছে, সাংবাদিকতার স্বাধীনতার প্রশ্নে বর্তমানে যত দেশ কালো অংশভুক্ত অর্থাৎ ‘খুব খারাপ’ বলে চিহ্নিত হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি। শতাংশের হিসেবে তা ১২ শতাংশ। ‘খারাপ’ ২৭ শতাংশ। ‘সংকটাপন্ন’ ৩৫ শতাংশ, ‘মোটামুটি ভালো’ ১৭ শতাংশ এবং ‘ভালো’ মাত্র ৯ শতাংশ দেশ। বিশ্বের অন্যতম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ বলে কথিত আমেরিকাও ফের দু’ধাপ নীচে নেমেছে। তার স্থান এখন ৪৫। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই অবনতি। উঠতে বসতে মিডিয়াকে গাল দিতে অতি উৎসাহী ট্রাম্প তো সাংবাদিকদের ‘এনিমি অব দ্য পিপল’ বা ‘গণশত্রু’ বলেও চিহ্নিত করেছেন। বিজেপি’র এক কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিকদের অপমান করতে আবিষ্কার করেছেন এক নতুন শব্দ ‘প্রেস্টিটিউট’।

ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইন্ডেক্স অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১৩৩ তম। ২০১৭ সালে তিনধাপ নেমে স্থান হয় ১৩৬। ২০১৮ সালে আরও দু’ধাপ নামার পর এখন ১৩৮। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’র পরিসংখ্যান থেকে জানতে পারছি, ১৯৯২-২০১৬ সাল পর্যন্ত ২৪ বছরে এ দেশে ৭০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে খুন হন ন’জন। ২০১৭ সালেই খুন হয়েছেন ত্রিপুরার সুদীপ দত্ত ভৌমিক ও শান্তনু ভৌমিক, উত্তর প্রদেশের নবীন গুপ্তা ও কর্ণাটকের গৌরী লঙ্কেশ। ২০১৮ সালে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ সাংবাদিকেরই মৃত্যু-রহস্য পরিষ্কার হয় না। ২০১৭ সালে সাংবাদিক ও সম্পাদক গৌরী লঙ্কেশেকে গুলি করে খুন করে হিন্দুত্ববাদীরা। দলিতদের পক্ষে দাঁড়ানো, উগ্র হিন্দুত্বের সমালোচনা, নারী স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করার অপরাধে বহুদিন ধরেই হিন্দুত্ববাদীরা তাঁর উপর খড়্গহস্ত ছিল। এই ঘটনায় সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যদিও, মুক্তমনা বুদ্ধিজীবী হত্যা আগেই শুরু হয়েছিল। ২০১৩ সালের আগস্টে জাতপাতবিরোধী সামাজিক কর্মী ও নাস্তিক নরেন্দ্র দাভোলকরকে হত্যা করে হিন্দুত্ববাদীরা। ২০১৫ সালে খুন হন উগ্র হিন্দুত্বের সমালোচক গোবিন্দ পানসারে এবং প্রথিতযশা পণ্ডিত এম এম কালবুর্গি। ভারতে যুক্তি, মুক্তবুদ্ধি, উদারতার যে আর কোনও স্থান নেই, একের পর এক হত্যাকাণ্ডে সে কথাই যেন বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে হত্যাকারীরা। স্বাভাবিক ভাবেই ছাড় মেলেনি সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের। একের পর এক সাংবাদিককে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, খবর সরকারের ও কর্পোরেটের মন:পূত হয়নি বলে সরে যেতে হয়েছে হিন্দুস্তান টাইমসের সম্পাদক ববি ঘোষ, ইপিডব্লিউ’র সম্পাদক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা এবং দ্য ট্রিবিউনের হরিশ খারের মতো প্রবীণ সম্পাদককে।

২০১৬ সালে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১৩৩ তম। ২০১৭ সালে তিনধাপ নেমে স্থান হয় ১৩৬। ২০১৮ সালে আরও দু'ধাপ নামার পর এখন ১৩৮।

আরএসএফ ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অবনমনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পোষিত ভাড়াটে ট্রল সেনাদের’ প্রধানত দায়ী করেছে। সরকার, বিজেপি কিংবা গো-রক্ষা বাহিনীর মতো সংগঠনগুলির সমালোচনা করলেই তারা ”প্রায়শই অনলাইনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে হেট স্পিচ ব্যাপক ভাবে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিচ্ছে।” সামাজিক মাধ্যমে এই ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক প্রচার বা হেট স্পিচ, মিথ্যা সংবাদ বা ফেক নিউজ-এ এখন সমগ্র সমাজ-ই কমবেশি আক্রান্ত। যার প্রধান প্রচারক অবশ্যই সঙ্ঘ পরিবার। উল্লেখযোগ্য যে, ভারতে ৫৮ জন সাংসদ ও বিধায়ক ‘হেট স্পিচ’ মামলায় অভিযুক্ত। নির্বাচন কমিশনের কাছে করা এফিডেভিটেই তারা একথা লিখিত ভাবে জানিয়েছে। এই ৫৮ জনের মধ্যে ২৭ জনই বিজেপি’র সাংসদ ও বিধায়ক। এই তথ্য প্রমাণ করে বিদ্বেষ মূলক প্রচারে শুধু বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের ভাড়াটে সৈনিকরাই নয়, দলীয় নেতৃত্বও অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আরএসএফ তার রিপোর্টে পরিষ্কার করে জানাচ্ছে, “২০১৪ সালে, যবে থেকে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তবে থেকে ‘হিন্দু মৌলবাদীরা’ সাংবাদিকদের প্রতি অত্যন্ত হিংস্র ভাষা ব্যবহার করছে। শাসক দলকে বিচলিত করতে পারে এমন কোনও তদন্তমূলক প্রতিবেদন বা ‘হিন্দুত্ব’র সমালোচনা’ প্রকাশিত হলেই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়ে যায় তোড়ে গালিগালাজ এমনকি খুনের হুমকিও। আর এই হিংস্র প্রলাপকারীদের অধিকাংশই ‘প্রধানমন্ত্রীর ট্রল-সেনা’। সঙ্ঘ পরিবারের এই ‘হিন্দুত্ব’র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এই মতাদর্শ হিন্দু জাতীয়তাবাদকে প্রায় ফ্যাসিস্ত বাগাড়ম্বরের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।” সংস্থার মতে, এই লাগামছেঁড়া মৌখিক শাসানি এমন একজনকে মদত দিতে কাজে লাগছে যে নিজেকে ‘শক্তিমান’ বলে জাহির করে। সে এমন একজন নেতা যে, কোনও সাংবাদিক বা সম্পাদক তার কর্তৃত্বকে ছোট করে দেখাতে চাইলে, তা সহ্য করে না।

সাংবাদিকদেরও অভিযোগ মোদীর সমালোচনা করলেই তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে কিংবা একঘরে হতে হচ্ছে। মহিলাদের গণধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। খুনের হুমকি ও শাসানি শুনতে হচ্ছে অন্যান্য সাংবাদিকদেরও। সাম্প্রতিক সময়ে নিউজ ওয়েবসাইট দ্য কুইন্টের সাংবাদিক দীক্ষা শর্মা ও মহম্মদ আলি, সংবাদসংস্থা এএনআই-এর অভয় কুমার, ফার্স্টপোস্টের দেবব্রত ঘোষ, এনডিটিভি’র সোনাল মেহরোত্রা কাপুরকে এমনই হুমকির মুখে পড়তে হয়। ধারাবাহিক ভাবে চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার রানা আয়ুব, সাগরিকা ঘোষ, রভীশ কুমারের মতো নামজাদা সাংবাদিকরাও। না, তালিকা এখানেই শেষ নয়। আরএসএফ-এর রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এই হুমকির ফলে সংবাদমাধ্যমে ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ বাড়ছে। গ্রামীণ এলাকার সাংবাদিকদের অবস্থা আরও করুণ। তাদের না আছে নিরাপত্তা, না আছে ভালো বেতন। শারীরিক নিগ্রহ, মৌখিক শাসানি, অনলাইনে হেনস্থার উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে সাংবাদিকতার ক্ষেত্র বিষিয়ে ওঠার কারণেই ভারত আরও দু’ধাপ নীচে নেমে এসেছে।

১৯৯২-২০১৬ পর্যন্ত ২৪ বছরে এ দেশে খুন ৭০ সাংবাদিক। ২০১৫ থেকে ২০১৭র মধ্যে ৯। ২০১৮এ এখনো অবধি খুন ৩ জন।

ভারতের নীচে নামার আর এক কারণ কাশ্মীর। আরএসএফ রিপোর্টে কাশ্মীরকে ‘খবরের কৃষ্ণগহ্বর’ বলে বর্ণনা করেছে। একেই বিদেশি সাংবাদিকদের ভারতে আসার ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কাশ্মীরে যাওয়ার তো প্রশ্নই নেই। সম্প্রতি এক ফরাসি সাংবাদিককে গ্রেফতারও করা হয়। প্রতিনিয়ত সরকারি বাহিনীর রোষ ও হেনস্থার মুখে পড়তে হয় সাংবাদিকদের, বিশেষ ভাবে চিত্রসাংবাদিকদের। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মৌন সম্মতি’ আছে বলেই সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী সাংবাদিকদের হেনস্থা করতে পারে বলে মনে করে আরএসএফ। বার্ষিক রিপোর্টে অবশ্য আর কোনও রাজ্য সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়নি। তবে একথা বলাই যায় দেশের আর এক ‘খবরের কৃষ্ণগহ্বর’ অঞ্চল ছত্তিশগড়ের বস্তার। ২৯ এপ্রিল ছত্তিশগড়ের সাংবাদিক ও ভূমকাল সমাচার পত্রিকার সম্পাদক কমল শুক্লার বিরুদ্ধে ভারতীর দণ্ডবিধির ১২৪-এ ধারায় দেশদ্রোহীতার অভিযোগ এনেছে কাঙ্কের জেলার পুলিশ। অভিযোগ, কমল শুক্লা ভারতীয় বিচারবিভাগকে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে আপত্তিকর কার্টুন প্রকাশ করেছে।

সাংবাদিক কমল শুক্লা (ছবি: ফেসবুক)

জানা গিয়েছে, কার্টুনের বিষয় ছিল সিবিআই বিচারক বি এ লোয়ার অপমৃত্যু। কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই সেই মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেয়। প্রসঙ্গত, বিচারক লোয়ার মৃত্যুর জন্য বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের দিকে আঙুল উঠেছে। কমল শুক্লার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল খড়্গহস্ত ছত্তিশগড় সরকার ও পুলিশ-প্রশাসন। বস্তারে ভুয়ো সংঘর্ষে হত্যা, আদিবাসীদের উপর পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর নির্যাতন, সাংবাদিকদের হেনস্থার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে রিপোর্ট লেখার জন্য কমল শুক্লা সরকারের এক নম্বর না-পসন্দের সাংবাদিক। এর আগেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বস্তারে তাঁর প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে সোমারু নাগ ও সন্তোষ যাদব নামের দুই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে ছত্তীসগঢ় পুলিশ, মাওবাদীদের সাহায্য করার অভিযোগে। দুই সাংবাদিকের বক্তব্য অনুযায়ী এই অভিযোগ ভিত্তিহীন, এবং পুলিশের অত্যাচার নিয়ে রিপোর্টিং করার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। শুধু সাংবাদিকই নয়, বেলা ভাটিয়া, নন্দিনী সুন্দরদের মতো অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্ত্বিকরাও এখন বস্তারের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে পারেন না। সাজানো মামলা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধেও। এই মুহূর্তে অন্তত দশ জন স্থানীয় সাংবাদিক দেশদ্রোহীতার অভিযোগে অভিযুক্ত। ছত্তিশগড়ে ‘পত্রকার সুরক্ষা কানুন সংযুক্ত সংঘর্ষ সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা কমল শুক্লা অবশ্য জানিয়েছেন, “গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য আমি কলম চালিয়ে যাব।”

ঘরের দিকে তাকালেও অবশ্য আমরা একই ছবি দেখতে পাব। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্যায়ে সাংবাদিকদের ধারাবাহিক হেনস্থা, মারধর, অপহরণ ও আটকে রাখার ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর পিছনে রাজ্য সরকারের ‘মৌন সমর্থন’ রয়েছে।

বিশ্ব জুড়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতার অবনতিতে আরএসএফ-এর সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিস্তোফ দেলয়ের সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, “সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই লেলিয়ে দেওয়া বিদ্বেষ গণতন্ত্রের প্রতি চরম হুমকি।” যে সমস্ত রাজনীতিক এই ঘৃণা ছড়াতে ‘ইন্ধন’ জোগাচ্ছেন ‘তাঁরা সরকারি প্রোপাগান্ডার বদলে তথ্যের ভিত্তিতে সর্বজনীন বিতর্কের ধারণাকে দুর্বল করে দিচ্ছেন। এই গুরুভারের দায়িত্ব তাঁদের উপর-ই বর্তাবে।’ তাঁর মতে সাংবাদিকতার বৈধতার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মানে হল, ‘চরম বিপজ্জনক রাজনৈতিক আগুন’ নিয়ে খেলা করা।

Share this
Leave a Comment